ঢাকা ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আবাহনী-মোহামেডান আরেকটি দ্বৈরথ আজ

আবাহনী-মোহামেডান আরেকটি দ্বৈরথ আজ

একটা সময় ছিল যখন আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল বললেই পুরো দেশ দু ভাগে ভাগ হয়ে যেতো। মাঠে এবং মাঠের বাইরে চলত সমান লড়াই। দুদলের সাফল্যের মূল নিয়ামক ছিল মর্যাদাপূর্ণ এই লড়াইয়ের ফলাফল। কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান অবস্থা। এমনকি এই দুই দলের খেলাকে কেন্দ্র করে খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে গেছে। তবে দিন বদলেছে অনেক। আশির দশকের সেই আবহ আর নেই। উভয় দলই তাদের অতিত ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। তবুও প্রতিবছর আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ হয়। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমে দ্বিতীয়বার মুখোমুখি হচ্ছে ঘরোয়া ফুটবলের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। ফেডারেশন কাপ ফুটবলের গ্রুপ ‘বি’ এর ম্যাচে একে অপরের বিপক্ষে মাঠে নামছে তারা।

আজ কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বেলা পৌনে ৩টায় শুরু হবে মর্যার এ লড়াই। একই দিনে একই সময়ে ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী খেলবে ফকিরেরপুল ইয়ংম্যান্স ক্লাবের বিপক্ষে।

কুমিল্লার এই ভেন্যুতেই মৌসুমের প্রথম মর্যাদার লড়াইটিতে মোহামেডানের কাছে হার মেনেছিল ঢাকা আবাহনী। দুই দলেরই হোম ভেন্যু কুমিল্লার এই শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে গত বছর ১৪ ডিসেম্বর হয়েছিল দুই চীরপ্রতিদ্বন্দীর মৌসুমের প্রথম সাক্ষাৎ।

দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ সেই ম্যাচ দেখতে কুমিল্লা স্টেডিয়ামে সেদিন দর্শকের ঢল নেমেছিল। পুরো ম্যাচ জুড়ে দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ লড়াইয়ে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে (৪৫+২) মিনিটে গোল করে ব্যবধান গড়ে দিয়েছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক মালীর ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে। ১-০ গোলে ম্যাচটা জিতে নিয়েছিল মোহামেডান। সেই হারের স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেনি আবাহনী। একমাসের ও কম সময়ের ব্যবধানেই আবারো তাদের সামনে সাদা-কালোরা। আজ তাই আকাশী-নীলদের সামনে মোহামেডানের বিপক্ষে মধুর প্রতিশোধের সুযোগ।

তবে সেই সুযোগটি কি কাজে লাগাতে পারবে আবাহনী? গত কয়েক মৌসুমে দুই দলের লড়াইয়ে কিন্তু ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামতো আবাহনীই। তবে এবার হয়েছে উল্টোটা। কারণ এবার আবাহনী দল গড়েছে বিদেশি ফুটবলার ছাড়া। শুনতে খারাপ লাগলেও দেশের ফুটবলে একটা কথা প্রচলিত ‘বিদেশীরাই পার্থক্য গড়ে দেন ম্যাচে’। যদিও স্থানীয় ফুটবলার নিয়েই বেশ ভালো পারফরম্যান্সই করছিল আবাহনী। তবে এরই মধ্যে তাদের অন্যতম স্ট্রাইকার সুমন রেজা ইনজুরিতে পড়ায় কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। লিগের পারফরম্যান্সের বিচারে অবশ্য আবাহনী থেকে এগিয়ে মোহামেডান। ৬ ম্যাচের সব কটিতে জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে সাদা-কালোরা। এখন পর্যন্ত এবারের লিগের একমাত্র অপরাজিত দল তারাই।

অন্যদিকে আবাহনী ৬ ম্যাচের ৪টিতে জিতেছে,একটিতে ড্র করেছে,লিগে তাদের একমাত্র হারটি মোহামেডানের বিপক্ষে। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা টেবিলের তৃতীয় স্থানে। এই মাঠে প্রথম ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে জয়, লিগের সার্বিক পারফরম্যন্সের হিসেবে আজকের ম্যাচে ফেবারিট মোহামেডানই। ফেডারেশনকাপে অবশ্য দুই দলের সমান পয়েন্টই। তবে আবাহনীর থেকে এক ম্যাচ বেশি খেলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গোল গড়ে এগিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে মোহামেডান।

তাদের পরেই আবাহনীর অবস্থান। নিজেদের প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জের কাছে ১-০ গোলের হারে শুরু করলেও পরের ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে স্বরুপে ফিরেছে আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। অন্যদিকে আবাহনী তাদের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়েছিল ৩-০ গোলে। গ্রুপের সেরা দুই দল খেলবে পরবর্তী রাউন্ডে। ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে রহমতগঞ্জ। তাই টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে এখন আবাহনী-মোহামেডান দুই দলকেই কঠিন লড়াই করতে হবে। এক ম্যাচ কম খেলায় কিছুটা চাপ কম থাকবে আবাহনীর। স্বাভাবিকভাবেই মর্যাদার লড়াইয়ে নিজেদের প্রথম হারের মধুর প্রতিশোধ নেয়ার লক্ষ্যও থাকবে আকাশী-নীলদের। শেষ পর্যন্ত মর্যাদার এ লড়াইয়ে কার জয় হয় সেটাই দেখার বিষয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত