দীর্ঘ সময় ধরেই রয়েছেন মাঠের বাইরে। মাঝে একবার ফিরলেও মাত্র দুই ম্যাচ খেলে ছিটকে গেছেন। হাঁটুর চোটে তার ক্যারিয়ারই পড়ে গিয়েছিল হুমকির মুখে। সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে ব্রাজিলের জার্সিতে মাঠে নামতে পারেননি। কবে ফিরবেন, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। তবে ফিরবেন, আবারো খেলবেন, এমন প্রত্যাশা তো নেইমার ভক্তদের আছেই। সেই ভক্তদের জন্য এবার সুখবর দিয়েছেন এই ফরোয়ার্ড। ফিরেছেন অনুশীলনে। একই সঙ্গে ব্রাজিলের জার্সিতে ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নের কথাও জানিয়েছেন আল হিলাল তারকা।
নেইমার এমন সময় বিশ্বকাপ খেলার কথা বলছেন, যখন কিনা ব্রাজিলের জার্সিতে ১৪ ম্যাচ মাঠের বাইরে তিনি। তবে তার মানের খেলোয়াড়ের জন্য যে কোনো কোচই আশায় থাকবেন। ব্রাজিলের বর্তমান কোচ দোরিভাল জুনিয়রও নেইমারের ফেরার অপেক্ষায় আছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ব্রাজিলের হয়ে খেলার সময় হাঁটুতে চোট পান নেইমার। যেতে হয় ছুরি-কাঁচির নিচে। দীর্ঘ সময় পর মাঠে ফিরলেও সেটা স্থায়ী হয়নি। আল হিলালের হয়ে খেলার সময় আবার পড়েন ইনজুরিতে। ওই চোট কাটিয়ে জানুয়ারিতে মাঠে ফেরার অপেক্ষায় সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। এখন পুরোদমে অনুশীলন করছেন। নিজের অনুশীলেন ছবি পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে। যেটির ক্যাপশন করেছেন এভাবে, ‘বড়দিনের আগে শেষ অনুশীলনে সেশনটা দারুণ কাটল। কয়েকটা দিন অনুশীলন করলাম, তবে ভালো হয়েছে।’ অনুশীলনে ফেরা নেইমারের নতুন বছরে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে নিজের সেরাটা নিংড়ে দেয়ার প্রত্যাশা। আল হিলালের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ ও ব্রাজিলের হয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ টার্গেট করছেন। ফরাসি সংবাদ মাধ্যম আরএমসি স্পোর্টসকে নেইমার বলেছেন, ‘আল হিলালের হয়ে ভালো একটি মৌসুম কাটাতে চাই। মারাত্মক একটি ইনজুরি কাটিয়ে ফিরছি। অবশ্য নিজের সেরা অবস্থানে যেতে আমার আরো কিছুটা সময় দরকার। তবে আমার লক্ষ্য হলো, আল হিলালের হয়ে ২০২৫ সালের ক্লাব বিশ্বকাপ খেলা। কারণ এই প্রতিযোগিতাটি ক্লাবের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’ ক্লাব ফুটবলে ভালো পারফর্ম করে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে তৈরি করার লক্ষ্য নেইমারের। জাতীয় দল প্রসঙ্গে এই তারকা ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ অবশ্যই সব খেলোয়াড়ের লক্ষ্য থাকে। আমি তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছি, চতুর্থটাও খেলতে চাই। আমার চোখ ওদিকে আছে। এ জন্য এখানে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
হলুদ জার্সিতে নেইমারই এখন সর্বোচ্চ গোলদাতা। গত বছর সেপ্টেম্বরে কিংবদন্তি পেলেকে পেছনে ফেলেছেন নেইমার। জাতীয় দলের হয়ে ৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল করেছিলেন পেলে। তবে নেইমারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল শৈশবের সেই ছোট্ট নেইমার এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন কি না। ‘শৈশবে যত স্বপ্ন দেখেছি, সব এরই মধ্যে ছাড়িয়ে গিয়েছি। ছোটবেলায় সান্তোস ও ব্রাজিলের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা আমাকে আরো বেশি দিয়েছেন। ক্যারিয়ার নিয়ে আমি খুশি, অনেক বড় বড় ক্লাবে খেলেছি। আর এখন ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা। এই অর্জনে আমি খুব খুশি। আমার সন্তানেরা জানবে, আমার দেশের ইতিহাসে আমি গুরুত্বপূর্ণ ছিলাম।’ আগামী বছর ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আছে ব্রাজিলের। এই ম্যাচ দিয়েই দলে ফেরার অপেক্ষা করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নেইমার বলেন, ‘অবশ্যই, আমি ফিরবো। সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছি। আমাকে এবারই ডাকতে পারতো। কিন্তু কোচের সঙ্গে কথা বলার পর বুঝেছি, তিনি না ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু পরের বার আমি অবশ্যই সতীর্থদের সঙ্গে থাকবো। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার চেয়ে ভালো আর কিছুই হয় না। আশা করি দল আরো উন্নতি করবে।’