প্রশ্নের মুখে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন!
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া ডেস্ক
দুঃসময় যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সাকিব আল হাসানের। চোখের সমস্যা, আঙ্গুলের চোট থেকে মুক্তি মিললেও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় বেকায়দায় পড়েছেন এই অলরাউন্ডার। নিরাপত্তা শঙ্কায় কারণে দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। এবার ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে সাবেক এই টাইগার অধিনায়কের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরেক সমস্যা । তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন সাকিব আল হাসান। পেশাদার ক্যারিয়ার আরো দীর্ঘ। লম্বা এই সময়ে জাতীয় দলের পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। ব্যাটে-বলে অবদান রাখলেও মূলত বোলার সাকিবের কদরই বেশি। বাঁহাতের স্পিন ভেল্কিতে গড়েছেন কতোই না রেকর্ড। সেই সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কী না উঠলো প্রশ্ন। হ্যাঁ, অবাক শোনালেও এমনই হয়েছে। ইংল্যান্ডের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে গিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে পৌঁছে যাওয়া সাকিবের বোলিং অ্যাকশন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আপত্তি তোলা হলো। কাউন্টি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিষয়টি সাকিবকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই ইংল্যান্ডের কোনো ল্যাবে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেবেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিবি কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রশ্ন উঠতে পারে, এ কারণেই কি দুবাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলছেন না সাকিব? আদতে এই সিরিজ খেলার সঙ্গে তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা কেবলই কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ উঠলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা অন্যান্য ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে তার কোনো বাধা নেই। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট বা কাউন্টিতে খেলতে হলে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায় উতড়াতে হবে তাকে। পুরো বিষয়টি নিয়ে বিসিবির কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে অফিসিয়াল কিছু আসেনি। যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ব্যাপার নয়, তাই আমাদের জানাটাও গুরুত্বপূর্ণ নয় এই ব্যাপারে। তবে বিসিবি পর্যন্ত এসেছে বিষয়টি। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এটা কেবলই ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সাকিব বিষয়টি জানেন, হয়তো দ্রুতই পরীক্ষা দেবেন। এটার কারণে আন্তর্জাতিক বা অন্যান্য ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে তার কোনো বাধা নেই।’
গত সেপ্টেম্বর ভারত সফরে টেস্ট সিরিজ খেলে ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে যান সাকিব। প্রায় ১৩ বছর পর কাউন্টিতে ফেরার পর্বে সারের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। সমারসেটের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া সাকিব পরের ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে সারের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ৬৩.২ ওভার বোলিং করেন তিনি।
এই ম্যাচে তার বোলিং নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ম্যাচটিতে মাঠের আম্পায়ার ছিলেন ডেভিড মিলনেস ও স্টিভ ও’শাগনেসি। তবে দুজনের কে রিপোর্ট করেছেন নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটা ঘরোয়া ম্যাচ হওয়ায় ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড থেকে সরাসরি যোগাযোগও করা হয়নি বিসিবির সঙ্গে। নির্দিষ্ট একটা টুর্নামেন্টে সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের কারণে প্রশ্ন উঠায়, পরবর্তীতে কেবল কাউন্টিতে খেলতে গেলেই পরীক্ষা দিতে হবে সাকিবকে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা বিশ্বব্যাপী চলা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে খেলতে বাধা নেই সাকিবের। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে আছেন সাকিব। গত জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে দেশে ফিরে দুদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি, খেলেন মেজর লিগে (এমএলসি)।
পরে কানাডাতে বাংলা টাইগার্স মিসিসাগার অধিনায়ক হিসেবে খেলেন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি। এরপর পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলেন সাকিব। এই সিরিজের পর ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলে ভারতে যোগ দেন বাংলাদেশ দলের সঙ্গে। টেস্ট সিরিজ খেলে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরেন তিনি। মিরপুরে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চাইলেও নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশে ফেরা হয়নি সাকিবের।