চলতি মাসেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে জাতীয় দলে ফিরবেন তামিম ইকবাল। এমন গুঞ্জনের মধ্যেই অনুশীলনে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। আগের মতো কাভার ড্রাইভ করছেন। টানা দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে অনুশীলন করেছেন তিনি। গত শনিবারের চেয়ে গতকাল রোববার তার অনুশীলনের মাত্রা ছিল একটু বেশি। ক্রিকেটে ফেরার জন্য এই নিবেদনের মাত্রা কমানোর লক্ষ্য নেই তামিমের। তার মানে চলতি মাসের উইন্ডিজ সফর দিয়েই ক্রিকেটে ফিরছেন তিনি! এদিন বেশ সময় নিয়ে ইনডোরের সামনের পিচে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন তামিম। এদিন তার সঙ্গে আফগানিস্তান সিরিজের দল থেকে বাদ পড়া স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও পেসার হাসান মাহমুদ ছিলেন। জাতীয় দলের একজন স্পিনার ও পেসারকে নিয়ে বেশ ভালো অনুশীলন করেছেন এই ওপেনার। পাশাপাশি দুজন থ্রোয়ারকে নিয়ে ড্রাইভ শটের অনুশীলন করেছেন। কোচ সোহেল ইসলামকে সঙ্গে পেয়েছেন তামিম। প্রায় বছর খানেক পর ব্যাট হাতে নামায় কিছুটা জড়তা থাকতে পারে। ভুল শটও করতে পারেন। সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য নিজের ব্যাটিংয়ের সময় এই কোচকে সঙ্গে রেখেছিলেন তামিম।
কিছুদিন আগে ভারতে ধারাভাষ্যকার দিতে যাওয়া তামিম কোচ সোহেলের বেশ প্রশংসা করেছিলেন। তামিমের এই প্রস্তুতিতে তার ক্রিকেটার হিসেবে ফেরার ইঙ্গিতটা ভালোভাবে পাওয়া গেল। গুঞ্জন উঠেছিল বোর্ডে পরিচালক হিসেবে আসতে পারেন তামিম। আপাতত সেই সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং লাল বলে তামিমের ব্যাটিং অনুশীলন তার টেস্টে ফেরার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করছে। তাই নভেম্বরে উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে তার ফেরা হবে কিনা সেই প্রশ্ন উঠছে। ২২ নভেম্বর সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ওই সিরিজের দলে তামিমকে রাখা হলে তার প্রস্তুত হতে হবে। সেই চেষ্টাতেই সম্ভবত ব্যাট হাতে অনুশীলনে তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে হলে আগে ম্যাচ খেলে রানে ফিরতে হবে তামিমকে। সর্বশেষ ৬ মে তিনি ম্যাচ খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে।
সামনে জাতীয় লিগে চট্টগ্রামের হয়ে খেলে ম্যাচ প্র্যাকটিস করে নিতে পারেন তিনি। তাই চলমান লিগে আগামী রাউন্ডে চট্টগ্রামের দলে এই ওপেনারকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে জাতীয় দলের হয়ে তামিম সর্বশেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আর সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন গত বছরের এপ্রিলে মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে ২০২২ সালে অবসর নিলেও শেষ ম্যাচটি খেলেন ২০২০ সালে। এরপর তার দলে ফেরা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। বিসিবি থেকে বারবার তার সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলা হয়েছে। আলোচনাও হয়েছে কিন্তু সমাধান হয়নি। তামিম দলে ফেরার জন্য কিছু শর্ত দিয়েছিলেন। তার মধ্যে অনুমতি একটি ছিল বিদায়ী কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে না খেলা। এখন হাথুরু নেই।
নেই তামিমের ‘শত্রু’ টেস্ট থেকে অবসর নেয়া সাকিব আল হাসানও। আর টেস্ট ওপেনারদের তিন ব্যাটার সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে রান খরা চলছে।
তরুণ ওপেনারদের ব্যর্থতাই তাহলে অভিজ্ঞ তামিমের ফেরার পথ তৈরি করে দিচ্ছে! তাছাড়া বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণ করেই তামিমকে আবারও ২২ গজে দেখার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত, তামিম ইচ্ছা করলে আরও দুই-তিন বছর খেলতে পারে। আমি চাই সে অন্তত আরও দুই বছর ক্রিকেট খেলুক।