বিশ্ব আসরে স্বর্ণপদক জিতে চলেছেন দুই সন্তানের জননী জামিলা খাতুন। এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকাণ্ডতিন মহাদেশেই জিতেছেন পদক। যা বিশ্বে খুবই বিরল। ক্যারিয়ারে সাফল্যের নিরিখে এখন গিনেজ রেকর্ড বুকে নাম লেখাতে চান লাল সবুজের এই মার্শাল আর্ট কন্যা। তার কথায়, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও আমার সংস্থা বাংলাদেশ আনসার যদি সহযোগিতা করে তাহলে আমি গিনেজ বুক রেকর্ডের জন্য আবেদন করতে পারি।’ বাংলাদেশ জুজুৎসুর বিশ্বয়কর নক্ষত্র ঝিনুক। ৬ ভাই বোনের মধ্যে জামিলা খাতুন চতুর্থ। ছোট বেলা থেকেই ঝিনুকের মার্শাল আর্টের প্রতি ঝোক। ১৯৯০তে ক্যারিয়ার শুরু। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কবুতরখোলা গ্রামের মেয়ে জামিলার মাত্র ১৬ বছর বয়সে শুরু হয় জুডো-যাত্রা। কারাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তার মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ শুরু হলেও পরে তিনি জুডো, উশু, পেনচাক সিলাত ও জুজুৎসু প্রশিক্ষণ নিয়ে একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে স্বর্ণসহ বিভিন্ন পদক জেতেন। এ পর্যন্ত ৩৭ স্বর্ণ, ২৭ রুপা এবং ৩২টি ব্রোঞ্জপদক জিতেছেন। যার মধ্যে আনসারের হয়ে কারাতে, জুডো, উশু এবং কুস্তির জাতীয় আসরে জিতেছেন ২৮ স্বর্ণ, ১৫ রুপা এবং ১৮ ব্রোঞ্জ। নতুন এক মাইলফলকও অতিক্রম করেছেন জামিলা। জুজুৎসু ও পেননাচক সিলাতে তিন মহাদেশেই জিতেছেন পদক। ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়ান জুজুৎসুতে ঊর্ধ্ব ৭০ কেজি কন্টাক্ট ফাইটে ব্রোঞ্জ, সেপ্টেম্বরে আমেরিকার কলারোডাতে টি-৫ লিবার্টি চ্যালিস আন্তর্জাতিক পেনচাক সিলাত চ্যাম্পিয়নশিপে ঊর্ধ্ব ৭০ কেজি এবং ওপেন ক্যাটাগরিতে দুটি ব্রোঞ্জ জেতেন। নভেম্বরে গ্রিসের হেরাক্লিয়নে বিশ্ব জুজুৎসু চ্যাম্পিয়নশিপে ঊর্ধ্ব ৭০ কেজিতে স্বর্ণ জিতে আলোড়ন তোলেন দুই সন্তানের জননী জামিলা। বিশ্ব জুজুৎসুতে মেয়েদের র্যাকিংয়ে তৃতীয়স্থানে রয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘প্রেসিডেন্ট আনসার (সেবা) পদক’ জেতেন সংস্থাটির এই কোচ। জামিলার কথায়, ‘বয়স কিংবা ওজন আমার খেলায় কখনো বাধা হতে পারেনি। খেলে আমি আনন্দ পাই। তাই ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে চাই।’