দুজনেরই টেস্ট অভিষেক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। মর্যাদার টেস্ট ক্যাম্প মিলেছিল ঘরের মাঠে। কিন্তু তেমন বলার মতো কিছুই করতে পারেননি। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের প্রথম টেস্টের অভিজ্ঞতা একেবারে বাজে ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। বিপরীতে জাকের আলির শুরুটা হয়েছে আনন্দের সঙ্গে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গেই মিরপুরে নিজের অভিষেক টেস্ট ফিফটি পেয়েছেন। অবশ্য ব্যক্তিগত আনন্দের রেশ ছড়িয়ে যেতে পারেনি দলে। ওই টেস্টে ৭ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। একটি করে টেস্টের স্মৃতি পেছনে রেখে দুজনেই উইন্ডিজে নতুন অভিযানে নামছেন। দুদিন পরই অ্যান্টিগায় বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টেস্ট। অ্যাওয়ে সিরিজে কেমন করবে সেটা বিরাট প্রশ্নের।
বলা হচ্ছে, জাকের আলী অনিক এবং মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের কথা। যুব ক্রিকেট, ঘরোয়া ক্রিকেটের পাট চুকিয়ে বেশ ভালোভাবেই তারা জাতীয় দলে ঢুকেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকায় জাকেরের অভিষেক হয়েছিল। প্রথম ইনিংসে ২ রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি তুলে (৫৮) মান রক্ষা হয় তার। দ্বিতীয় টেস্ট তার খেলা হয়নি অনুশীলনে মাথায় আঘাত পেয়েছিল বলে। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন তখন ছিলেন কক্সবাজারে জাতীয় ক্রিকেট লিগ খেলায় ব্যস্ত। তাকে হুট করে ডেকে নেয়া হয়। করানো হয় অভিষেকও। চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ০ রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ২৯ রান।
এবার দুজনকেই একসঙ্গে উড়িয়ে নেয়া হয়েছে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে যে কোনো একজনের সুযোগ মিলতে পারে। কে খেলবে সেটা নিয়ে জল্পনা কল্পনা রয়েছে। তবে দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদেরকে প্রমাণ করেছেন তারা। রান পেয়েছেন দুজনই। ছয়ে নেমে জাকের ৪৮ রানের ইনিংস। সাতে মাহিদুলের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। পঞ্চম উইকেটে দুজনের জুটি ৮১ রানের। স্বেচ্ছায় অবসর নেয়ার পর তাদের আর ব্যাটিংয়ের সুযোগ হয়নি। দুজনের ইনিংসই ছিল আঁটসাঁট। চার-ছক্কায় সাজানো। দৃঢ় প্রত্যয়ী।
বিসিবির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে মাহিদুল নিজের ইনিংস নিয়ে কথা বলেন জাকেরের সঙ্গে, ‘এখানের কন্ডিশন আমাদের জন্য নতুন। আমার পরিকল্পনা ছিল উইকেট কেমন আচরণ করে, সেটা সম্পর্কে জানা। উইকেট যখন বুঝতে পেরেছি, তখন সেই অনুযায়ী খেলা শুরু করেছি। উইকেট একটু স্লো ছিল। আমরা দুজনই ভালো জুটি করতে পেরেছিলাম। আমার মনে হয়, এখানে পরিকল্পনা করে খেলা, পরিস্থিতি যা চায় সে অনুযায়ী (খেলতে হবে), এখানে বেশি সুইং থাকে, এর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি ছিল, সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।’ একাদশে যে-ই থাকুক তাকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা দ্রত গতির অ্যান্টিগার উইকেটে বাংলাদেশ যে দুই টেস্ট খেলেছে দুইবারই নাকানিচুবানি খেয়েছে। ২০১৮ সালে ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল এখানেই। সেই ম্যাচে ১৪৪ রানের বিব্রতকর দলীয় ইনিংসও আছে। ২০২২ সালেও পারফরম্যান্সে পরিবর্তন আসেনি। দুই ইনিংসে বাংলাদেশের রান যথাক্রমে ১০৩ ও ২৪৫। এবার জাকের, মাহিদুলদের জন্য কী অপেক্ষা করছে তা সময়ই বলে দেবে।