আইসিসির গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে
অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের খোঁজে বিসিবি
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
আশির দশকের বেশিরভাগ সময় দেশ ছিল সামরিক শাসকের কবলে। নব্বই দশক থেকে নির্বাচিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করে আসছেন। তখন থেকেই দেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আর্শিবাদপুষ্ঠরা। সম্প্রতি কোটা সংস্কার ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। গঠন করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তারপর থেকে পরিবর্তন আসতে শুরু করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে। আগের সরকারের আমলে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন তাদেরকে বাদ দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। এমন পরিস্থিতির আঁচ ক্রীড়াঙ্গনেও লাগার আভাস দেখা যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় নতুন সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের পতনের পর থেকে অনুপস্থিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। শুধু পাপন নয়, বিসিবির অধিকাংশ পরিচালকও দেখা দিচ্ছেন না। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার দায়িত্ব পান আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। গতকাল রোববার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে যান তিনি। প্রথম দিন কার্যালয়ে গিয়ে বিসিবির বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি জানান বিসিবিকে তারা কেবল পরামর্শ দিতে পারেন, ‘বিসিবির বিষয়ে, যেহেতু বিসিবি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সিদ্ধান্তটা আমরা দিতে পারব না। বিসিবি থেকে পরামর্শ নিতে পারব, তাদের পরামর্শ দিতে পারব।’
বিসিবির বেশিরভাগ পরিচালকের অনুপস্থিতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘বিসিবির সভাপতি অনুপস্থিত আছেন। অবশ্যই একটা ফেডারেশনকে কাজ করতে হলে তার সবগুলো অর্গানকে কাজ করতে হয়। সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যিনি আছেন, তিনি অনুপস্থিত আছেন। কিন্তু বিসিবি আইসিসির অধীনে একটি ফেডারেশন। এই বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না, আমরা পরামর্শ করেছি, যারা বিসিবির পরিচালক আছেন তারা আইসিসির লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে থেকে কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়, সেটি দেখবেন।’ আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচিত বোর্ডকে সরকারি হস্তক্ষেপে সরানো যায় না। তেমন চেষ্টা হলে নিষিদ্ধ হতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বর্তমান বোর্ড নিজে থেকে সরে গেলে নতুন সরকার অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করতে পারবে। আসিফের কথায় ইঙ্গিত তারা অন্তর্বর্তী বোর্ড গঠনের ব্যাপারে আগ্রহী, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ করা যায় কি না, সেই বিষয়ে তারা আমাদের পরবর্তীতে রিপোর্ট করবেন। এই বিষয়ে আমরা প্রক্রিয়াটি চালু রাখব। এই তিনটি প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি। আজ সময় দিতে পারছি না, আপনারা জানেন প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আছে। পরে আমরা বিস্তারিত কথা বলব, সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আজকে মূলত নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’ সচিবালয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম, খালেদ মাহমুদ সুজন, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, আকরাম খান, জালাল ইউনুস, সাজ্জাদুল আলম ববি, কাজী এনাম ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন। এদিকে বিসিবিতে এক যুগের বেশি সময় ধরে অবহেলিত ও অবমূল্যায়িত ক্রিকেট সংগঠকরা এক হয়ে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পরিচালক পর্ষদের অপসারণের দাবিতে সোচ্চার। গতকাল দুপুরেই আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান বোর্ড পরিচালক পর্ষদ ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ডের দাবি তুলবে মূলত বিএনপি সমর্থক ক্রিকেট সংগঠকরা এবং তারা দলবেঁধে শেরে বাংলায় গিয়ে বোর্ড কর্তাদের অপসারণ তথা বিসিবির বর্তমান পরিচালক পর্ষদ ভেঙে দেয়ার দাবি তুলবেন।