শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে রীতিমতো আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। হতশ্রী ব্যাটিংয়ে জেতা ম্যাচ হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। অথচ শুরুটা বেশ ভালো করেছিল টাইগাররা। বোলারদের সৌজন্যে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল তাদের। ২৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২ উইকেটে ১২০ রান করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর ১৪৩ রানে অলআউট। ২৩ রান করতে হারায় ৮ উইকেট। শেষ সাত উইকেট তো হারায় ১১ রান তুলতে। দুই ওপেনারকে হারানোর পর বাংলাদেশ দল এগিয়ে যাচ্ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত ও মিরাজের ব্যাটে। কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাটিং করলেও খেলছিলেন সাবলীলভাবেই। এরপর এ দুই ব্যাটারই আউট হয়েছেন প্রতিপক্ষের পাতা ফাঁদে। দুইজন সুইপ করতে গিয়ে টপএজ হয়ে ফিরেছেন। দলের সহ-অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ মেনে নিলেন নিজেদের ভুল। শারজার উইকেট রহস্যময় আচরণ করলেও ম্যাচটা শেষ করতে না পারার হতাশা লুকালেন না তিনি। পাশাপাশি আরো দুই ম্যাচ বাকি থাকায় এখনো সুযোগ আছে বলে জানালেন।
দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ বললেন, ‘যখন আমি আর শান্ত ব্যাট করছিলাম, তখন আমাদের দুজনের কাছে উইকেট সহজই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ২০ ওভারের পর, বলটা যখন একটু সফট হয়ে গেছে, পুরনো হয়ে গেছে; হঠাৎ করে বল খুব টার্ন শুরু হয়ে গেছে। আপনি যদি দেখেন, মাঝখানে আমি আর শান্ত খুব স্ট্রাগল করছিলাম।’ হঠাৎ করেই উইকেটে বল অনেক বেশি টার্ন করছিল দাবি করে বলেন, ‘আমাদের দুজন যেভাবে সেট ছিলাম, আমাদের দুজনের ভেতরে একজনের শেষ করে আসা উচিত ছিল। কারণ আমি শান্তকে বারবার বলতেছিলাম। এই উইকেটে যেহেতু আমাদের দুজনের সমস্যা হচ্ছে খেলতে, পরের ব্যাটারদের জন্য অনেক কঠিন হবে। কারণ হঠাৎ করে উইকেটটা এত টার্ন করছিল।’ যে স্লো টার্ন করতেছিল, তারপর স্ট্রেট আসছিল; আপনি প্রেডিক্ট করতে পারবেন না কোনটা সোজা যাবে, কোনটা টার্ন করবে। এটা হঠাৎ করে হয়েছিল। ওই সময়টা আমিও ভুল করেছি, শান্তও। এটা নিয়ে আমরা পরে আলোচনা করেছি।’ এই ম্যাচ দিয়ে প্রায় আট মাস পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিরেছে বাংলাদেশ। সে জন্য কিছুটা জড়তা ছিল বলেও মনে করেন মিরাজ।
শারজাহতে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছে সবশেষ সেই ১৯৯৫ সালে। এই সিরিজের দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারের তখন জন্মও হয়নি। লম্বা বিরতির পর ওয়ানডে খেলার জড়তা এখন আর নেই। শারজাহর উইকেটের চরিত্রও বোঝা গেছে। মিরাজ তাই এখন ভালো কিছুর আশা করছেন। ‘একটা ম্যাচ হেরেছি, এখনো দুইটা ম্যাচ আছে। এখনো সুযোগ আছে আমাদের। দুটি ম্যাচ চিন্তা না করে, পরের ম্যাচটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু আমরা একটু ব্যাকফুটে আছি। এখন একটা ম্যাচ খেলেছি এখানে ওয়ানডে লম্বা সময় পর খেললাম আমরা, ৭-৮ মাস আগে খেলেছিলাম (সবশেষ), সবার ভেতর ওই জিনিসটাও কাজ করছিল যে, অনেক দিন পর খেলছি। এখন প্রস্তুতি ওভাবেই নিচ্ছি। অনেক দিন পর খেলেছি এই মাঠে, একটা আইডিয়া হয়েছে। মোমেন্টাম কীভাবে নিতে হবে, সেটা আমরা অনুশীলন করছি।’ এই দুই ম্যাচে বাংলাদেশ পাবে না মুশফিকুর রহিমকে। আঙুলের চোট নিয়ে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। মিরাজ বললেন, দলের জন্য বড় ধাক্কা এমন একজন ক্রিকেটারকে হারানো। ‘এটা তো অবশ্যই আমাদের জন্য দুঃখজনক যে, মুশফিক ভাইয়ের ইনজুরি হয়েছে। তিনি দলের ভেতর কতটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, এটা আমরা সবাই জানি। তিনি যেভাবে ক্রিকেট খেলেন এবং দেশকে সার্ভিস দিয়ে গেছেন, এটা অসাধারণ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল চারটায় শুরু হবে দ্বিতীয় ম্যাচ।