নিরবেই চলে গেলেন স্বর্ণজয়ী শুটার সাদিয়া
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী শুটার সৈয়দা সাদিয়া সুলতানা। প্রায় এক যুগ ধরে অনেকটা অন্তরালে ছিলেন দেশের অন্যতম সেরা এ শুটার। ২০১৭ সালে আগুনে পুড়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন চট্টগ্রামের এই শুটার। অবশেষে নিরবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি। গতকাল সোমবার বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দেন তিনি। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন সাদিয়া। এই শুটারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন আরেক শুটার শারমিন রত্না। তিনি বলেন, ‘সকালে অসুস্থ হওয়ার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে আইসিউইতে নেয়া হয়েছিল। দুপুরের দিকে মারা গেছেন। তার দুই পুত্রসন্তান আছে।’ শুটিং ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মুশতাক বলেন, ‘আমরাও শুনেছি চট্টগ্রামে আত্মহত?্যা করেছে। ও চট্টগ্রামেই থাকত। বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। আমরা ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে ও মানসিকভাবে সাহায?্য করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন একটি দুঃসংবাদ আমাদের শুনতে হলো।’
এদিকে মেয়ের লাশ হাসপাতাল থেকে বের করার মুহূর্তে বাবা আব্দুস সাত্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানিয়েছেন, ‘আমার সাদিয়া আর নেই। দুপুর ২টার দিকে সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে। আমরা এখন ওর লাশ হাসপাতাল থেকে বের করছি।’ সাদিয়ার শুটিং ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্যময়। ২০১০ সালের কমনওয়েলথ শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে সোনা জিতেছিলেন। দলগত ইভেন্টে দিল্লির আসর থেকে শারমিন আক্তার রত্নার সঙ্গে জুটি গড়েও জেতেন সোনা। তার আগে ওই বছরই এসএ গেমসে একই ইভেন্টে জেতেন সোনার পদক। সবশেষ ২০১৩ সালে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল থেকে সাফল্য পান বাংলাদেশ গেমসে। এরপর থেকেই শুটিংয়ের বাইরে রয়েছেন তিনি। গত ১১ বছর বলতে গেলে একেবারে আড়ালেই ছিলেন খেলার দুনিয়া থেকে। সাত বছর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সাদিয়া অসুস্থ। যদিও আর কখনো শুটিংয়ে ফেরেননি। একেবারে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কারণটা রহস্যই থেকে গেছে! ক্রীড়া পরিবারের সদস্য ছিলেন সাদিয়া সুলতানা। বাবা সৈয়দ সরোয়ার আলম খেলাধুলার সাথে জড়িত। চট্টগ্রামের পরিচিত ক্রীড়া সংগঠক। তার তিন ভাই ও দুই বোন। তিন ভাই সাজ্জাদ হোসেন, সিবগাত উল্লাহ, সিফাত উল্লাহ গালিব জাতীয় শাটলার। তার ছোট বোন সৈয়দা শায়েমা সুলতানা শুটিংয়ে জাতীয় পর্যায়ে পদক জিতেছেন।