আস্তে আস্তে জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা বিদায় নিচ্ছেন। কিন্তু তাদের শূন্যতার পুরণ হচ্ছে না। ১৯ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা ফরহাদ হোসেন জাতীয় লিগের চলতি মৌসুমে খেলে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইমরুল কায়েসও লংগার ভার্সন ক্রিকেট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও এখন আর খেলছেন না। মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল কিংবা মাহমুদউল্লাহদের নিয়ে যতোই সমালোচনা থাকুক না কেন, তাদের বিকল্পও কেউ হতে পারেননি। নির্বাচক প্যানেলের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক এই বাস্তবতা স্বীকার করে নিলেন।
গতকাল বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাবেক এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘যদি কোনো ক্রিকেটার ১৫-২০ বছর ক্রিকেট খেলে চলে যায়, তখন সঙ্গে সঙ্গে ওই ক্রিকেটারের বিকল্প পাওয়া একটু মুশকিল। এটা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মনে করি। তারপরও আমাদের দেশে যারা তরুণ ক্রিকেটার আছে। আমি খুব আশাবাদী তাদের নিয়ে। এখান থেকে গেলে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করতে হবে। ওই লেভেলটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে আরেকটু সময় লাগবে ওদের।’
চলমান জাতীয় লিগ শেষে আগামী মাসের ১১ তারিখে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় লিগ মাঠে গড়াবে। বিপিএলের আগে এই টুর্নামেন্ট খেলে ক্রিকেটাররা ভালো প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পাবেন। এই দল নিয়ে ধারণা দিলেন রাজ্জাক, ‘জাতীয় লিগের চারদিনের ম্যাচ ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দল হয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে না। চারদিনের ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারদের বেশির ভাগই থাকবে। অল্প কিছু ক্রিকেটার হয়তো থাকবে না। আমাদের তো এমনিতেও খুব বেশি ক্রিকেটার নেই। আটটা দল থাকবে। একেক দলে ১৫ জনের সদস্য থাকবে। এই লিগে আমাদের তরুণ ক্রিকেটারদের দেখার একটা সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে।’
রাজশাহী বিভাগে চারদিনের ম্যাচে জাতীয় লিগে খেলার সুযোগ পাননি জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। এই ক্রিকেটারের বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘বিভাগের কোচ ম্যানেজার আমাদের কাছে চারদিনের ম্যাচের জন্য সাব্বিরকে চায়নি। তবে আমার বিশ্বাস সাব্বির টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পাবে।’
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা বড় একটা একটা সমস্যা। জাতীয় লিগকে আমাদের ক্রিকেটের আঁতুর ঘর বলা হয়। এনসিএল দিয়ে দলের ঘাটতি পূরণ করতে হয়। জাতীয় লিগকে ঐ মানদ-ে নেয়া যাচ্ছে না। জাতীয় লিগে একটা ক্রিকেটার ১০০ করে জাতীয় দলে ১০ রান করছে। এই গ্যাপটা কেন হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাক বলেছেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে আমি মেনে নিচ্ছি, আবার কিছু ক্ষেত্রে এটা মানবো না। জাতীয় লিগে খেলা, কাউন্টি খেলা, অস্ট্রেলিয়া ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলা আর টেস্ট ম্যাচ আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কখনই এক হবে না। আমাদের দেশের টেস্টের মানদ-ে নেয়া তো সম্ভব না। কাছাকাছি হয়তো নেয়া যাবে। বেশ কয়েকবছর আমাদের উইকেটের বেশ উন্নতি হয়েছে। যারা মাঠে যায় তারা হয়তো দেখছেন। বলও পরিবর্তন করা হয়েছে। কীভাবে ডিফিকাল্টি ফেস করতে হয় এটা দেখা যায়। একটু একটু করে হলেও যেন আগাচ্ছে ব্যাপারটা।’