কানপুর টেস্ট

ড্রয়ের আশায় বাংলাদেশ জয়ে চোখ ভারতের

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

কানপুর টেস্টে আড়াই দিনেরও বেশি সময় ধরে দাপট দেখিয়েছে বৃষ্টি। প্রথম দিনে ৩৫ ওভার খেলা হলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে মাঠেই নামতে পারেননি বাংলাদেশ ও ভারতের খেলোয়াড়রা। শুয়ে-বসে গল্প গুজব করে সময় কাটিয়েছেন তারা। বাকি দুই দিনে কি ফলাফল হতে পারে সেটি অনেকেই অনুমান করে রেখেছেন। কিন্তু চতুর্থ দিনের খেলা মাঠে গড়াতেই সব হিসেব উল্টে দিয়েছে স্বাগতিকরা। ফলে জমে উঠেছে লড়াই। একদিকে ড্রয়ের চিন্তা শান্তদের, অন্যদিকে জয়ে চোখ রোহিতদের। সবমিলিয়ে শেষদিনেও যে রোমাঞ্চকর লড়াই হতে চলেছে, তা তো অনুমিত। চতুর্থ দিনশেষে এগিয়ে স্বাগতিকরাই। চেন্নাই টেস্ট জিতে এগিয়ে আছে ভারত। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য সব চেষ্টাই করছে ভারত। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে দ্রুততগতিতে অলআউট করতে। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। দ্রুতগতিতে রান তুলতে চেয়েছিল ভারত। সেটাও পেরেছে বেশ দক্ষতার সঙ্গেই। ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে। প্রথম ইনিংসে ভারত এগিয়ে থাকে ৫২ রানে। দিনের শেষভাগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি। ওপেনার জাকির হাসান ফিরে গেছেন চটজলদি। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা হাসান মাহমুদও ব্যর্থ। চতুর্থদিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২৬ রান। এখনো ভারতের চেয়ে ২৬ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। কাঁধে ঝুলছে হারের আশঙ্কা! সাদমান ইসলামের সঙ্গে ক্রিজে আছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক। লাঞ্চের পর বাংলাদেশকে ২৩৩ রানে গুটিয়ে ব্যাট করতে নেমে টি-টোয়েন্টি অ্যাপ্রোচ বেছে নেয় ভারত। মাত্র ৩৪.৪ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয় তারা। এরপর ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ওপেনারদের চেপে ধরে তারা। প্রবল চাপ শুরুর আধঘণ্টা পার করে দিলেও ৮ম ওভারে কাটা পড়েন জাকির হাসান। রবীচন্দ্রন অশ্বিনের দারুণ অফ অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন তিনি। তিনে নাইটওয়াচ ম্যাচ হাসান মাহমুদকে পাঠায় বাংলাদেশ, লাভ হয়নি। অশ্বিনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি টিকতে পারেন ৯ বল, করেন ৪ রান। ২৬ রানে ২ উইকেট হারানো সফরকারীরা ৩ উইকেটও হারাতে পারত। ৭ রানে থাকা সাদমানের ক্যাচ স্লিপে রাখতে পারেননি লোকেশ রাহুল। প্রথম দিনের ৩৫ ওভারের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ভেসে যায় প্রতিকূল আবহাওয়ায়। ৩ উইকেটে ১০৭ রান নিয়ে খেলতে নেমে মুমিনুল ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। তার একার সেঞ্চুরিতে দুইশো ছাড়িয়ে থামে বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর ব্যাটিং পেয়ে ভারতীয়রা মাতে চার-ছক্কায়। মাত্র ৩ ওভারে দলীয় পঞ্চাশ, ১০.১ ওভারে ১০০ রান করে বিশ্বরেকর্ড গড়ে গেলে। এরপর দ্রুততম দেড়শো, দুইশো, আড়াইশো রানের রেকর্ডও নিজেদের করে নেয় তারা। টি-টোয়োন্টি গতিতে ওভার প্রতি আটের উপর রান আনতে থাকেন স্বাগতিক ব্যাটাররা। যশভি জয়সওয়াল, লোকেশ রাহুল ফিফটি পেলেও অবদান আছে বিরাট কোহলি, শুবমান গিল, রোহিত শর্মাদের। ক্রিজে যারাই গেছেন দ্রুত রান বাড়ানোর প্রয়াস ছিল সবার ব্যাটে। শেষ সেশনে বাংলাদেশকে ১০ ওভারের বেশি ব্যাট করিয়ে একাধিক উইকেট ফেলতে চেয়েছিল তারা। ২১ ওভার আগে ইনিংস ছেড়ে ১১ ওভার সফরকারীদের ব্যাট করিয়ে ২ উইকেট তুলতে পেরেছে তারা। রাহুল সাদমানের ক্যাচ না ফেললে উইকেট পড়তে পারত তিনটা। শেষ দিনে খেলা শুরু হবে নির্ধারিত সময়ের আধাঘণ্টা আগে। রেকর্ড, আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে উঠেছে কানপুর টেস্ট। অবশ্য বাংলাদেশ চতুর্থ শেষ বিকেলে ২ উইকেট হারিয়ে একটু চাপে আছে। তবে টেস্ট ড্র করার সবরকম সুযোগ আছে সফরকারীদের সামনে। হাতে ৮ উইকেট নিয়ে কানপুরের অনেকটা ভালো উইকেটে কমপক্ষে দুই সেশন কাটানোর লক্ষ্য রাখতে পারে বাংলাদেশ। এতে টেস্ট ড্র করে ভারতের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৪ পয়েন্ট ছিনিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকবে। খেলায় ফল আসার জন্য ভারতের প্রবল চেষ্টার বিপরীতে বাংলাদেশের অ্যাপ্রোচ কেমন হবে এখন সেটা দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট ভক্তরা।