ঢাকা ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় দলের হয়ে আমার খেলা শেষ

শহীদ আফ্রিদিকে তামিম ইকবাল
জাতীয় দলের হয়ে আমার খেলা শেষ

নিজ নিজ দেশের ক্রিকেটে তারা সবাই তারকা। কেউ এখনো খেলছেন, কেউ বিরতিতে আছেন, আবার কেউ অবসরে চলে গেছেন। তিন দেশের এ তিন তারকার সাক্ষাৎ হওয়ার উপলক্ষ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। বলছি পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি, আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী ও বাংলাদেশের তামিম ইকবালের কথা। রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে নানা বিষয়ে খুনসুটিতে মেতে উঠেছিলেন তারা। পাকিস্তানি সাবেক অলরাউন্ডার আফ্রিদি নিয়মিত ব্লগিং করে থাকেন। এবার বাংলাদেশে এসেও করলেন তেমনই এক ব্লগ। যেখানে তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ নবীর অবসর, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের খাবারের তুলনা, রাজনীতি নিয়ে আফ্রিদির আগ্রহ এবং আরো নানা বিষয় উঠে এসেছে। বিপিএল এবার আফ্রিদি এসেছেন চিটাগং কিংসের মেন্টর হয়ে। দলটির দুটি খেলা মাঠে বসে দেখেছেন তিনি। গত শুক্রবার রাতে তার ইউটিউব পেইজে ৮ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। যেখানে তামিম, নবী ও আফ্রিদির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ফুটে উঠে গাঢ়ভাবে। সঙ্গে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের খাবার নিয়েও চলে আলোচনা। শুরুতে আফ্রিদি নিজের রুম থেকে লিফটে যাওয়ার পথে বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশ হিসেবে এখন আমি ঢাকায়। আজ একজন খেলোয়াড় তার রুমে খাবার খেতে আমাকে দাওয়াত করেছে। চলুন একসঙ্গেই যাই।’ আফ্রিদি যাচ্ছিলেন আফগানিস্তান ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবীর রুমে। সেখানে যাওয়ার পথে তার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তামিম ইকবালের। তামিমের রুমের দরজা তখন খোলা ছিল। তামিমকে দেখে দাঁড়িয়ে আফ্রিদি বলেন, ‘আরো একজন বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল।’ তামিমের রুমে তখন ছিলেন বোর্ড ডিরেক্টর ফাহিম সিনহা। তামিম তাকে আফ্রিদির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আফ্রিদি বলে ওঠেন, ‘মাশাআল্লাহ আপনাদের অধীনে বাংলাদেশ দল পাকিস্তানে ভালো করেছে। বাংলাদেশে যখনই কাজ করার সুযোগ হবে আমি নিশ্চিতভাবেই যে কোনো সময় এগিয়ে আসবো।’

এরপর নবীর রুমে যান আফ্রিদি। গিয়ে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়ে বলেন, ‘নবী হচ্ছেন আফগানিস্তানের ক্রিকেটের দূত। যার কারণে আফগানিস্তান ক্রিকেটের পরিচিতি পেয়েছে। যার অবদান বলে শেষ করা যাবে না।’ এরপর তারা ডিনারে বসেন। কিছুক্ষণ পরই তামিম নবীর রুমে আসেন। আফ্রিদি তাকে ডিনারের কথা বললেও তামিম আগেভাগেই খেয়ে নিয়েছেন বলে জানান। আফ্রিদি এরপর তার জামাতা শহীন শাহ আফ্রিদিকে ডেকে আনতে বলেন। শাহীন আফ্রিদি কিছুক্ষণ পর আসলে তার খোঁজখবর নেন। তাকেও ডিনারের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু পাকিস্তানের পেসার দুপুরেই পেট ভরে খেয়ে নিয়েছেন বলে জানান।

এরপর খাবার গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে চলে তারকা ক্রিকেটারদের আড্ডা। নবীর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কোন অবস্থায় আছে জানতে চান আফ্রিদি। উত্তরে নবী বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়াবো সেরকমই বলেছি।’ আফ্রিদি বলে উঠেন, ‘কেন? এখনো তো তুমি তরুণ। জিমণ্ডটিম করছো।’ এরপর আফ্রিদি তামিমকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তামিম তুমি কি পুরোপুরি অবসরে চলে গেছ? তামিম উত্তর দেন, ‘জাতীয় দলের হয়ে শেষ।’ তাদের আড্ডা এগিয়ে যায়। কথা উঠে নানা প্রসঙ্গে। তামিম এক পর্যায়ে আফ্রিদিকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার কি রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা আছে?’ আফ্রিদি মশকরা করে উত্তর দেন, ‘তোমাদের (বাংলাদেশের) অবস্থা দেখেছি। আর কোনো ইচ্ছে নেই।’ তখন হাসির রোল পড়ে যায় পুরো রুমে।

এরপর বিরিয়ানি নিয়ে কথা উঠে। আফ্রিদি তামিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কবে খাওয়াবে তোমাদের বিরিয়ানি।’ তামিম উত্তর দেন, ‘আপনি কবে খেতে চান। আচ্ছা, আপনি যখন দ্বিতীয়বার ঢাকায় আসবেন তখন আমাদের সেরা কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়াব।’ তামিম বলতে থাকেন, ‘আপনাদের কাচ্চি খাওয়াবো। আপনারা সব সময় বলেন করাচির বিরিয়ানি সেরা। কিন্তু বাংলাদেশের কাচ্চি খাওয়ার পর আপনাদের বলতে হবে কোনটা সেরা।’ আফ্রিদি বোঝাতে চান, ‘তামিম করাচির বিরিয়ানি আসলেও মজার।’ তামিম ছেড়ে কথা বলেন না, ‘আগে আমাদের কাচ্চিটা খেয়ে নেন না।’ ভিডিও শেষ হয় আফ্রিদির ভালোবাসায় বার্তায়, ‘খেলার মাঠে আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ। কিন্তু এর বাইরে আমরা ভালো বন্ধু, ভাই। এই সম্পর্কটা অটুট থাকুক।’

পাকিস্তানের মাটিতে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্দা উঠবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। ভারতের ম্যাচগুলো হবে হাইব্রিড মডেলে, দুবাইয়ের মাটিতে। ২০ ফেব্রুয়ারি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘এ’ তে বাংলাদেশের সঙ্গী ভারত, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত