ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ

আসিফ বীরত্বে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

আসিফ বীরত্বে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

গত রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। অবিস্মরণীয় সেই জয়ের দিনেই বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দলের কোচ মারুফুল হক জানিয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে নতুন কৌশলে দলকে মাঠে নামানোর পরিকল্পনার কথা। তিনি বলেছিলেন, ‘সেমিফাইনালে নতুন ট্যাকটিস নিয়ে মাঠে নামবো আমরা। আমার বিশ্বাস ছেলেরা কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে ভারতের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারব।’ কোচের সাজানো পরিকল্পনা নিপুণ দক্ষতায় মাঠে বাস্তবায়ন করে দেখালেন শিষ্যরা। সত্যি ভারতের বিপক্ষে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে লাল সবুজের যুবারা। এই জয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে মারুফুল হকের শিষ্যরা।

যদিও শুরুতে বাংলাদেশকে চাপে রেখেছিল ভারতীয় যুবারা। তবে নিজেদের রক্ষণ আগলে রেখে ধারার বিপরীতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে লিড ধরে রাখতে না পারলে শেষ পর্যন্ত টাই-ব্রেকারে গড়ায় ম্যাচটি। সেখানে বদলি গোলরক্ষক আসিফ হোসেনের নৈপুণ্যে ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। টাইব্রেকারের শুরুতেই চমক দেখান আসিফ। ভারতের থাংলাংসুন গাঙ্গতের প্রথম শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে আটকে দেন লাল-সবুজ দলের এই গোলরক্ষক। এরপর চার শটে বাংলাদেশের পিয়াস আহমেদ নোভা, মইনুল ইসলাম মইন, শাকিল আহাদ তপু ও আশরাফুল হক আসিফ লক্ষ্যভেদ করেন। অন্যদিকে ভারতের প্রামভির, গমসার ও মনজিত গোল করলেও আকাশ তিরকের পঞ্চম শট রুখে দিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন গোলরক্ষক আসিফ হোসেন।

এর আগে নির্ধারিত সময়ে নিজেদের রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণের ছকে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে সেটি ভাঙার চেস্টা করে ভারত। তবে তাদের সব প্রচেষ্টাই রুখে দেন গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবন। ১৩তম মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস ধরে গগমসার গয়ারির জোরালো শট কোনোমতে পা বাড়িয়ে আটকে দেন শ্রাবণ। ১৬তম মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া গয়ারির শট নেয়ার আগেই নিখুঁত স্লাইডে ক্লিয়ার করেন কামাচাই মারমা। ২৫তম মিনিটের পর থেকে সামান্য উপরে উঠে খেলার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। ৩৫তম মিনিটে পাওয়া সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এগিয়েও যায় দল। বাম দিক থেকে রাব্বি হোসেন রাহুলের জোরালো আড়াআড়ি ক্রস গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় আসাদুল মোল্লার পায়ে। নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন এই তরুণ।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করে ভারত। তবে বলের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চেষ্টা করে বাংলাদেশ। ৫০তম মিনিটে কয়েক সতীর্থের পা ঘুরে বল পান পিয়াস আহমেদ নোভা। এই ফরোয়ার্ডের শট ফেরান ভারত গোলরক্ষক। এরপরই একের পর এক আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় ভারত। মাংলেনথাং কিপজেনের বাঁ পায়ের শট পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়ার পর ৫৪তম মিনিটে ভারতের হতাশা আরো বাড়ে। সতীর্থের লম্বা পাস ধরে শ্রাবণকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন করু সিং থিংগুজাম, কিন্তু তার দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদের চেষ্টা বেরিয়ে যায় বাইরে দিয়ে। এরপর কেলভিন সিংয়ের শটও যায় অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে। ৬১তম মিনিটে থাংলাংসুন গাঙ্গতের দূরূহ কোণ থেকে নেয়া শট পোস্টের বাইরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়।

চার মিনিট পর গোললাইন সেভে বাংলাদেশের ত্রাতা কামাচাই মারমা। গয়ারির চিপ পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা শ্রাবণকে ফাঁকি দিয়ে ছুটছিল জালের দিকে; গোলমুখ থেকে শেষ মুহূর্তের প্রচেষ্টায় ফেরান কামাচাই। গয়ারিকে আটকাতে এসেই তার সঙ্গে সংঘর্ষে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন শ্রাবন। বদলি নামেন আসিফ হোসেন। একটু পরই গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ।

বক্সের ভেতর থেকে নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন রিকি মিতে হোবাম। যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কামাচাই মারমা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে গোলরক্ষক আসিফ বীরত্বে সেমিফাইনালে নাম লেখায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আগামী বুধবার ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত