খুলনা টাইগার্সের কাছে হেরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরে যাত্রা শুরু করেছিল চিটাগং কিংস। ব্যাটিংবান্ধব পিচে ব্যর্থতায় পরিচয় দিয়েছিল বন্দর নগরীর দলটির ব্যাটার। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠেছে তারা। দানবীয় ব্যাটিংয়ে চিটাগং কিংসকে বিশাল পুঁজি এনে দেন উসমান খান। করেন এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি। এরপর বাকি কাজ সারেন বোলাররা। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে দারুণ জয় পায় মোহাম্মদ মিঠুনের দল। যা আসরে দলটির প্রথম জয়। গতকাল শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএল দিনের প্রথম ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীকে ১০৫ রানে হারিয়েছে চিটাগং কিংস। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২১৯ রান তোলে তারা। জবাবে ১৭.১ ওভারে ১১৪ রান তুলে গুটিয়ে যায় এনামুল হক বিজয়ের দল।
২২০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করতে পারেনি রাজশাহী। প্রথম ওভারেই ওপেনার সাব্বির হোসেনকে হারায় তারা। অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়ও ব্যর্থ। তবে কিছুটা চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ হারিস। ১৩ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩২ রানের ইনিংস খেলে স্বদেশী মোহাম্মদ ওয়াসিমের শিকার হন তিনি। টপ অর্ডারের মতো ব্যর্থ মিডল অর্ডারও। ইয়াসির আলী (১৬), আকবর আলী (১৮) ও রায়ান বার্ল (১০) উইকেটে সেট হয়ে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ফলে পুঁজি একশ হওয়ার আগেই লেজ বেরিয়ে যায় দলটির। পারেননি লেজের ব্যাটাররাও লড়াই করতে। ফলে বড় ব্যবধানেই হারতে হয় রাজশাহীকে। চিটাগংয়ের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ১৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার আলিস আল ইসলাম। ২৩ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন আরাফাত সানিও। ২টি শিকার শরিফুল ইসলামের। তবে চিটাগংয়ের জয়ের মূল ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছিলেন উসমানই। যদিও আগের ম্যাচে সাত উইকেট তুলে নেয়া তাসকিন প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। খালি হাতেই ফেরান পারভেজ হোসেন ইমনকে। শুরুতে উইকেট হারালেও আক্রমণে কমতি ছিল না চিটাগংয়ের। যার নেতৃত্ব দেন উসমান। তাসকিনের পরের ওভারেই টানা দুটি বাউন্ডারি আদায় করে নেন। এর পরের ওভারে তো হাসান মুরাদকে মারেন টানা চারটি বাউন্ডারি। এর মধ্যে একটি ছক্কা।
পরের ওভারে মোহর শেখ অন্তরকেও তিনটি বাউন্ডারি মারেন উসমান। আর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পার্টিতে যোগ দেন গ্রাহাম ক্লার্ক। শফিউল ইসলামের করা সে ওভারে একটি ছক্কাসহ পাঁচটি বাউন্ডারিতে ২২ রান তুলে নেন তিনি। তাতে হুহু করতে বাড়তে থাকে পুঁজি। ৬৩ বলে ১২০ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। ক্লার্ককে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সোহাগ গাজী। ২৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪০ রান করেন ক্লার্ক। এরপর অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন উসমান। ৩১ বলে ৬৩ রানের আরো একটি জুটি গড়েন তারা। ১৫ বলে সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৮ রান করে রায়ান বার্লের শিকার হন মিঠুন। তবে এক প্রান্ত আগলে এগিয়ে যেতে থাকেন উসমান। ১৯তম ওভারে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে খেলেন ১২৩ রানের ইনিংস। ৬২ বলের ইনিংসটি সাজান ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কায়। ৮ বলে ১৯ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন হায়দার আলী। তাতে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি মিলে চিটাগংয়ের।