ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাফুফে নির্বাচন

সভাপতি পদে লড়াইয়ের ঘোষণা তরফদার রুহুলের

সভাপতি পদে লড়াইয়ের ঘোষণা তরফদার রুহুলের

গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর দেশের অন্যান্য বিভাগের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। এরইমধ্যে বদলে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নেতৃত্ব। এবার বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গত শনিবার বাফুফে সভাপতি পদে আর নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন কাজী সালাউদ্দিন।

এরমধ্যে দিয়ে দেশের ফুটবলে কাজী সালাউদ্দিন যুগের অবসান হতে চলেছে। তারপর থেকেই ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা ফুটবলামোদীদের। দেশের ফুটবলে নতুন স্বপ্নের বীজ বুনছেন পরীক্ষিত ক্রীড়া সংগঠক তরফদার মো. রুহুল আমিন। গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঐক্যমতের ভিত্তিতে বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি হিসাবে তরফদার মো. রুহুল আমিনের নাম ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে সাবেক তারকা ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক, সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, ডাকসুর সাবেক নেতা খায়রুল কবির খোকন ছাড়াও বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তা ও সাবেক খেলোয়াড়রা উপস্থিত ছিলেন। বাফুফে সভাপতি পদে কাজী সালাউদ্দিন নির্বাচন করবেন না। এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সভাপতি পদে প্রার্থীর নাম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হলো। বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের নেতা আলী ইমাম তপন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘জেলা ও ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে তরফদার রুহুল আমিনকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। ফুটবল ফেডারেশন জেলা পর্যায়ে লিগ পরিচালনা করতে সহায়তা করেনি। উনার সহায়তায় জেলায় লিগ হয়েছে একথা অনস্বীকার্য।’

একই মঞ্চ থেকে তরফদার রুহুল আমিন আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থীতা তিনি গ্রহণ করে বলেন, ‘যে ঘোষণা তারা দিয়েছেন, আমি তা সাদরে গ্রহণ করলাম। ফুটবলের সেই দিনগুলো নেই, হারিয়ে গেছে। ২০০৮ এর পর ফুটবল তলানিতে গেছে। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এরপর থেকে হারতে হারতে নিচের দিকে আছি আমরা। আজ র‍্যাংকিং ১৮৪ তে এসে ঠেকেছে। এখান থেকে ওঠে আসা প্রয়োজন। মাঠের খেলা টেবিলে চলে এসেছে। সারা দেশে এর চর্চা হলে ঠিকই বিশ্ব মানচিত্র জায়গা করে নেওয়া যেতো।’ এই সংগঠক যোগ করেন, ‘গত ১৬ বছর ফুটবলকে জাগতে দেয়া হয়নি। আমি ফুটবল নিয়ে অনেক কাজ করেছি, জেলা ও বিভাগে। প্রচুর খেলোয়াড় উঠে এসেছে। ওই সময় প্রতিকূল অবস্থায় কাজ করেছি। বাফুফে চায়নি আমরা কাজ করি। ১৮ কোটি দেশের লোক সীমানা পার হতে পারি না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। আমি কাউকে দোষ দিতে চাই না।’ ২০২০ সালে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনের কথা বলতে গিয়ে তরফদারের কথা, ‘২০২০ সালে প্যানেল তৈরি করে এগোলাম। দেশেও থাকতে পারলাম না। অনেক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়িক দিক দিয়ে। এজেন্সি দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। সাইফ স্পোর্টিং বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’

তরফদার রুহুল আমিন মূলত ব্যবসায়ী। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তার ফুটবলাঙ্গনে পথচলা শুরু।

২০১৬-২০২২ পর্যন্ত ফুটবলে অনেক অর্থের বিনিয়োগ করেছেন। কিংসের আগে তিনিই প্রথম পেশাদার ফুটবল ক্লাব সাইফ স্পোর্টিং গড়েন। সেই ক্লাব থেকে জাতীয় ফুটবল দলে এখন অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। জেলা-বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল ফেডারেশন অর্থ সেভাবে দেয়নি কখনো। তরফদার রুহুল আমিনের অর্থায়নে জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন ২-৩ বছর খেলা পরিচালনা করেছে। ফুটবল ফেডারেশনে আনুষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াও মহানগর ক্লাব পর্যায়েও অনেক অর্থ দিয়েছেন এই সংগঠক। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে সাইফ স্পোটিং সিনিয়র ও জুনিয়র দুই ক্লাবই ফুটবল থেকে প্রত্যাহার করে।

বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হলে যা করতে চান তরফদার

দেশের ফুটবল আজ তলানিতে। গত ১৬ বছর কেবল নিচের দিকেই নেমেছে। কাজী সালাউদ্দিন যুগ শেষ হওয়ার পর এবার প্রার্থী হয়েছে তরফদার রুহুল আমিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হতে পারলে দেশজুড়ে ফুটবলকে ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। তার কথা, ‘আমি নির্বাচিত হলে তৃণমূল পর্যায়ে শুরু করবো। ফুটবলকে এসি রুমে রাখবো না। বিকেন্দ্রীকরণ করবো। নতুন করে জাগরণ তৈরি করবো। চার বছরে কী করবো, সেটাও বলবো।’

তিনি যোগ করেন, ‘আগের সাধারণ সম্পাদক (আবু নাঈম সোহাগ) নিষিদ্ধ হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের টাকা ঠিকমতো ব্যবহার হয়নি। তবে নির্বাচিত হতে পারলে আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। সামনের দিকে সব পরিষ্কার হবে। এবার আমার বিশ্বাস কাউন্সিলররা তাদের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে কাজ করবেন।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত