ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গুরু ফাহিমের চোখে সাকিব যেমন

গুরু ফাহিমের চোখে সাকিব যেমন

সাকিব আল হাসানের কাছে তিনি শৈশব গুরু। এই অলরাউন্ডার যখনই কোনো সমস্যায় পড়েন তখনই ছুটে যান গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে। বর্তমানে গুরুর নতুন পরিচয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক। তাই ঢাকা টু রাওয়ালপিন্ডি যতবারই কথা হয়েছে দুজনের স্রেফ আলোচনা ছিল ক্রিকেটকেন্দ্রিক। সম্প্রতি একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়ে আইনি নোটিশও দেয়া হয়েছে বিসিবিকে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় থাকার কথা সাকিবের। কিন্তু মাঠে পারফরম্যান্স বলছে ভিন্ন কথা। বিশেষকরে বোলিংয়ের সময়। কী দারুণভাবেই না নিজের কাজটি করে গেছেন দেশ সেরা এই অলরাউন্ডার। পাশাপাশি সতীর্থদেরও পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন নানাভাবেই। মাঠে নামলে সব কিছু বাদ দিয়ে সাকিব শুধু খেলার কথাই ভাবেন বলে জানান তার শৈশবের কোচ ও বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের মূল নায়ক না হলেও পার্শ্বনায়ক নিঃসন্দেহেই সাকিব। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং ধসের মূল কারিগর তিনিই। তিন উইকেট তুলে নিয়ে নতুন রেকর্ডও গড়েছেন। ছাড়িয়ে গেছেন ড্যানিয়েল ভেট্টরিকে। টেস্ট ক্রিকেটে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট এখন সাকিবের।

স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাকিবের মামলার বিষয় হতে তার পারফরম্যান্সের বিষয়টিও উঠে আসে। সেখানে বাঁহাতি এই স্পিনারের মানসিকতার প্রশংসা করেছেন ফাহিম। তবে মামলার বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠতেই বলেন, ‘নেক্সট।’

এরপর সাকিবের শক্ত মানসিকতা প্রসঙ্গে ফাহিম বললেন, ‘(সাকিব) মানসিকভাবে শক্ত সেটা বলব না। আমি বলব, টপ অ্যাথলেট যারা, যেকোনো স্পোর্টস বা যেকোনো দেশেরই হোক তারা যখন মাঠে নামে তখন মনে হয় না তারা নেগেটিভ প্যাকেজগুলো নিয়ে মাঠে নামে। তারা কেবল খেলার কথাই ভাবে। ওভাবেই কিন্তু তারা নিজেদের তৈরি করে। যেন অন্য কোনো চিন্তা আদৌ না আসতে পারে।’ ‘সাকিবের ক্ষেত্রেও তাই। ওকে যখন বল দেয়া হয় ওর অন্য কোনো চিন্তা থাকে না। ও শুধু ব্যাটসম্যানকে নিয়ে চিন্তা করে। কোথায় বল করবে, কি হতে পারে। বাইরের কোনো চিন্তা আসে না। অন্য সময় আসতে পারে। কিন্তু বল যখন হাতে পায় তখন অন্য কিছু মাথায় কাজ করে না। এটাই ওকে অন্যদের থেকে আলাদা করছে। আমাদের অনেক খেলোয়াড়কে দেখে বিভিন্ন ঘটনা সমালোচনা ওদের ওদের ন্যাচারাল খেলা খেলতে দেয় না। কিন্তু সাকিবের ক্ষেত্রে সেটা ঠিক না,’ যোগ করেন ফাহিম। এক সময়ের সাকিবের শিক্ষক হলেও এখন বিসিবি পরিচালক ফাহিম। পুরোনো শিষ্যর সঙ্গে কোনো আলাপ হয়েছে কি না জানতে বলেন, ‘ওর সঙ্গে তো আমার দুইটা রোল আছে। বোর্ড পরিচালক হিসেবে আমি তার সাথে কথা বলিনি। তবে ওর মেন্টর তথা কোচ হিসেবে কথা হয়েছে। ওর পারফর্মেন্স নিয়ে কথা হয়েছে। এটাই আমার রোল ছিল। বোর্ড পরিচালক হিসেবে কোনো কথা হয়নি।’ পাশাপাশি সাকিবের বোলিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন এই বিসিবি পরিচালক, ‘সাকিব যখন বাঁহাতি ব্যাটারদের বিরুদ্ধে বোলিং করে তখন; কিন্তু স্বস্তি অনুভব করে না। গত (রোববার) সেটা দেখিনি কিন্তু। একজন প্রোপার টেস্ট বোলার যেভাবে বোলিং করে সেভাবে সে বোলিং করেছে। বোলিংয়ে তার নিজের ওপর যে আস্থা আছে সেটা নিয়ে কিন্তু বোলিং করেছে। ডানহাতি বামহাতি সব ধরনের প্রস্তুতিতে। এবং মনে হয়েছে যখনই তাকে বল দেয়া হয়েছে উইকেট নেয়ার জন্য বোলিং করছে সে।’ ফাহিম আরো বলেন, ‘(সাকিব) অন্য বোলারদের সঙ্গে আলাপ করছিল। মিরাজকে আইডিয়া দিচ্ছিল। টোটাল ইনভলমেন্ট ছিল। ও (সাকিব) নিজেও উপভোগ করেছে বোলিং। বোলিং কিছুটা অসন্তুষ্টির জায়গা ছিল। আমার মনে হয় এখানে ও সন্তুষ্টি পেয়েছে। সামনে যদি ও সুযোগ পায় তাহলে সেটা কাজে আসবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত