বিজয়ের মঞ্চটা তৈরি করে দিয়েছিলেন বোলাররাই। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রাখেন তারা। এরপর জাওয়াদ আবরার ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের ব্যাটে লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোনো সমস্যা হয়নি যুবা টাইগারদের। গতকাল রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেপালকে ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। ১৪২ রানের লক্ষ্য ১২৮ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে আজিজুল হাকিমের নেতৃত্বাধীন দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর এই জয়ে সেরা চারের টিকেট নিশ্চিত করে ফেলল বাংলাদেশের যুবারা। ‘বি’ গ্রুপে সমান দুটি ম্যাচ জিতেছে শ্রীলঙ্কাও। প্রথম দুই ম্যাচেই হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল নেপাল ও আফগানিস্তানের।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে যুব ওয়ানডে অভিষেকে রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি করা আজিজুল এবার খেলেন ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস। তবে ৫৯ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ওপেনার জাওয়াদ আবরার। এই ম্যাচটির অবশ্য যুব ওয়ানডে স্বীকৃতি নেই। দুবাইয়ে বাংলাদেশকে জয়ের মঞ্চ সাজিয়ে দেন পেসাররা। আল ফাহাদ, ইকবাল হোসেন, সাদ ইসলাম ও রিজান হোসেন মিলে নেন ৭ উইকেট। তাদের ক্ষুরধার বোলিংয়ে নেপালের প্রথম আট ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন শুধু দুজন। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই উইকেট হারায় নেপাল। একশ রানের আগে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান সাত ব্যাটসম্যান। একপ্রান্ত আগলে রেখে ২৪ ওভার পর্যন্ত খেলেন ওপেনার আকাশ ত্রিপাঠি। তার ব্যাট থেকে আসে ৫ চারে ৭৭ বলে ৪৩ রান। এ ছাড়া ছয় নম্বরে নেমে কিপার-ব্যাটার উত্তাম রাঙ্গু থাপা মাগার ৬৯ বলে করেন ২৯ রান। অষ্টম উইকেট জুটিতে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৬ রান যোগ করেন মাগার ও আভিশেক তিওয়ারি। মাগার রান আউট হলে ভাঙে এই জুটি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া তিওয়ারি ১ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ বলে করেন ২৯ রান। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ফাহাদ, ইকবাল ও রিজান। রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন আগের ম্যাচে ফিফটি করা কালাম সিদ্দিকি এলিন। তবে দলকে চাপে পড়তে দেননি জাওয়াদ ও আজিজুল। দ্বিতীয় উইকেটে ১০৯ বলে ৯০ রান যোগ করেন দুজন। আজিজুল রয়েসয়ে খেললেও নেপালের বোলারদের তুলাধুনা করেন জাওয়াদ। পঞ্চম ওভারে হেমান্ত ধামির বলে ছক্কার পর চার মারেন জাওয়াদ। ধামির পরের ওভারে দুটি চার মারেন তিনি। নবম ওভারে আভিশেক তিওয়ারির বল তিনি ছক্কায় ওড়ান। ৪ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ফিফটি করতে জাওয়াদ খেলেন ৫৩ বল। শেষ পর্যন্ত ৬৫ বলের ইনিংসে ৫ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মারেন জাওয়াদ। তার বিদায়ের পরের বলেই আউট হন শিহাব জেমস। পরে ফরিদ হাসানকে নিয়ে ৫২ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন আজিজুল। জয় থেকে ৮ রান দূরে থাকতে ইউভরাজ খাত্রির বলে বোল্ড হন ৩১ বলে ১৩ রান করা ফরিদ। পরের বলে এলবিডব্লিউ রিজান। তবে নেপালকে নাটকীয় কিছু করতে দেননি আজিজুল। ৭০ বলে ফিফটি ছুঁয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৭১ বলের ইনিংসে ২ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। মঙ্গলবার এই মাঠেই গ্রুপ সেরা হওয়ার অভিযানে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।