ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাকিস্তানে তোমাদের এই অর্জনে পুরো জাতি গর্বিত

ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা
পাকিস্তানে তোমাদের এই অর্জনে পুরো জাতি গর্বিত

টেস্ট পরিবারের সদস্য হিসেবে দুই যুগ পার করলেও ক্রিকেটের এই অভিজাত ফরম্যাটে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় ছিল না বাংলাদেশের। কিছুদিন আগেই সেই আক্ষেপ ঘুচিয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। শুধু টেস্ট জয় নয়, সিরিজই জিতে নিয়েছে টাইগাররা। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ।

ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে মুঠোফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সময়ই দেশে ফিরলে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনা দেয়ার ঘোষণাটা দিয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। সেখানে ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ ও বিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন ড. ইউনূস। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ দল যে কীর্তি গড়েছে, তা নিয়ে পুরো দেশ গর্বিত উল্লেখ করে ইউনূস বলেছেন, ‘আমি (সিরিজ) জয়ের পরপরই অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তোমাদের সবার সঙ্গে দেখা করে (পুরো) জাতির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানোর জন্য আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছিলাম।’

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে খেলাধুলার শক্তির কথাও মনে করিয়ে দেন খেলোয়াড়দের। ক্রীড়াপ্রেমী ইউনূস একই সঙ্গে প্যারিস অলিম্পিকে তার কী ভূমিকা ছিল, সেটা খেলোয়াড়দের কাছে তুলে ধরেন। প্যারিস অলিম্পিকে পরামর্শক ও শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ইতালির মিলানো করতিনায় শীতকালীন অলিম্পিকেও একই ভূমিকার জন্য নিমন্ত্রণ পেয়েছেন, এটা তিনি নিজে থেকেই খেলোয়াড়দের জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা আর অভিনন্দন পেয়ে খুশি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

দলের পক্ষ থেকে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন বলেছেন, ‘এখানে আসতে পেরে প্রত্যেক খেলোয়াড়ই খুশি। সত্যিই এটা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।’

পাকিস্তানে সিরিজ জয়ের পেছনে সব খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফের কঠিন পরিশ্রম ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন নাজমুল। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দেশের কঠিন সময়ে সাফল্য আনার জন্য খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি বিষয় প্রচলিত আছে যে, সংবর্ধনা মানেই পুরস্কার। প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে এমন আলোচনাই হচ্ছিল। ক্রিকেটাররা হয়তো গাড়ি, বাড়ি, জমি কিংবা টাকা পয়সা পেতে যাচ্ছেন! কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জেতার পর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেয়া হলেও সেসব কোনো পুরস্কারের ঘোষণা আসেনি। যদিও ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বিসিবির পরিচালকরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। বিসিবির নব নির্বাচিত পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছেন, ‘আমাদের সমাজের একটি বড় ভুল ধারণা হচ্ছে, সংবর্ধনা মানেই নানা পুরস্কার ঘোষণা। ওনার মতো (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) একজন মানুষের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করতে পেরেছি, সেটাইতো অনেক বড় পুরস্কার। উনি সবার সামনে এসে দাঁড়ালেন, কথা বললেন এটাইতো অনেক বড় কিছু। এরচেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে। উনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান, পুরো জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর চেয়ে বড় ট্রিটতো আর কিছুতে হতে পারে না।’

উল্লেখ্য, সবশেষ টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ দল। রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে জেতে শান্তর দল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত