নিহত সেই রিকশাচালককে পুরস্কারের অর্থ দিবেন মিরাজ

প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জেতার পর এবার টাইগারদের জয় ৬ উইকেটে। তাতে প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে পূর্ণ শক্তির কোনো দলকে হারাল বাংলাদেশ। আর এই জয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে হয়েছেন সিরিজ সেরাও।

পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে আনুষ্ঠানিক প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে সময় চেয়ে নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিছুটা ধরে আসা কণ্ঠে তিনি বললেন, সিরিজ সেরার স্বীকৃতি ও অর্থ পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করছেন গত জুলাই-অগাস্টে দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হওয়া এক রিকশাচালককে।

রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে জিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচেই অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতেছেন মিরাজ। স্মারক ট্রফির পাশাপাশি তাকে দেয়া হয়েছে ৫ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থ পুরস্কার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ দুই লাখ ১৪ হাজার টাকারও বেশি। প্রায় ৮ বছর ও ৪৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সিরিজসেরার স্বীকৃতি পেলেন ২৬ বছর বয়সী স্পিন অলরাউন্ডার।

২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজের দুই ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়ে পেয়েছিলেন প্রথমবার। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ১৫৫ রানের সঙ্গে বল হাতে ১০ উইকেট নেন মিরাজ। দুই ম্যাচেই ব্যাট হাতে খেলেন মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। প্রথম টেস্টে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১৯৬ রানের রেকর্ড জুটি গড়ার পথে তার ব্যাট থেকে আসে ৭৮ রান। দ্বিতীয় টেস্টে মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর ক্রিজে গিয়ে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে ১৬৫ রানের ঐতিহাসিক জুটি গড়ে তোলেন মিরাজ। ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে তিনি খেলেন ৭৭ রানের ইনিংস। বল হাতেও সমান কার্যকর ছিলেন তিনি। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে দ্রুত অলআউট করতে বড় অবদান রাখেন মিরাজ। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেন তিনি। ম্যাচ শেষে পুরস্কার গ্রহণ করে প্রশ্নোত্তর শেষে নিহত রিকশাচালকের পরিচালকের পরিবারকে পুরস্কারের অর্থ দেয়ার ঘোষণা দেন মিরাজ। ‘দেশের বাইরে প্রথমবার সিরিজসেরা হয়ে ভালো লাগছে। আমাদের দেশে গত কিছু দিন ধরে সমস্যা ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছে। সেখানে একজন রিকশাচালক মারা গেছেন। আমি তার পরিবারকে আমার এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি।’ একই মাঠে প্রথম টেস্ট জয়ের পর সেটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের উৎসর্গ করার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অলরাউন্ডার হিসেবে কঠিন দায়িত্ব পালনের তৃপ্তির কথাও বলেন মিরাজ। ‘অলরাউন্ডার হিসেবে খেলা সবসময়ই কঠিন কাজ। আমি মুশফিক ভাই ও লিটন ভাইয়ের সঙ্গে স্ট্রাইক রোটেট করে নিজের ব্যাটিং উপভোগ করতে চেয়েছি। ৫ উইকেট পাওয়ায় সত্যিই খুশি। সামনে আরো ভালো বোলিং করার চেষ্টা করব।’