কখনো নির্বাচক পরিবর্তন, কখনো অধিনায়ক, ঘনঘন বদল হচ্ছিল প্রধান কোচও। একে অন্যের বিপক্ষে বাক যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন ক্রিকেটাররাও। সম মিলিয়ে বাজে সময় পার করছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। মাত্র ছয় মাসের মাথায় পিসিবির চাকরি ছাড়েন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের প্রধান কোচ গ্যারি কারস্টেন। অন্তর্বর্তী কোচের দায়িত্ব নেন জেসন গিলেস্পি। সাবেক এই অজি তারকার অধিনে স্বস্তির জয় পেয়েছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। এক সময় অস্ট্রেলিয়ার মাটি পাকিস্তানের জন্য ছিল দুর্গ। এই সফরের আগে এখানে তারা অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ানডেতে হারাতে পারেনি প্রায় ৭ বছর। আর সিরিজ জেতেনি ২২ বছর। দুটি আক্ষেপই দূর হলো মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাত ধরে। পার্থ স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ১৪০ রানে গুটিয়ে ১৩৯ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে তারা। আনন্দ-উল্লাসে সিরিজজুড়ে গ্যালারি মাতিয়ে রাখা প্রবাসী সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি বাবর-রিজওয়ানরা।
দুই দশকের বেশি সময় পর এবার শোয়েবের ভূমিকায় যেন হারিস রউফ। তিনিও শেষ দুই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে দলের সিরিজ জয়ের নায়ক। সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে ম্যাথু শর্ট ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে রউফই জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার স্বীকৃতিও পেয়েছেন পাকিস্তানের গতিময় পেসার। দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচানোর দিনে আরো একবার পাকিস্তানের জয়ের মঞ্চ সাজিয়ে দিয়েছেন চার পেসার। রউফের ২ উইকেটের পাশাপাশি নাসিম শাহ ও আফ্রিদি নেন ৩টি করে উইকেট। আরেক পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনের শিকার ১টি। পঞ্চম বোলার ব্যবহারই করতে হয়নি রিজওয়ানকে। ঘরের মাঠে আরো একবার অতিথি পেসারদের তোপে পোড়ে ৩১.৫ ওভারে মাত্র ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পরে ১৩৯ বল বাকি থাকতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তান। এর আগে দ্বিতীয় ম্যাচে তারা জিতেছিল ১৪১ বল বাকি রেখে। সামনের বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রস্তুতি নিতে নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের পাশাপাশি শেষ ম্যাচটি খেলেননি স্টিভেন স্মিথ, জশ হেইজেলউড, মিচেল স্টার্ক ও মার্নাস লাবুশেন। আর পিতৃত্বকালীন ছুটির জন্য পুরো সিরিজেই ছিলেন না মিচেল মার্শ ও ট্রাভিস হেড। দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে লড়াই জমাতেই পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লেতে ড্রেসিং রুমে ফেরেন জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ও অ্যারন হার্ডি। দলের পঞ্চাশ হতে আউট হয়ে যান ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জশ ইংলিস। ১৪তম ওভারে এক প্রান্ত আগলে রাখা শর্টকে ফেরান রউফ। মাত্র ৭২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে কুপার কনোলির চোট।
হাসনাইনের বাউন্সার গ্লাভসে আঘাত করায় হাতের ব্যথায় ব্যাটিং চালিয়ে নিতে পারেননি তিনি। কনোলি উঠে যাওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে কিছুই করতে পারেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।