আইসিসি চ্যাম্পিয়নন্স ট্রফি যতই এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। আর এই উত্তেজনার মূলে রয়েছে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বি দেশ পাকিস্তান ও ভারত। তবে এশিয়ার কাপের মতই ‘হাইব্রিড মডেলে’ হবে এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট? ক্রিকেটপ্রেমীদের এ ধারণা অমূলক না। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়নন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে যাবে না ভারতীয় দল। গতকাল শনিবার ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিসিআই এরই মধ্যে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা আইসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে; ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দলকে পাকিস্তানে না পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আট দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে পাকিস্তানের তিনটি ভেন্যুতে হওয়ার কথা। কিন্তু ভারত দল যদি পাকিস্তানে না যায়, তাহলে আইসিসি ও পিসিবিকে নতুনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। গত এশিয়া কাপের মতো ‘হাইব্রিড মডেলে’ এই টুর্নামেন্ট হওয়ার সম্ভাবনাই এখন প্রবল বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছরের এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু দেশটিতে খেলতে যায়নি ভারত। কারণ হিসেবে সে সময় তারা জানিয়েছিল, পাকিস্তান সফরের অনুমতি সরকারের পক্ষ থেকে না পাওয়ার কথা। অনেক টানাপোড়েনের পর ‘হাইব্রিড মডেলে’ আয়োজন করা হয় আসরটি। ভারত তাদের সব ম্যাচ খেলে শ্রীলঙ্কায়। ভারতীয় গণমাধ্যমে গত শুক্রবার খবর ছড়ায়, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তান সফরে যেতে অনিচ্ছার কথা পিসিবিকে জানিয়ে দিয়েছে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ভারতের ম্যাচগুলো খেলার পরামর্শ দিয়েছে তারা। ওইদিনই পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি ‘হাইব্রিড মডেলে’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। এমন কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি। তবে ক্রিকইনফোর ধারণা, হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে কয়েক মাস আগেই বিভিন্ন পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে। কয়েকটি দেশকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখাও হয়েছে; সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দ্বিতীয় ভেন্যু হিসেবে এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে শ্রীলঙ্কাও।
ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, এই সপ্তাহের শুরুতে আইসিসিকে নিজেদের অবস্থানের কথা জানায় বিসিসিআই; তবে সেটা মৌখিকভাবে কী না, তা নিশ্চিত নয়। পিসিবিকে জানানোর আগে বিসিসিআইয়ের কাছে থেকে লিখিত চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আইসিসির। পিসিবি প্রধান নাকভিও জোর দিয়ে বলেছেন, বিসিসিআইয়ের কোনো আপত্তি থাকলে পিসিবিকে ‘লিখিতভাবে’ জানাতে হবে। সেটা হলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন তারা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আট দলকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হবে। সেখান থেকে শেষ চারের লড়াইয়ে যাবে দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল। টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া দলগুলো- আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউ জিল্যান্ড, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
আসরের সূচি এখনো প্রকাশ হয়নি, টিকেটের বিষয়েও কিছু জানানো হয়নি। ক্রিকইনফো জানতে পেরেছে, চলমান এই অস্থিরতার কারণে আগামী সপ্তাহে লাহোরে অনুষ্ঠেয় সূচি ঘোষণার অনুষ্ঠান স্থগিত হতে পারে। রাজনৈতিক বৈরি সম্পর্কের কারণে ২০০৮ সালের এশিয়া কাপের পর আর কখনো পাকিস্তান সফরে যায়নি ভারত। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তান অবশ্য ভারতে গিয়েছিল। বহুজাতিক টুর্নামেন্টেই এখন কেবল দেখা হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের। দুই দল সবশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছিল ২০১২-১৩ মৌসুমে।