জাতীয় খেলা কাবাডির জীর্ণ দশা। এক সময় এশিয়ান গেমস থেকে নিয়মিত পদক জেতা এই ডিসিপ্লিনটি হারিয়েছে গৌরব। এখন এশিয়াডে পদকশূন্য। তবে প্রাচুর্য বেড়েছে কয়েকগুণ। সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট কোটি টাকা রয়েছে কাবাডির ফাণ্ডে। আর এতেই চোখ ছানাবড়া। নড়েচড়ে বসেছেন অনেকেই। তাইতো কাবাডির মসনদে বসতে চলছে কাড়াকাড়ি। কাকে পেছনে ফেলে কে তখদে বসবেন তাই নিয়ে চলছে ধুন্ধুমার লড়াই। ২০১০ গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে পুরুষ দল ও ২০১৮ জাকার্তা এশিয়াডে পদক হারায় মেয়ে কাবাডি দল। এরপর শতচেষ্টা করেও সেই পদক পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের জাতীয় এই খেলাটির। ২০১৭ সালে পদক ফেরানোর প্রত্যয় নিয়ে কাবাডির মসনদে আসে পুলিশ বাহিনী। তারা অর্থের প্রাচুর্যতা বাড়িয়েছে ঠিকই, কিন্তু শতচেষ্টা করেও হারানো পদক ফেরাতে পারেনি। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কাবাডির সভাপতি ও পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানকে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি দেয় সরকার। ফলে কাবাডি থেকেও বাদ পড়েছেন তারা। জানা গেছে, গত সাত বছরে কাবাডির বর্তমান কমিটি তিল তিল করে আট কোটি টাকার ফা- তৈরি করেছে। যার মধ্যে তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকার এফডিআর এবং নগদ চার কোটি ২৫ লাখ টাকা রয়েছে ব্যাংকে। সার্চ কমিটির কর্তাদের কাছে এক সভায় এই তথ্য জানান কাবাডির যুগ্ম সম্পাদক ও ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক। এই খবর শুনেই নড়েচড়ে বসেন অন্যরা। সূত্রটি জানায়, অর্থের খবর পেয়েই আসন্ন কাবাডির অ্যাডহক কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মতিঝিল পাড়ার এক নেতা। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে কাবাডি খেলোয়াড় ও সংগঠকদের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক তারকা খেলোয়াড় বলেন, ‘কাবাডিই আমাদের সব। জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছি কাবাডিতে। আগে অর্থ সংকট ছিল পদক এসেছে নিয়মিত। কিন্তু এখন অর্থ রয়েছে পদক আসছে না। এটাই আমাদের কষ্ট। তবে আমরা চাই এই অর্থ কাবাডির উন্নয়নে ব্যয় হোক। যে কেউ এসে যেন অর্থের অপব্যবহার করতে না পারে, সে হিসাব করেই যেন কাবাডির কমিটি গঠন করেন সার্চ কমিটির সদস্যরা। এটাই আমাদের আবদার।’ এদিকে দ্রুততম সময়ে কাবাডিতে অ্যাডহক কমিটি গঠন ও পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুটি চিঠি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে জমা পড়েছে। জানা গেছে, ক্রীড়া পরিষদের সচিকে দেয়া প্রথম চিঠিতে সাবেক খেলোয়াড় আসগর আলীর নাম থাকলেও সই রয়েছে আনোয়ার হোসেন আনু নামের এক সংগঠকের। সার্চ কমিটিকে দেয়া আনোয়ার হোসেন আনুর চিঠিতেও সই তার। এ বিষয়ে আসগর আলী বলেন, ‘আমার চিঠি পরিবর্তন করে আনু সই করেছে নিজে। যা আমার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। এটা একটি অপরাধ।’