ঢাকা ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিবর্ণ দিনে প্রাপ্তি শুধুই তাইজুলের দুই উইকেট

বিবর্ণ দিনে প্রাপ্তি শুধুই তাইজুলের দুই উইকেট

মুমিনুল হকের বল ডিপ পয়েন্টে ঠেলে দিয়েই দৌড় শুরু করলেন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পেয়ে শূন্যে ঘুষি মারলেন তিনি। করতালি ভেসে এলো গ্যালারি থেকেও। উদযাপনের প্রায় পুরোটা সময়ই স্টাবস দর্শকদের কাছ থেকে পেলেন অভিবাদন। অসহায় বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা তখন এলোমেলো। ঘটনাটা যেন চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনেরই প্রতিচ্ছবি। টস হেরে যে দিনের শুরু, তার সমাপ্তি অবধি প্রাপ্তি কেবল তাইজুল ইসলামের এনে দেয়া দুই উইকেট। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই এই ছাপ কাটিয়ে উঠতে না পারলে অবধারিতভাবেই সামনের চারটি দিনও বাংলাদেশের জন্য হবে অনেক লম্বা। চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনশেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান করেছে প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশ এদিন শুরু করে দুই পেসার নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদকে দিয়ে। প্রথম ম্যাচে এক পেসার নিয়ে খেলার পর এ ম্যাচের একাদশে ফেরানো হয় নাহিদকে। এ ছাড়া আরো দুটি বদল আনতে হয়, জাকের আলি ও লিটন দাসের অসুস্থতায় সুযোগ পান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও জাকির হাসান। সকালের শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। অবশ্য পেসারদের প্রথম স্পেল থেকেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু সপ্তম ওভারে টনি ডি জর্জির ক্যাচ ছেড়ে দেন উইকেটরক্ষক অঙ্কন। অভিষিক্ত অঙ্কনের জন্য অবশ্য সুযোগটা ছিল বেশ কঠিন। বাঁদিকে অনেকটা ঝাঁপিয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি তিনি। এরপর পুরো প্রথম ঘণ্টায় কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। ১৬তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকেও বোলিংয়ে নিয়ে আসেন শান্ত। তিনি উইকেট না পেলেও সাফল্যের দেখা পান আরেক স্পিনার তাইজুল। তার বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে আলগা শটে মিড অনে দাঁড়ানো মুমিনুলের হাতে ক্যাচ দেন এইডেন মার্করাম। ৫৫ বলে ৩৩ রান করেছিলেন তিনি। একরকম উপহার হিসেবে পাওয়া মার্করামের উইকেট নিয়েই বাকি সেশন সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে। প্রথম সেশনে এমন হতাশার পর দ্বিতীয়টিতে ভালো কিছু করা জরুরি ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু উল্টো হতাশা বেড়েছে আরো। এই সেশনে স্টাবস হাফ সেঞ্চুরি ও জর্জি পেয়েছেন শতকের দেখা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন উদ্বোধনী ব্যাটার জর্জি। পঞ্চম টেস্টে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি ছিল স্টাবসের। এই সেশনে বাংলাদেশ উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা জাগাতে পেরেছিল একবারই। তাইজুল ইসলামের বল ক্রিস্তিয়ান স্টাবসের ব্যাটের একদম পাশ দিয়ে যায়। তখন তাইজুলের মনে হয়েছিল, বল লেগেছে ব্যাটারের ব্যাটে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও তার ওপর ভরসা করে রিভিউ নেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, ব্যাটে লাগেনি বল। দ্বিতীয় সেশনে ৯৪ রান হয়। বাংলাদেশের সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য থাকে তৃতীয় সেশন। এখানেও খুব একটা সাফল্যের দেখা মেলেনি। পঞ্চম টেস্টে এসে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে যান স্টাবস। তার সঙ্গী জর্জিও বড় করতে থাকেন নিজের রান। স্টাবস অবশ্য প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিকে খুব বেশি বড় করতে পারেননি। তাইজুলের ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। ১৯৮ বলে ১০৬ রান করেন তিনি। স্টাবসের সঙ্গে জর্জির জুটি ছিল ২০১ রানের। পুরো দিনে বাংলাদেশের বোলাররা তেমন চ্যালেঞ্জও জানাতে পারেনি। অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। ওপেনার জর্জি এখনো অপরাজিত ২১১ বলে ১৪১ রান করে। তার সঙ্গে দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন ২৫ বলে ১৮ রান করা ডেভিড বেডিংহাম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত