চেন্নাই টেস্ট

ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিপদের শঙ্কায় বাংলাদেশ

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

চেন্নাই টেস্টে আরো একটি হতাশাময় দিন পার করল বাংলাদেশ। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বোলিংটা দুর্দান্ত হলেও ব্যাটিংয়ে রীতিমতো ব্যর্থ সফরকারীরা। ভালো শুরুর পর শান্ত, লিটন, সাকিবদের উইকেট বিলিয়ে দেয়ার পুরোনো অভ্যাস শুধু হতাশাই বাড়িয়ে গেল। দিনের শুরুতে ও শেষে ভারতের প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসের রান বাঁধনহারা হতে দেননি বোলাররা। ব্যাটাররা বোলারদের সেই পরিশ্রমের প্রতিদান দিতে পারেননি। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে চা বিরতির পর গুটিয়ে গেল সফরকারীরা। এরপর তাদেরকে ফলো-অন না করিয়ে ফের ব্যাটিংয়ে নামল স্বাগতিকরা। এরই মধ্যে তাদের লিড ছাড়িয়ে গেছে তিনশ রান। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করার শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার চেন্নাইতে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮১ রান। প্রথম ইনিংসে পাওয়া ২২৭ রানের বিশাল লিডকে ৩০৮ পর্যন্ত নিয়ে গেছে তারা। তাদের হাতে রয়েছে ৭ উইকেট। প্রথম দিনের ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে নেমে ভারতের প্রথম ইনিংস থেমেছিল ৩৭৬ রানে। এরপর বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় মাত্র ১৪৯ রানে। ভারতের দুই ওপেনারের সঙ্গে বিরাট কোহলিকে সাজঘরে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। চারটি চারে ৬৪ বলে ৩৩ রানে ব?্যাট করছেন তিনে নামা শুবমান গিল। একটি করে ছক্কা ও চারে ১৩ বলে ১২ রানে খেলছেন পাঁচে নামা রিশভ পান্ত। প্রথম ইনিংসের মতো ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসেও টাইগার বোলাররা লড়াই করছেন। তবে ব্যাটাররা প্রত্যাশার দাবি মেটানো থেকে ছিলেন বহুদূরে। তাই ম্যাচের মাত্র দুই দিনেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিস্তর ব্যবধান। খেলার নাটাই পুরোপুরি ভারতীয়দের হাতে। দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নেমেও ব্যর্থ হন রোহিত শর্মা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের দারুণ ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দেন ভারতের অধিনায়ক। ৭ বল খেলে তার রান ৫। সপ্তম ওভারে আক্রমণে এসেই সাফল্য আদায় করে নেন নাহিদ রানা। যশস্বী জয়সওয়াল প্রথম ইনিংসের মতো ফের তার শিকার হন। ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের তালুবন্দি হন ১৭ বলে ১০ করে। ২৮ রানে ২ উইকেট পড়ার ধাক্কা সামলে নিতে গিলের সঙ্গী জুটি বাঁধেন কোহলি। উইকেটে একসঙ্গে বেশি সময় থাকা হয়নি তাদের। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কোহলি এলবিডব্লিউ হলে ভাঙে ৭৬ বলে ৩৯ রানের জুটি। রিভিউ নিলে অবশ্য বেঁচে যেতেন তিনি। প্যাডে লাগার আগে ব্যাটের কানায় বলের আলতো ছোঁয়া টের পাননি তিনি নিজেই। পরে স্নিকো মিটারে সেটা ধরা পড়ে। ৩৭ বলে ১৭ রান আসে কোহলির ব্যাট থেকে। এরপর দিনের শেষ ২২ বল নির্বিঘ্নে পার করে দেয় ভারত। দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন আগে নেমে পুরো দুই সেশনও টিকতে পারেনি বাংলাদেশের ইনিংস। ৪৭.১ ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তর দল অলআউট হয় ১৪৯ রানে। বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিতে ৫০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ। দুটি করে শিকার ধরেন মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ ও রবীন্দ্র জাদেজা। বাংলাদেশের আট স্বীকৃত ব্যাটারের মধ্যে দুই অঙ্কে যান কেবল চারজন। ৬৪ বলে পাঁচটি চারে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন সাকিব আল হাসান। স্রেফ ৪০ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর লিটন দাসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ইনিংসের একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়েন তিনি। সেই জুটিতে লিটনের অবদান ৪২ বলে তিনটি চারে ২২ রান। অপরাজিত থাকা মিরাজ দুটি চার ও একটি ছয়ে ৫২ বলে ২৭ রান করে বাংলাদেশের পুঁজি নিয়ে যান দেড়শর কাছে। এ ছাড়া, শান্তর ব্যাট থেকে তিনটি চারে ৩০ বলে আসে ২০ রান। এদিন সকালে ভারত টিকতে পারে ১১.২ ওভার, যোগ করে আর ৩৭ রান। ১৯৯ রানের সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙলে আর এগোতে পারেনি তারা। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ২২৩ বলে ১১৩ ও জাদেজা ১২৪ বলে ৮৬ রানে বিদায় নেন। ৪ উইকেটের তিনটিই নেন তাসকিন, বাকিটি নিয়ে ৮৩ রান খরচায় ৫ উইকেট পুরো করেন হাসান মাহমুদ। ভারতের মাঠে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ৫ উইকেট শিকারের নজির স্থাপন করেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দ্বিতীয় দিন শেষে

ভারত ১ম ইনিংস : ৩৭৬/ ১০ (অশ্বিন ১১৩, জাদেজা ৮৬; হাসান ৫/৮৩, তাসকিন ৩/৫৫)।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১৪৯/১০ (সাকিব ৩২, মিরাজ ২৭, লিটন ২০; বুমরাহ ৪/৫০)।

ভারত ২য় ইনিংস : ৮১/৩ (গিল ৩৩*, পান্ত ১২*; তাসকিন ১/১৭, নাহিদ ১/১২, মিরাজ ১/১৬)।