ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাতারাতি পরিবর্তন আশা করা ঠিক না

রাতারাতি পরিবর্তন আশা করা ঠিক না

নব্বই দশকের শেষ দিকে খেলোয়াড়ি জীবনেই কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তারপর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটের বিভিন্ন দলকে কোচিং করিয়েছেন তিনি। চমকপ্রদ সাফল্যের কল্যাণে ২০০৬ সালে তাকে যুক্ত করা হয় জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে। ২০১০ সালে জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পর বছর খানেক বিসিবির কোচ হিসেবে কাজ করেছেন একাডেমিতে। তার অধিনে দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বিপিএলে সর্বাধিকবার চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দীর্ঘ দিন থেকেই জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে দেশি যোগ্য কাউকে নিয়োগের দাবি উঠেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল জাতীয় দলের কোচ হচ্ছেন সালাউদ্দিন। অবশেষে গেল সপ্তাহে এসেছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। ১৪ বছর পর ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল ও আলোচিত এই কোচকে সম্প্রতি জাতীয় দলর সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। তার অ্যাসাইনমেন্ট শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে। তার আগে গতকাল রোববার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন দেশসেরা এই কোচ।

বিদেশি কোচদের ভিড়ে তার দায়িত্বটা কী থাকবে? এমন কৌতুহলী প্রশ্ন ঘুরাপাক খাচ্ছে সালাউদ্দিনের নিয়োগের পর থেকেই। সালাউদ্দিন বিষয়টি খোলাসা করে বলেন, ‘যেহেতু সহকারী কোচ আর হেড কোচ আছে এখানে। সে কিভাবে দলটা চালাচ্ছে তাকে সাহায্য করা সেই সাথে ক্রিকেটারদের যতটুকু পারি হেল্প করা। আমার দায়িত্বটা হয়তো একটু আলাদা হবে আগেরবারের তুলনায়। চেষ্টা করব ছেলেরা যেন আরো উন্নতি করে, বিদেশি কোচ আছে তাদের সঙ্গে ছেলেদের যোগাযোগটা যাতে আরো ভালো হয় সেদিকে লক্ষ্য থাকবে।’ দুই দশকের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সালাউদ্দিন এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সহকারী ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে টাইগারদের সঙ্গে কাজ করেছেন। সবশেষ ছিলেন ফিল্ডিং কোচ। ১৪ বছর পর আবার যুক্ত হলেন লাল-সবুজের দলের সঙ্গে। এবার তার দায়িত্বটা ভিন্ন এবং আরো বড় পরিসরে। তার ভাষায় বিদেশি কোচণ্ডক্রিকেটারদের মধ্যে ব্রিজ (সংযোগ মাধ্যম) হিসেবে কাজ করবেন তিনি। সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবালরা বড় ক্রিকেটার হয়ে উঠেছেন সালাউদ্দিনের চোখের সামনে থেকে। কোনো সমস্যা হলেই সাকিবরা ছুটে যেতেন তার কাছে। দেশি ক্রিকেটারদের নাড়ি-নক্ষত্র তার জানা। কোথায় শক্তিশালী আর কোথায় দুর্বলতা, এমন অনেক বিষয়ই তার নখদপর্ণে। সবমিলিয়ে তার আর বিদেশি কোচদের সম্মিলনে ক্রিকেটারদের আরো ভালোভাবেই বেড়ে ওঠার কথা।

সালাউদ্দিন কথা বলেছেন সাকিব-তামিমদের মতো তারকা ক্রিকেটার তৈরি হওয়া নিয়েও। তার মতে, এর জন্য লাগবে অধ্যবসায় আর কঠিন পরিশ্রম, ‘যখন সাকিব তামিম মুশফিকরা এসেছিল তখনো তারা টপ খেলোয়াড় হয়নি।

তারা আসলে দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে তাদের ইচ্ছা এবং নিজের মোটিভেশন এর কারণে একটা পর্যায়ে আসছে।’ সাকিব-তামিম হওয়ার মতো গুণ এই ক্রিকেটারদের মধ্যেও আছে বলে মনে করেন সালাউদ্দিন, ‘এই ছেলেদের যে ওই মোটিভেশনটা নাই সেটা বলা যাবে না। এই খেলোয়াড়দের অনেক ইচ্ছা হয়তো আছে। এই ছেলেদের সঠিক গাইডলাইন করলে তারা হয়তো একদিন স্টার খেলোয়াড়ে আবির্ভূত হবে। চেষ্টা তো করতেই হবে তা ছাড়া সবাইকে একটু আশাবাদী হতে হবে ছেলেদের সাপোর্ট করার জন্য।’ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটি, সেটি হলো অধারাবাহিকতা।

ক্রিকেটারদের অধারাবাহিকতার কারণ কি টেকনিক্যাল নাকি মানসিকতায় সেটি খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। এর জন্য সময় প্রয়োজন বলেও মনে করেন সাকিব-তামিমদের গুরু। ‘আসলে সরাসরি তো বলা যাবে না সেটা টেকনিক্যালি সমস্যা নাকি মানসিক সমস্যা নাকি অনুশীলনের সমস্যা। সেটা সামনাসামনি কাজ না করলে বোঝা যাবে না। এটার জন্য তো আমাদের অনেক কোচিং স্টাফ আছে তারা ভালো জানে খেলোয়াড়রাও ভালো জানে। আমার মনে হয় সমস্যাটা খোঁজা হচ্ছে।’ তবে সমর্থকদের প্রত্যাশার লাগাম টানতে বলেছেন তিনি। এ বিষয়ে সারাউদ্দিন বলেন, ‘রাতারাতি সবকিছু যে পরিবর্তন হয়ে যাবে সেটা আশা করা ঠিক না। অন্তত মানসিকভাবে তারা একটু ভালো হতে পারে আরেকটু চিন্তাভাবনাটা বড় করতে পারে। সেই সামর্থ্যটুকু যাতে পুরোটা দিতে পারে সেটার দিকে আসলে লক্ষ্য রাখা উচিত। আশা রাখি ইনশাল্লাহ তারা একটা ভালো পর্যায় যাবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত