ঢাকা রোববার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হারে শুরু হারেই শেষ জ্যোতিদের উইন্ডিজ সফর

হারে শুরু হারেই শেষ জ্যোতিদের উইন্ডিজ সফর

চলতি বছর ভারতে বসবে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। মাঝারি ফরম্যাটের এই সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টে সরাসরি খেলার টিকিট নিশ্চিত করতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হার দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুঁড়ে দাঁড়িয়ে আশার সঞ্চার করেছিলেন তারা। তবে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গে বেদনায় নীল হন জ্যোতিরা। ব্যাটিং ব্যর্থতাই এর মূল কারণ। টি-টোয়েন্টি সিরিজেও এই ব্যর্থতা থেকে বেরুতে পারেনি সফরকারিরা। ফলে টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল ক্যারিবিয়রা। ফলে টাইগ্রেসদের জন্য শেষ ম্যাচটি ছিল মর্যাদার। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। তবে কাঙ্ক্ষিত লড়াইটুকুও করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে আরো একটি বড় ব্যবধানের হারে হোয়াইটওয়াশই হলো বাঘিনীরা।

বাংলাদেশ সময় গতকাল শনিবার ভোরে সেইন্ট কিটসের ওয়ান্ডার পার্কে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পূর্ণ ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান করে সফরকারি দল। জবাবে ৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে ক্যারিবিয়ানরা। যদিও এই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশে ছিলেন না অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস, আগের ম্যাচের প্লেয়ার অব দা ম্যাচ কিয়ানা জোসেফ ও কিপার-ব্যাটার শিমেইন ক্যাম্পবেল। নিয়মিত টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ছাড়া সহজ রান তাড়ায় একটু ভুগতে হয় ক্যারিবিয়ানদের। তবে ম্যাচ তারা ঠিকই জিতে যায় ৯ বল বাকি রেখে। সিরিজে প্রথমবারের মতো নতুন বল হাতে নিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন জেনেলিয়া গ্লাসগো। পরে ব্যাট হাতে ২৫ রানের ইনিংস খেলে প্লেয়ার অব দা ম্যাচ ২১ বছর বযসী এই অলরাউন্ডার। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটায় ছিল আশার ঝিলিক। ম্যাচের প্রথম তিন ওভারে বাউন্ডারি আসে চারটি। এর তিনটিই আসে সোবহানা মোস্তারির জায়গায় সুযোগ পাওয়া মুর্শিদা খাতুনের ব্যাট থেকে। আগে বিদায় নেন মুর্শিদাই। ১২ বলে ১৩ করে আউট হন তিনি চতুর্থ ওভারে। পরের ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন দিলারা আক্তার। কিন্তু মুর্শিদার মতো তাকেও থামান গ্লাসগো। দুর্দান্ত ইয়র্কারের জবাব পাননি দিলারা (১৬ বলে ২১)। এর পর এক প্রান্তে পড়ে থাকেন নিগার। আরেক প্রান্তে ব্যাটারদের নিয়মিত আসা-যাওয়া চলতে থাকে। ফর্মে থাকা শারমিন আক্তার এবার ফেরেন ১০ বলে ৬ রান করে। দ্রুত রান তোলার আশায় যাকে দলে নেয়া হয়, সেই তাজ নেহার ১০ রান করেন ১০ বলে।

পরের দিকে লতা মণ্ডল, স্বর্ণা আক্তার, ফাহিমা খাতুনরাও বলার মতো কিছু করতে পারেননি। নিগার টিকে ছিলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। ৪০ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি ছিল না তার ব্যাটে। অবশেষে ইনিংসের শেষ তিন বলে দুটি চার মেরে রান আউট হন তিনি শেষ বলে। বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৩৩ রান। ক্যারিবিয়ানদের রান তাড়ার শুরুটা মসৃণ ছিল না। হেইলি ম্যাথিউস ও কিয়ানা জোসেফের জায়গায় ওপেন করে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জেনাবা জোসেফ ও নেরিসা ক্রাফটন। দ্বিতীয় ওভারে ক্রাফটনকে বোল্ড করেন অফ স্পিনার সুলতানা খাতুন। ১৬ বলে ১০ রান করা জোসেফ স্টাম্পড হন ফাহিমা খাতুনের বলে। সিরিজজুড়ে ঝড়ো ব্যাটিং উপহার দেয়া ড্রেন্ড্রা ডটিনকে এ দিন দ্রুতই (১২ বলে ১০) থামান লেগ স্পিনার রাবেয়া খান। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিনে নামা গ্লাসগো কিছুটা এগিয়ে নেন দলকে। তবে তাকেও ২৫ রানে বিদায় করেন সুলতানা। পরের ওভারেই যখন ফাহিমা ফিরিয়ে দেন ম্যান্ডি মাংরুকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৫ উইকটে ৬১। তবে লক্ষ্য এত ছোট ছিল যে, ক্যারিবিয়ানদের খুব বেশি বিপাকে পড়তে হয়নি। শাবিকা গাজনাবি ও জাইদা জেমস বাকি পথটুকুতে দলকে পার করান নির্বিঘ্নে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার আগে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার লক্ষও পূরণ হয়নি। সব মিলিয়ে ক্যারিবিয়ানে নিগারদের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর ভুলে যাওয়ার মতোই হলো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত