মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, বাংলাদেশের এই ভারোত্তোলকের নাম শুনলেই চোখে সামনে ভেসে উঠে সেই হৃদয়গ্রাহী দৃশ্যে। ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এসএ গেমসের পদক বিতরণের সময় যখন জাতীয় সংগীত বাজছিল, তখন বিজয়মঞ্চে অঝোরে কেঁদেছিলেন স্বর্ণজয়ী এ ভারোত্তোলক। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়েছিল সে দৃশ্য। সেবার গুয়াহাটি সাউথ এশিয়ান গেমসে প্রথম স্বর্ণপদকটি জিতেছিলেন মাবিয়া। ২০১৯ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে ব্যাক টু ব্যাক দুটি স্বর্ণ জেতেন মাবিয়া। কেবল এসএ গেমসে নয়, দেশের ঘরোয়া আসরে নিয়মিত স্বর্ণ জিতে আসছেন।
গতকাল রোববার আন্তঃসার্ভিস জাতীয় ভারোত্তোলনে তিনটি নতুন রেকর্ড গড়ে স্বর্ণপদক জিতেছেন বাংলাদেশ আনসারের ভারোত্তোলক মাবিয়া। ৭১ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ল্যাচে ৮৫ কেজি তুলে নতুন জাতীয় রেকর্ড, ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১১ কেজি তুলে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন। এ ছাড়া দুটি মিলিয়ে মোট ১৯৬ কেজি তুলে আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন মাবিয়া। এই ইভেন্টে একই সংস্থার ফাহিমা আক্তার ময়না অনেক পিছিয়ে থেকে রুপা জেতেন। তিনি স্ল্যাচে ৫৫ কেজি, ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৭০ কেজিসহ মোট ১২৫ কেজি ওজন তোলেন। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট মাবিয়া আক্তারের কথা, ‘আমার খুব ভালো লাগছে তিনটি নতুন রেকর্ড গড়তে পারায়।
এখন আমার লক্ষ্য এসএ গেমসে আকেরটি স্বর্ণ জেতার। সেটা হলেই আমার ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্স হবে।’ সে লক্ষ্যে নিজেই নিজের অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন মাবিয়া, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো কোচ নেই। আমি নিজেই নিজের অনুশীলন পরখ করি এবং অধিক ভার তোলার চেষ্টা করে আজ এই পর্যন্ত এসেছি। লক্ষ্য পূরণে এই চেষ্টাই আমাকে কাজে দেবে।’ তবে এসএ গেমসের আগে আগে বাহরাইনে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেকে পরীক্ষা করতে পারছেন এই স্বর্ণকণ্যা। ৬-১৫ ডিসেম্বর রাজধানী মানামায় অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্নামেন্ট। এই প্রতিযোগিতায় মাবিয়া আক্তার লড়বেন ৭১ কেজি ওজন শ্রেণিতে।
এদিকে একই দিনে ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে তিনটি রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতেছেন সেনাবাহিনীর মারজিয়া আক্তার ইকরা। তিনি স্ল্যাচে ৭৬ কেজি, ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৯৪ কেজি এবং মোট ১৭০ কেজি তুলে এই তিনটি রেকর্ড গড়েন। ৫৯ কেজি ওজন শ্রেণিতে দুটি নতুন করেছেন সেনাবাহিনীর আরেক ভারোত্তোলক স্মৃতি আক্তার। স্ল্যাচে না পারলেও (৭৬ কেজি) ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১০৩ কেজিতে এবং মোট ১৭৯ কেজি তুলে দুটি নতুন রেকর্ড গড়েন তিনি।