ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিসিবিতে পাপন যুগের অবসান

বিসিবিতে পাপন যুগের অবসান

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) নাজমুল হাসান পাপন যুগের শুরু ২০১২ সালে। তৎকালীন সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল সরে দাঁড়ালে অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন পান তিনি। পরের বছর নির্বাচনে জিতে এই আসনে পাকাপাকিভাবে বসেন আওয়মী লীগ সরকারের প্রভাবশালী এই সংসদ সদস্য। ২০২৫ সালের অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা তার নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ। কিন্তু শেষবার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে আগেই বোর্ড সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। এর মধ্যে দিয়ে বিসিবিতে পাপনের এক যুগের রাজত্বের অবসান হলো। বিসিবির গণমাধ্যম বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে হওয়া জরুরি বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন বর্তমান বোর্ডের ৮ পরিচালক। দুজন ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত প্রতিনিধি। তাদের সবার সম্মতিতে পাপনের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশের বাইরে আছেন পাপন। এই সভায় ভার্চুয়ালিও অংশ নেননি তিনি। তার পদত্যাগপত্র ই-মেইলে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

একই সভায় নতুন সভাপতি হিসেবে সর্ব সম্মতিক্রমে সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন। বিসিবির ১৫তম সভাপতি তিনি। এই প্রথম কোনো সাবেক ক্রিকেটার বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পেলেন। গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই লাপাত্তা পাপন। প্রবল দাপুটে বোর্ড সভাপতিকে আর দেখা যায়নি বিসিবিতে। পরিবারসহ তিনি লন্ডনে চলে গেছেন বলে গুঞ্জন আছে ক্রিকেট আঙিনায়। ২০১২ সালের অক্টোবরে সরকারের মনোনয়নে প্রথমবার বিসিবি সভাপতি হন নাজমুল হাসান। তখনকার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বোর্ড সভাপতিকে নিয়োগ দিত সরকার। বিসিবির ১৪তম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। পরে আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচনের ধারা রাখা হয়। বিসিবির প্রথম নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে তার মেয়াদ শুরু হয় ২০১৩ সালে। যদিও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। পরে সেই ধারাই চলতে তাকে। ২০১৭ ও ২০২১ সালের বিসিবি নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তার মেয়াদের প্রথম কয়েক বছরে মাঠের ক্রিকেটে বেশ কিছু স্মরণীয় সাফল্য এসেছে। ফিক্সিং কেলেঙ্কারিকে পেছনে ফেলে বিপিএলকে নতুন করে চালু করে তার বোর্ড। তবে যত সময় গড়াতে থাকে, নানা বিতর্কও ছড়াতে থাকেন তিনি ও তার নেতৃত্বাধীন বোর্ড। আর্থিক অনিয়ম, ক্রিকেট প্রশাসনে অস্বচ্ছতা, বোর্ডের ভেতরে নানা ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা, অবকাঠামোর প্রত্যাশিত উন্নতি করতে না পারা, ঘরোয়া ক্রিকেটে মাঠের খেলা বিতর্কিত করাসহ কাঠামো ধ্বংস করা, এরকম অসংখ্য অভিযোগ বছরের পর বছর ধরে ছিল নাজমুলের বোর্ডের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা সরকারে পতনের পর নাজমুলের মতো গা ঢাকা দিয়েছেন তার অতি ঘনিষ্ঠ সহযোগী বোর্ড পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিকসহ আরো বেশ কজন বোর্ড পরিচালক।

দেশে থাকা পরিচালকদের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় বোর্ডে আসা পরিচালক জালাল ইউনুস। এই কোটার আরেক পরিচালক, দীর্ঘদিনের সংগঠন আহমেদ সাজ্জাদুল আলমকেও পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। তবে তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আগেই। জালাল ইউনুসের শূন্য পদেই পরিচালক হিসেব মনোনয়ন দিয়ে পরে সভাপতি করা হয়েছে ফারুক আহমেদকে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত