শেষ মুহূর্তে শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কোনো রকমে হার এড়িয়েছে বাংলাদেশ। ফলে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়েও এবারের সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের ফেবারিট বলার সাহস পাচ্ছেন না সাবিনা খাতুনরা। যেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে যেত, সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ড্রয়ে পিটার জেমস বাটলারের দলের হিসাব গেছে বদলে। ভাবতে হচ্ছে অনেক কিছু নিয়েই। আজ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে শক্তিশালী ভারতকে মোকাবিলা করতে হবে লাল সবুজের মেয়েদের। নেপালের কাঠমা-ুর দশরথ স্টেডিয়ামে হতে যাওয়া সে ম্যাচে অন্তত ড্র করলেও সেমিফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ। আবার পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে হার এড়াতে পারলেও সেরা চারের মঞ্চে উঠবে পিটার বাটলারের দল।
ভারতের বিপক্ষে গতবার ৩-০ গোলে গ্রুপ পর্বের দেখায় জিতেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু যে পাকিস্তানকে দুই বছর আগের দেখায় ৬-০ গোলে হারিয়েছিল মেয়েরা, এবার তাদের সঙ্গে ১-১ ড্রয়ে ছিটকে পড়ার শঙ্কাও উঁকি দিতে শুরু করেছে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে যদিও ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র ও মিডফিল্ডার মনিকা চাকমা জয়ের আশাবাদ জানিয়েছেন। তবে বালা দেরি, দোংমেই গ্রেসির মতো গোলমেশিনদের বিপক্ষে রূপনা, ইয়ারজান বেগম ও মিলি আক্তার-তিন গোলকিপারকেই প্রস্তুত রাখছেন গোলরক্ষক কোচ উজ্জ্বল। পাকিস্তানের বিপক্ষে আক্রমণভাগের ব্যর্থতায় প্রত্যাশিত গোল পায়নি বাংলাদেশ। দল প্রথম গোল হজম করেছিল রক্ষণের ব্যর্থতায়। ভারত ম্যাচের ফলের সাথে গোল ব্যবধানও গুরুত্বপূর্ণ। উজ্জ্বলের বিশ্বাস, প্রত্যাশা পূরণের সামর্থ্য আছে তার তিন শিষ্যেরই। ‘তিন গোলরক্ষকই শতভাগ প্রস্তুত। রুপনাকেই পোস্টের নিচে আশা করছি। আপনারা জানেন, আমার প্রতিটি গোলরক্ষকেরই উচ্চতার সমস্যা আছে। তো এরিয়াল বলগুলো নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, যেগুলো নিয়ে আমি অনেক কাজ করেছি, দেশে এবং দেশ থেকে আসার পরে। আজও আপানারা দেখেছেন, আমরা এরিয়াল বল নিয়ে কাজ করেছি। মেয়েদের উন্নতি দেখে আমি সন্তুষ্ট।’ বাংলাদেশের গোলরক্ষক কোচ বলেন, ‘আমি আমার তিন গোলকিপার নিয়েই খুশি। আজকেও আপনারা দেখেছেন, সেট-পিস নিয়ে কাজ হয়েছে। আমার পরবর্তী যে দুই গোলকিপার আছে ইয়ারজান ও মিলি, দুজনেই প্রস্তুত আছে। আমি যাকে ইচ্ছা রূপনার জায়গায় কাজে লাগাতে পারব। আমি গোলকিপিং পজিশন নিয়ে ভয় পাচ্ছি না। বদলি গোলকিপারের সাথে প্রথম পছন্দের গোলকিপারের ব্যবধান উনিশ-বিশ।’
দুই বছর আগে বাংলাদেশকে মেয়েদের সাফের প্রথম শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসানো কোচ রব্বানী ছোটন মতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই খেলা উচিত বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচে কিছুটা হলেও দুর্ভাবনায় পড়েছে বাংলাদেশ। তবে গত আসরের অভিজ্ঞতা থেকে আশা দেখছেন রব্বানী। ‘গতবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আমাদের অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল পণ্ডিতরা বলেছিল, ‘এই ম্যাচের কথা চিন্তা না করে খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে দাও, কেননা, এই ম্যাচ তুমি হারবেই।’ কিন্তু আমি বলেছিলাম, ‘না, তা হবে না। আমি এই ম্যাচেই খেলব। এই ম্যাচ জিতেই আমি ভুটানের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে খেলব।’ আমি সেটা করে ছেড়েছিলাম।’ সাফ জয়ী এই কোচ বলেন, ‘তবে গতবারের আর এবারের দল এক না। তারপরও আমি মনে করি, সবার বিপক্ষে জয়ের সামর্থ্য আমাদের আছে। বাটলার তো অ্যাটাকিং ফুটবল খেলাবে, কিন্তু রক্ষণে লোক নেই, চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে ম্যাচেও এটাই করতে দেখেছি। তবে ভারতের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্যই তার খেলা উচিত।’
