সাকিবের ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে তাহলে
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। কানপুর টেস্ট শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই এই ফরম্যাটের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন। তবে নিরাপত্তা শঙ্কায় থাকা সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষটা দেশের মাটিতে হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তবে ক্রমেই সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হওয়ার আভাস মিলেছে। দেশের মাঠ থেকেই এই অলরাউন্ডারের অবসরের সম্ভাবনা প্রবল, জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারক আহমেদ। গতকাল সোমবার মিরপুরে বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিবের অবসরের প্রসঙ্গে এটি জানান বিসিবি সভাপতি। ‘সাকিবের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। সাকিবের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ থেকেই অবসর নেয়ার।’
দেশে ফিরলে সাকিবের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুদিন আগে বেশ কড়া মন্তব্য করেছিলেন ফারুক আহমেদ। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বিসিবি সভাপতি ও অন্য বোর্ড কর্তারা আড়ালে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের দেশে ফেরার পথ সুগম করতে। কদিন আগে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগের দিন কানপুরে সাকিব জানান, বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না তাকে। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলতে চান তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে। এই টেস্ট শুরু হবে আগামী ২১ অক্টোবর। সাকিবের এই চাওয়া পূরণের পথে মূল বাধা তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলা।
মামলা মাথায় নিয়ে দেশে ফিরলে কতটা নিরাপদে থাকতে পারবেন এবং নির্বিঘ্নে আবার দেশ ছাড়তে পারবেন কি না, এরকম নিশ্চয়তা তিনি চেয়েছিলেন বিদায়ের ঘোষণার সময়। এরপর থেকেই দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত প্রসঙ্গগুলোর একটি এটি। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ গত ২৬ সেপ্টেম্বর বলেছিলেন, সাকিব দেশে ফিরলে তার বিদায় রাঙানোর আয়োজন তারা করবেন, কিন্তু তার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বোর্ড দিতে পারবে না। এরপর গত ২৯ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছিলেন, রাজনৈতিকভাবে সাকিবকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। সরকার ও বোর্ডের কড়া অবস্থান দেখে তখন মনে হচ্ছিল, দেশে ফিরে সাকিবের বিদায় নেয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে কয়েকদিন আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কথায় আবার সুর বদলের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, দেশে ফিরলে সাকিবকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া হবে এবং তিনি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে চান, এই অলরাউন্ডারের বিদায় দেশ থেকেই হোক। এবার ফারুক আহমেদের কণ্ঠের সুরেও বদলের ছোঁয়া পাওয়া গেল। আইনি জটিলতা দূর করার দায়িত্ব অবশ্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি। তবে নিজেদের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে রাখলেন বিসিবি প্রধান। ‘লিগ্যাল প্রসিডিউর তো আমি বলতে পারব না। আমি তো ছোট মানুষ, একজন বোর্ড সভাপতি। আমার কথা হচ্ছে, সাকিবের ব্যাপারটি পুরোপুরি সরকারের পর্যায় থেকে আসতে হবে। আগেও বলেছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, উপদেষ্ট আছেন, প্রধান উপদেষ্টা আছেন, তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন সামগ্রিক দায়িত্ব নেয়ার। আমাদের যতটুকু ক্ষমতা যেমন স্টেডিয়ামের ভেতরে সে ইনডোরে যাবে, মাঠে খেলবে, অনুশীলন মাঠে যাবে, এসব দায়িত্ব নেয়াটা তো আমার জন্য খুব সহজ। এটা আমরা নিতে পারব।’