আন্তর্জাতিক সাঁতার ফেডারেশনের (ফিনা) বৃত্তি নিয়ে থাইল্যান্ডের ফুকেটে বিশেষায়িত অনুশীলন করছেন সামিউল ইসলাম রাফি। প্যারিস অলিম্পিকেও খেলেছেন বাংলাদেশের অন্যতম এই সাঁতারু। গতকাল রোববার মিরপুর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সুইমিং কমপ্লেক্সের সব দর্শক চেয়ে ছিলেন রাফির দিকে। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর এই সাঁতারু রেকর্ড গড়বেন কী না সেটাই ছিল সবার কৌতুহলের কেন্দ্রে। স্বভাবতই ম্যাক্স গ্রুপ জাতীয় সাঁতারে আধিপত্য ধরে রেখেছেন তিনি। চারটি ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছেন। যার মধ্যে তিনটিতেই নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন রাজবাড়ির এই সন্তান। আগের দিন একটি রেকর্ড গড়েছিলেন, এদিন আরো দুটির মালিক হলেন। পুরুষ বিভাগে দিনের শেষ ইভেন্ট ছিল ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইল। রাফি শেষ পর্যন্ত সোনা জিতেছেন। কিন্তু রেকর্ড আর গড়া হলো না। তবে আগেই দুই রেকর্ড গড়ে ছাড়িয়ে যান সেনাবাহিনীর দুই রেকর্ডধারী সাঁতারু রোমানা আক্তারকে।
তবে দিনের শুরুতে দুটি রেকর্ড গড়তে পারায় দিন শেষে খুব বেশি আক্ষেপ ছিল না রাজবাড়ীর এই সাঁতারুর। দ্বিতীয় দিনে রাফি নিজে দুটি ইভেন্টে রেকর্ড গড়েছেন। এর মধ্যে সকালে ২০০ মিটার ইনডিভিজুয়াল মিডলেতে রেকর্ড গড়ে সোনা জেতেন। তিনি সময় নেন দুই মিনিট ৯.৯৯ সেকেন্ড। গত বছর কাজল মিয়ার দুই মিনিট ১০.৭৭ সেকেন্ডের রেকর্ড ভাঙেন তিনি। এরপর ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে নিজের গড়া রেকর্ড ভেঙে নতুন করে গড়েন। তিনি এই ইভেন্টে সময় নেন দুই মিনিট ১০.৮৭ সেকেন্ড। গত বছর সময় নিয়েছিলেন দুই মিনিট ১১.৮৬ সেকেন্ড।
ফুকেটের থানিয়াপুরা স্পোর্টস অ্যান্ড হেলথ রিসোর্টে রাশিয়ান কোচ আলেকজান্ডার তিখনভের অধীনে অনুশীলন করেন রাফি। এই অনুশীলনের কারণেই দিনকে দিন রাফির টাইমিংয়ের উন্নতি ঘটছে। মিরপুর সুইমিং পুলে দাঁড়িয়ে রাফি সেই কথাগুলো শোনালেন, ‘অবশ্যই আমার টাইমিংয়ের উন্নতি হয়েছে। ফ্রান্স অলিম্পিক থেকে এসে দেশে বেশ কিছু দিন ছিলাম। ওই সময়ে প্র্যাকটিসের অভাবে পিছিয়ে পড়ি। এরপর আবারো থাইল্যান্ড গিয়ে তাদের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। এক মাস হতাশায় ভুগেছিলাম। এরপর যখন জাতীয় সাঁতারের তারিখ দেয়া হয় তখন আরো চিন্তায় পড়ি। তবে কোচ বললেন সমস্যা নেই।’ পুরোটা সময় তিনি তখন অনুশীলন করেছেন বলে জানান, ‘আমাকে কোচ দুই মাস কঠোর ট্রেনিং করিয়েছে। দিনে প্রায় ১৬-১৭ হাজার মিটার সুইমিং করতে হয়েছে। সঙ্গে এক্সারসাইজ, জিম, ড্রাই ল্যান্ডে ট্রেনিং। গত দুই মাস আমার ওপর দিয়ে অনেক ঝড় গেছে। এই পরিশ্রমের ফল পাচ্ছি। আমি খুব খুশি।’
এদিকে আগের দিন একটি রেকর্ড গড়লেও কাল আরেকটি ইভেন্টে রেকর্ড গড়ে সোনা জেতেন সেনাবাহিনীর রোমানা আক্তার। মেয়েদের ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে সকালে রেকর্ড গড়েন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই সাঁতারু। তিনি সময় নেন ২.৫১:৩৫ সেকেন্ড। নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন তিনি। গত বছর এই ইভেন্টে তিনি সময় নিয়েছিলেন দুই মিনিট ৫১.৯০ সেকেন্ড। দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনী ১৭টি স্বর্ণ, ১৩টি রুপা, ছয়টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চারটি স্বর্ণ, আটটি রুপা ও ১২টি ব্রোঞ্জ এবং বিকেএসপি তিনটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে।
