মাত্র কয়েক দিন আগে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে খেলে এসেছে বাংলাদেশের তরুণীরা। ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে অল্পের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে মেয়েদের। একই ভেন্যুতে এবার আরো বড় মঞ্চে খেলবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ক্রিকেটাররা। মেয়েদের এশিয়া কাপে যা হয়নি, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তা করে দেখাতে চায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, তাদের ভয় না পেয়ে নিজেদের শক্তিতে বিশ্বাস রেখে, প্রক্রিয়ায় স্থির থেকে সাফল্য পেতে চায় টাইগ্রেসরা। গতকাল বুধবার নিজেদের অফিসিয়াল ফটোসেশনে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ক্রিকেটাররা। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বিশ্বকাপে ভালো কিছুর আশায় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার।
নতুন বছরের প্রথম দিনে মুখে হাসি নিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুরুতেই সুমাইয়া বলেন, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার।’ এরপর একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন স্মিত হাসি নিয়ে। যেখানে তার আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠেছিল গাঢ়ভাবে। নিজের দল, নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে কোনো ভয় নেই তাদের। ভয়ডরনহীন ক্রিকেট খেলার বার্তা দিয়েছেন। নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে সুমাইয়া বলেছেন, ‘আমরা সেভাবে কোনো পরিকল্পনা করিনি। ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলবো সেরকমই চিন্তা ভাবনা।’ নিজের দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক, ‘আমাদের দল অনেক ভালো। আমরা যদি নিজেদের কাজগুলো ঠিকঠাক করতে পারি তাহলে ভালো কিছু হবে। আমরা জানি আমাদের স্ট্রং জোন কি। সেগুলো নিয়ে ফাইট করলে দিন শেষে ভালো কিছু হবে।’
অফিসিয়াল ফটোসেশনে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদ। মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেই সাত সকালে মিরপুরে গিয়েছিলেন তিনি। বোর্ড সভাপতিকে পেয়ে খুশি মেয়েরাও, ‘উনারা আমাদের খেলাটা খেলতে বলেছেন। কোনো চাপ দেননি। উনি আসছেন আমরা খুব হ্যাপি। আমাদের সতীর্থরা সবাই হ্যাপি।’ এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপ হচ্ছে মালয়েশিয়ায়। ১৬ দলের টুর্নামেন্ট শুরু হবে ১৮ জানুয়ারি। ফাইনাল ২ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ পড়েছে ‘ডি’ গ্রুপে। সেখানে প্রতিপক্ষ আছে অস্ট্রেলিয়া, স্কটল্যান্ড ও নেপাল। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ তিনটি করে মোট ১২টি দল সুপার সিক্সে উঠবে। সুপার সিক্সে আবার ছয় দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। এ দুই গ্রুপের দুটি করে শীর্ষ দল সেমিফাইনালে উঠবে। ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ নেপালের বিপক্ষে। ২০ ও ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশ খেলবে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া থাকলেও সুমাইয়ার কোনো চাপ নেই। বরং মাঠে নামার আগে কথার লড়াইয়ে এগিয়ে গেলেন, ‘আমাদের প্রথম টার্গেট-অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ। আমরা মনে করি না যে, অস্ট্রেলিয়া হোক বা অন্য কেউ, ওরা ভয় পাবে যে আমরা বাংলাদেশের গ্রুপে পড়েছি।’ খুব কাছে গিয়েও অল্পের জন্য মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল হেরে হয় স্বপ্নভঙ্গ। কিছুদিন আগে সেই টুর্নামেন্টও হয়েছে মালয়েশিয়ায়। বিশ্বকাপও একই ভেন্যুতে হওয়ায় কিছুটা এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ, এমনটাই বলছেন সুমাইয়া, ‘যেহেতু আমরা মালয়েশিয়ায় খেলেছি ওই দিক থেকে একটু বেনিফিট দেবে।’ নিজেদের বোলিং ও ফিল্ডিং নিয়ে কোচ সারোয়ার ইসলাম আশাবাদী। ব্যাটিং নিয়ে তার দুশ্চিন্তা কাজ করছে বোঝা গেল কথায়, ‘দল বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে শীর্ষ পর্যায়ে থাকে। ব্যাটিংটায় অভিজ্ঞতা কম। যদিও তারা ভালো ব্যাটিং করে। ব্যাটিংটাকে একটু ইয়ে (পিছিয়ে) রাখছি। শেষ দুই মাস ভালো অনুশীলন করে দলকে একটা অবস্থানে নিতে পেরেছি। আমি আশাবাদী আমাদের দল ভালো করবে।’
প্রসঙ্গত, এই প্রতিযোগিতাতেও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত। গত বছর তারা ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবার বাংলাদেশ কতদূর যেতে পারে সেটাই দেখার।