তামিমকে নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার ‘হোম অব ক্রিকেট’ পরিদর্শন

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রিকেটের সূতিকাগার লর্ডস। অনেকে এই মাঠকে ক্রিকেটের ‘মক্কা’ হিসেবেও অভিহিত করেন। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম হতে পারে এ দেশের ক্রিকেটের তীর্থস্থান। ‘হোম অব ক্রিকেট’ নামে পরিচিত মাঠটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভক্তদের আবেগ, ভালোবাসা ও অনুভূতি। সেই মাঠে গতকাল সোমবার উপস্থিত হয়েছিলেন ক্রীড়াঙ্গণের নতুন অভিভাবক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কার্যালয়, অ্যাকাডেমি মাঠ, প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডসহ পুরো শেরে বাংলা ঘুরে দেখেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির কর্তাব্যক্তিরা।

মাঠ পরিদর্শনের আগে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে তাকে পুরো মাঠের বিভিন্ন অংশ দেখান তামিম। পরে তারা প্রবেশ করেন মাঠে। ক্রীড়া উপদেষ্টার বিসিবি কার্যালয়ে আসার খবরে সকাল থেকেই সেখানে ভিড়। একাদল শিক্ষার্থীও স্টেডিয়ামের দুই নম্বর গেটের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা একটার দিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বিসিবির কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা স্টেডিয়ামের বিসিবির ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফ্যাসিলিটিস পরিদর্শন এবং কর্মকর্তা ও নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বেলা তিনটায় স্টেডিয়াম ছাড়ার আগ পর্যন্ত তামিম ইকবাল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব কিছু দেখিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টাকে। ক্রীড়া উপদেষ্টার স্টেডিয়ামে আসার আগেই স্টেডিয়ামের ভেতর ও বাইরে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। আসিফ মাহমুদকে বরণ করে নিতে বেলা ১১টা থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। কিছু কিছু শিক্ষার্থীর হাতে প্ল্যাকার্ডও দেখা গেছে। সেখানে লেখা- ‘দুর্নীতি আর কত?’, ‘বিসিবি পরিচালকদের পদত্যাগ চাই’, ‘বিসিবির দালালরা হুঁশিয়ার’, ‘ক্রিকেটে আর কত দিন দুর্নীতি চলবে?’ নতুন ক্রীড়া উপদেষ্টাকে স্বাগত জানাতে ফুলের তোড়া নিয়ে আসেন একদল ক্রীড়া সংগঠক।

উপদেষ্টা আসার আগেই তামিম ইকবাল চলে যান স্টেডিয়ামে। এর আধাঘণ্টা পর স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। শুরুতেই আনুষ্ঠানিক পরিচয় পর্ব শেষে তামিমকে নিয়ে বিসিবির প্রেসিডেন্ট বক্স ঘুরে দেখেন। এরপর ভবন থেকে মাঠে প্রবেশ করেন তারা।

এ সময় সঙ্গে ছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন এবং সাবেক নির্বাচক ও বর্তমান নারী দলের প্রধান হাবিবুল বাশার সুমন। এরপর মাঠে নেমে ড্রেসিংরুম পরিদর্শন করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। মাঠে ঢুকেই তামিম পূর্বপাশের গ্যালারির দিকে আঙুল দেখিয়ে আসিফের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে একটা ইলেকট্রনিক জায়ান্ট স্ক্রিন ছিল। ঝড়ে ভেঙে গেছে।’ তামিমের এমন কথায় পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে গেলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। স্মৃতি হাতরে এরপর বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি দেখেছি। ২০১৪ সালে যখন মাঠে এসেছিলাম। সম্ভবত এখানে বসেছিলাম।’ এরপর মাঠে পরিদর্শন শেষে ওখান থেকে সোজা চলে যান মিডিয়া সেন্টারে অবস্থিত প্রেস কনফারেন্স রুমে। পরে মিডিয়া রুমেও প্রবেশ করেন আসিফ মাহমুদ। সেখান থেকে একাডেমি ভবনে প্রবেশ করেন তারা। সেখানে ক্রীড়া উপদেষ্টা নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তবে আগে থেকেই জানানো হয়েছিল এদিন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না তিনি। অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো বিসিবিতে এসেছেন। মূলত বিসিবির অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য তার বিসিবি কার্যালয়ে তার আসা।

বিসিবির কার্যালয় ছাড়ার আগে এক সাক্ষাৎকারে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ক্রীড়া উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরে মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা অবকঠামোগুলো ঘুরে ফিরে দেখছি। আজকে বিকেএসপিতে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু যেতে পারিনি। অবকাঠামোগত যে ত্রুটি আছে সেগুলো দেখতে চেয়েছিলাম। এগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলাম এবং নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে দেখা হলো। তারা সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। এছাড়া বিসিবি অবকাঠামোগত যেসব উন্নয়নের প্রয়োজন আছে, সেসবের নোট নিলাম। আশা করি, সামনে এগুলো আমরা ঠিক করে দিতে পারব।’ এদিকে, তামিমও দীর্ঘদিন পর মিরপুর স্টেডিয়ামে এসেছেন। ওয়ানডে ও টেস্ট থেকে অবসর না নিলেও প্রায় এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন না তিনি। তবে সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছিলেন। শোনা যাচ্ছে, ফিটনেস নিয়ে কাজ করতেই মূলত আজ বিসিবিতে এসেছিলেন তামিম। পাশাপাশি ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গেও দেখা হয়ে গেছে। তবে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, তামিম বিসিবির কাছে একজন ট্রেইনার চেয়েছেন। অনুশীলন শুরু করতে চান তিনি। তাছাড়া নিজের চোট নিয়েও কথা বলবেন বিসিবর চিকিৎসকের সঙ্গে। আর এ কারণেই মূলত তার বোর্ডে আসা। ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন আছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে আবারও জাতীয় দলে ফিরতে পারেন বাংলাদেশের সেরা এই ওপেনার।