ঢাকা ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভারতকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

ভারতকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

তুলনামূলক দুর্বল পাকিস্তানের সঙ্গে কোনোমতে ড্র। এরপর কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে সিনিয়র ফুটবলারদের বিরোধ চলে এসেছে প্রকাশ্যে। বাঁচা-মরার ম্যাচের আগে এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য মোটেও আদর্শ ছিল না। তবে বাইরের অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তাপের প্রভাব অদৃশ্য থাকল ভারতের বিপক্ষে মাঠের খেলায়। আফঈদা খাতুনের লক্ষ্যভেদের পর তহুরা করলেন জোড়া গোল। গোলরক্ষক রূপনা চাকমা দিলেন বেশ কিছু অসাধারণ সেভ। শঙ্কা উড়িয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

গতকাল বুধবার নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলে জিতেছে প্রতিযোগিতার শিরোপাধারী বাংলাদেশ। ফলে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে উঠেছে তারা। গত সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ভারতকে গ্রুপ পর্বে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল মেয়েরা। এদিন একাদশে দুটি পরিবর্তন এনে পিটার বাটলারের দল শুরু থেকে দারুণ খেলছে। একের পর এক আক্রমণ গড়ে প্রতিপক্ষকে রেখেছে চাপে। সেই ধারায় ম্যাচের ৩ মিনিটে শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়র ঠিকমতো প্লেসিং করতে পারেননি। বল চলে যায় অনেক দূর দিয়ে। দুই মিনিট পর দারুণ সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণার ক্রসে শামসুন্নাহার ফাঁকায় দৌড়ে গিয়ে অল্পের জন্য বলের নাগাল পাননি। তা না হলে পোস্টের কাছাকাছি থেকে প্লেসিং করতে পারলে গোল হতে পারতো। ৮ মিনিটে মারিয়া মান্দার দূরপাল্লার শট পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে যায়। দুই মিনিট পর আফঈদার ব্যাকপাস রুপনা চাকমা ক্লিয়ার করতে গিয়ে সামনে থাকা মানিশার পায়ে লেগে অল্পের জন্য জাল ছুঁতে পারেনি। বল যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ১৮ মিনিটে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। সাবিনা খাতুনের কর্নারে গোলকিপার হাত উঁচিয়ে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। পেছনে বল পেয়ে ফাঁকায় ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার দারুণ বুদ্ধিমত্তায় গোলকিপার ও ডিফেন্ডারদের ওপর দিয়ে দ্বিতীয় পোস্টে জাল কাঁপান। ২৬ মিনিটে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য। ঋতুপর্ণা বাঁদিক থেকে ক্ষিপ্রতায় একজনকে ডজ দিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিলেও তা ক্রসবারে লেগে ফিরে আসায় ব্যবধান বাড়েনি। তিন মিনিট পর আর হতাশ হতে হয়নি। বাংলাদেশ ব্যবধান বাড়ায়। আসালাঙ্কা দেবী ঠিকমতো বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। ঋতুপর্ণা বল পেয়ে তা ভাসিয়ে দেন পোস্টের মুখে, সেখানে তহুরা শরীর দিয়েই তা ঠেলে দেন জালে। এক ডিফেন্ডার তহুরার গায়ে সেঁটে থাকলেও কিছুই করতে পারেননি। আনন্দে মাতেন সবাই। ৩৫ মিনিটে বালা দেবীর শট রুখে দিয়ে রুপনা চাকমা বাংলাদেশকে ঠিকভাবে ম্যাচে বাঁচিয়ে রাখেন। তিন মিনিট পর মানিশার ফ্রিকিক ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হলে ভারত গোল পায়নি। ৪৩ মিনিটে বাংলাদেশ তৃতীয় গোল পায়। বক্সের ভেতর থেকে শামসুন্নাহার সিনিয়রের পাসে বাইরে থেকে তহুরার বুলেট গতির শট জালে আশ্রয় নেয়। গোলকিপার ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি। বিরতির আগে ভারত এক গোল শোধ দেয়। সতীর্থের ক্রসে রুপনা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি, একদম সামনে থেকে অধিনায়ক বালা দেবী হেড থেকে লক্ষ্যভেদ করেন। ড্রেসিংরুম থেকে ঘুরে এসে ভারত কিছুটা মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে। গোল শোধের সুযোগ পেয়েও তা করতে পারেনি। কোনো সময় নিজেদের ব্যর্থতায় আবার গোলকিপার রুপনা ছিলেন প্রাচীর হয়ে। ৫৬ মিনিটে ভারত ব্যবধান কমানোর আরো একটি সুযোগ পেয়েছিল। সংগীতা বাসফোরের জোরালো শট রুপনা চাকমা বা দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করে গোল হতে দেননি। ভারত ৬২ মিনিটে আবারো সুযোগ পায়। জোতি চৌহান বক্সে ঢুকে শট নেন তবে পয়েন্ট ব্লাঙ্ক সেভ করেন রুপনা।

এরপর জোতি সতীর্থের ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি। বাংলাদেশ ফাঁকে ফাঁকে সুযোগ তৈরি করে। ৮১ মিনিটে বদলি স্বপ্না রানীর জোরালো শট এক হাত দিয়ে প্রতিহত করে জালে জড়াতে দেননি গোলকিপার। শেষ দিকে ৩-১ স্কোরলাইন ধরে রেখে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। ভারত হয়েছে গ্রুপ রানার্সআপ। আর বিদায় পাকিস্তানের।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত