২৭ বলে ফিফটি হাঁকিয়ে তামিমের বার্তা

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারিতে দুর্দান্ত টাইমিং, দাপট-কর্তৃত্ব-সৌন্দর্য সবই মিশে থাকলো সেই কাভার ড্রাইভে। ইনিংসের শুরুতে নান্দনিক সেই শটেই যেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলেন তামিম ইকবাল। পরের ১০ ওভারে নিজের সেরা সময়ের ঝলক দেখালেন চট্টগ্রাম বিভাগের এ ক্রিকেটার। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান উপহার দিলেন আগ্রাসী এক ফিফটি। সিলেটে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টিতে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ৩৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। তার ইনিংসে চার ছিল ৮টি, ছক্কা ৩টি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার পঞ্চাশতম ফিফটি এটি। ফিফটির ফিফটির সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি সেঞ্চুরি তো আছেই। এই টুর্নামেন্ট দিয়েই সাত মাস পর মাঠের ক্রিকেটে ফিরেছেন তামিম। প্রথম ম্যাচে বুধবার রংপুর বিভাগের বিপক্ষে একটি ছক্কা ও চারে ১০ বলে ১৩ রান করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। তবে জ্বলে উঠলেন দ্বিতীয় ম্যাচেই। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে এই ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে চট্টগ্রাম। কুয়াশার কারণে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচ নেমে আসে ১৫ ওভারে।

দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন তামিম ও মাহমুদুল হাসান জয়। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে ৮০ রান আসে ৬.৫ ওভারেই। শুরুটা করেন জয়। প্রথম ওভারেই অফ স্পিনার নাঈম আহমেদের বলে ছক্কা ও চার মারেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে ওই কাভার ড্রাইভে তামিম পান প্রথম বাউন্ডারির দেখা। শুরুতে কিছুটা এগিয়ে যান জয়। তৃতীয় ওভারে অভিজ্ঞ পেসার আবু জায়েদ চৌধুরিকে এক ছক্কা ও দুই চার মারেন তিনি। তবে তামিমও পিছিয়ে থাকেননি খুব বেশি সময়। চতুর্থ ওভারে তিনি তিনটি বাউন্ডারি মারেন ইবাদত হোসেন চৌধুরির বলে। প্রথম দুটি স্ট্রেট ড্রাইভে, পরেরটি কাভার ড্রাইভে। এরপর জয়কে একরকম দর্শক বানিয়ে তামিম ছুটতে থাকেন দারুণ গতিতে। আবু জায়েদের পরের ওভারে মারেন টানা দুটি চার। পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে ৬১ রান তোলে চট্টগ্রাম। পাওয়ার প্লে শেষেও অফ স্পিনার নাঈমকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন তামিম। পরের ওভারে ইবাদত ফিরিয়ে দেন জয়কে (১৭ বলে ২৯)। অষ্টম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার মাহফিজুর রহমান রাব্বির বলে পুল করে চার মেরে তামিম পঞ্চাশে পা রাখন ২৭ বলে। মাইলফলক উদযাপন করেন তিনি পরের দুই বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে টানা দুটি ছক্কা মেরে। একটু পর থেমে যায় তামিমের ঝড়। আউট হয়ে যান তিনি পেসার তোফায়েল আহমেদকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায়। লং অফ থেকে বাঁদিকে সরে দারুণ ক্যাচ নেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এমন দুর্দান্ত শুরুর পরও অবশ্য শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিং করতে পারেনি চট্টগ্রাম। তামিমের বিদায়ের পর ভেঙে পড়ে তাদের ইনিংস। ৮ ওভার শেষে যে দলের রান ছিল ১ উইকেটে ৯৮, তারা শেষ পর্যন্ত ১৫ ওভারে তোলে ৯ উইকেটে ১৪৫ রান। দুর্দান্ত এই ইনিংস খেলার পর তামিম বলেন, ‘আমার জন্য সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। এ কারণেই আমি চাই যে চারটা-পাঁচটা ম্যাচ আমি খেলব। অনেকদিন বাইরে থাকলে অনেক কিছু মানিয়ে নিতে হয়। প্রথম ম্যাচে হয়নি, সেকেন্ড ম্যাচ মাশাআল্লাহ ভালো হলো। নেক্সট দুইটা ম্যাচ বা তিনটা ম্যাচ যাই খেলি আমি। আমার জন্য খেলার সময়টা গুরুত্বপূর্ণ, সবাই জানি সামনে বিপিএল, যেটা গুরুত্বপূর্ণ। এই টুর্নামেন্টও গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিন ফিফটি হাঁকিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে তামিম পৌঁছে গেছেন ৫০ ফিফটির ক্লাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘৫০ টা ৫০ ইটস এ বিগ থিং। যেটা বললাম যে আমার ক্যারিয়ারটা এখন যেমন একটা স্টেজে ভালো করা, আমার চেষ্টা যে টিমেই খেলি ভালো করা। দুইটা-তিনটা ম্যাচ ভালো করে শেষ করা। তারপর বিপিএলের জন্য প্রস্তুত হওয়া।’