রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা থেকে বিরত আছে ভারত ও পাকিস্তান। ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই দেখার অন্যতম মূল ও প্রধান মঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছিল আইসিসির ইভেন্ট। এবার আইসিসি ইভেন্ট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাকিস্তানে, তবে নিজেদের জায়গায় অটুট থেকে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে চায় না ভারত। এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানায়, বিসিসিআই তাদের লিখিতভাবে পাকিস্তানে গিয়ে না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এশিয়া কাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও হাইব্রিড মডেলে আয়োজনের মত দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
এই সিদ্ধান্তে একদম নাখোশ পিসিবি। কোনো ভাবেই তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে রাজী নয়। দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররাও এই ব্যাপারে দিচ্ছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ প্রশ্ন তুলেন বাকি সবাই এলে ভারত কেন আসবে না, ‘অনেক হয়েছে। যখন সব দল পাকিস্তানে কোনো সমস্যা ছাড়া খেলতে রাজী হয়েছে, ভারতের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি রাজনৈতিক। এটা ক্রিকেটসহ সব খেলার জন্য অগণনযোগ্য।’ আরেক সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম উল হক বলেন, ‘তারা বড় মঞ্চে ক্রিকেটকে বঞ্চিত করছে। পাকিস্তানে ভারতীয় দলের উপর কোনো হুমকি নেই। এমনকি তারা সেরা আতিথেয়তা পেত।’
জাভেদ মিয়াঁদাদ বলছেন, আইসিসি সবচেয়ে বেশি আয় করে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে।
কাজেই পাকিস্তানের মতো এখানে সমান গুরুত্বপূর্ণ, ‘এটা একটা তামশা। (ভারতের পাকিস্তানে যেতে না চাওয়া)। এমনকি আমরা যদি ভারতের সঙ্গে না খেলি পাকিস্তান ক্রিকেট শুধু বেঁচে থাকবে না, এগিয়েও যাবে যেটা আগেও আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি আইসিসি ইভেন্টে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হলে কতটা আয় হয়। ২০০৮ সালে এশিয়া কাপ খেলতে সবশেষ পাকিস্তানে গিয়েছিল ভারতীয় দল। ২০০৯ সালে মুম্বাইতে বোমা হামলার পর দুই দেশের সম্পর্কে চরম অবনতি হয়ে যায়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ চালু থাকলেও এরপর দুদল কেবল বৈশ্বিক আসরেই মুখোমুখি হতো। ২০০৯ সালে পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কা দলের উপর হামলা হলে দেশটিতে বেশ কয়েক বছর কোনো দলই সফর করেনি। গত তিন-চার বছর ধরে আবার পাকিস্তানে সফরে যাচ্ছে সব দলই। তবে ভারত আগের অবস্থানে। পাকিস্তান অবশ্য গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে গিয়েছিল। এর আগে ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতেও প্রতিবেশী দেশে গিয়েছিলো তারা। পিসিবির আশা ছিলো ভারতও দল পাঠাবে। কিন্তু সেরকম ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসায় হতাশ তারা। আগামী ১১ নভেম্বর ভেন্যু ছাড়াই ঘোষণা হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি। ফেব্রুয়ারিতে ৮ দলের আসর হওয়ার কথা করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে। ভারত সিদ্ধান্ত বদল না করলে টুর্নামেন্টটি কীভাবে আয়োজিত হবে তা এখনো অজানা।