ঢাকা ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাকিবের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাওয়া অবান্তর

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা
সাকিবের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাওয়া অবান্তর

কানপুরে ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগের দিন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সে অনুযায়ী সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই ছিল তার সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে শেষ ম্যাচ। তবে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটা মিরপুরে খেলতে চেয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তবে হত্যা মামলা হওয়ায় দেশে ফেরা নিয়ে শঙ্কিত বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি। দেশে ফিরে নিরাপদে খেলা ও দেশ ত্যাগের নিশ্চয়তা পেলেই আসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।

আগামী অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজ খেলে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন সাকিব। জুলাই বিপ্লবে ক্ষমতার পালাবদলের পর আর দেশে ফেরেননি সদ্য সাবেক হওয়া এই সংসদ সদস্য। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে নিজের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তবে তাকে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। এতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় সাকিবের দেশে ফেরা। গতকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছেও জানতে চাওয়া হয় সাকিবের নিরাপত্তা নিয়ে। জবাবে তিনি বললেন, ‘খেলোয়াড় সাকিবের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আছে। তবে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিপক্ষে জনমনে তৈরি হওয়া ক্রোধের বিপরীতে নিরাপত্তা দেয়ার নিশ্চয়তা চাওয়া অবান্তর।’ গতকাল রোববার শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে গ্রামীণফোনের লভ্যাংশের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুটি, এটি মনে রাখতে হবে। তিনি একজন খেলোয়াড়। সে হিসেবে তার যতটা নিরাপত্তা দেয়া দরকার সেটা দেয়া হবে। অপরদিকে তিনি একজন রাজনীতিবিদও। আওয়ামী লীগের হয়ে রাজনীতি করেছেন। মানুষের মধ্যে তো এই দুই পরিচয় নিয়েই মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। এখন খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের একজন খেলোয়াড়কে যতটুকু নিরাপত্তা দেয়ার দরকার ততটুকু আমরা দেব।’ আসিফ মাহমুদ আরো যোগ করেন, ‘রাষ্ট্রের জায়গা থেকে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিককেই নিরাপত্তা দিতে বাধ্য এবং সেটা আমরা অবশ্যই করব। তার বিরুদ্ধে যে হত্যা মামলা হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা এরমধ্যেই বলেছি এবং আইন মন্ত্রণালয়ও বলেছে, তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে প্রাথমিকভাবেই নাম বাদ দেয়া হবে।’ পোশাক শ্রমিক রুবেলকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আদাবর থানায় মামলা হয়েছে সাকিবের বিরুদ্ধে। দেশে আসলে গ্রেপ্তারের শঙ্কা করছেন সাকিব নিজেই।

উপদেষ্টা আসিফ বলেন, তার (সাকিব আল হাসান) রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনগণের মধ্যে যদি ক্ষোভ থাকে, তাহলে। মনে করুন, আমার নিরাপত্তার জন্য পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন গানম্যান থাকেন। আমার উপরে যদি দেশের ১৬ কোটি জনগণের ক্ষোভ থাকে, তাহলে তারা আমাকে কী নিরাপত্তা দেবেন? তিনি বলেন, ‘জনগণের যদি কোথাও ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা আমাকে রিডিউস করতে (কমাতে) হবে আমার কথা দিয়ে। আমার মনে হয়, তার নিজের জায়গা পরিষ্কার করা প্রয়োজন, রাজনৈতিক জায়গা থেকে, তার যে রাজনৈতিক অবস্থান, তা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। অলরেডি মাশরাফি বিন মুর্তজা কথা বলেছেন।’ এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথাও টেনে আনেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘শেখ হাসিনাকেও নিরাপত্তা দেয়া যায়নি, তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সে জায়গায় রাজনৈতিক বিষয়টি পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করি। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের দায়িত্ব এবং সে দায়িত্ব আমরা পালন করি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত