পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে গত ৩১ মার্চ। এবারের ঈদে লম্বা ছুটি পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবিরা।
পোশাক কারখানাসহ অনেক স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও পেয়েছেন বড় ছুটি। তাই পরিবার-স্বজনের সঙ্গেই ঈদ উদযাপন করেছেন তারা। তবে দেশে থেকেও বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদের দিনটা উপভোগ করতে পারেননি জাতীয় নারী দলের ক্রিকেটারা। কারণ, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে ছিলেন তারা। আগামী ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। জ্যোতি বুঝতে পারছেন তারা ব্যর্থ হলে নারী ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় লাগবে বড় ধাক্কা। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে পাকিস্তানে শুরু হবে ৬ দলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। যেখান থেকে সেরা দুই দল উঠবে বিশ্বকাপে। এই ছয় দলের মধ্যে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ থাকায় চিন্তাটা বেশি বাংলাদেশের। ১০ এপ্রিল লাহোরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। তার আগে আজ দেশ ছাড়বেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। গতকাল বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘প্রস্তুতির জন্য আমরা ঈদের ছুটিতে বাসায় যেতে পারিনি, এখানে অনুশীলন করতে হয়েছে। আমরা সবাই জানি দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই টুর্নামেন্ট। কারণ একটা দল যখন আইসিসির আসর খেলে তাদের ভিন্নভাবে দেখে। আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য অনেক বড় একটা ব্যাপার। গতবার আমরা যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছি এরপর কিন্তু আমাদের ম্যাচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সম্মানের দিক থেকে, অর্থনৈতিক দিক থেকে খেলোয়াড়রা অনেক বেনিফিশিয়াল হয়েছি। নারী ক্রিকেটের জন্য আমাদের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ‘সেটাকে সামনে রেখে যা যা করনীয় ছিলো করেছি। যদিও রোজা ছিল, অনেক কঠিন ছিলো। আন্ডার লাইটেও আমরা অনুশীলন করেছি যেহেতু দুইটা ম্যাচ দিবারাত্রির আছে। প্রত্যেকটা পয়েন্ট অনেক বেশি ভাইটাল। আজকের দিনেও আমরা অনুশীলন করেছি কারণ পর পর দুই দিন আমাদের ভ্রমণের মধ্যে থাকা লাগবে। ভালো একটা প্রস্তুতি বলব। সেখানে গিয়েও অনুশীলন ম্যাচ খেলব। মূল আসরের আগে দল পুরোপুরি প্রস্তুত হবে।’ জ্যোতি বলেন, ‘গত বছরও বাছাই পেরিয়ে আমাদের বিশ্বকাপ খেলতে হয়েছে। হয়ত সরাসরি খেলার সুযোগ ছিলো সেটা আমরা নিতে পারি। এখন আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেন বাছাই পেরিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে পারি।’
ভারতে হতে যাওয়া আগামী ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে হলে সেরা দুই দলের ভেতর থাকতে হবে। জ্যোতি মনে করেন সেই সামর্থ্য আছে তার দলের, সেজন্য ব্যাটারদের কাছ থেকে প্রত্যাশা বেশি তার, ‘আমরা যদি দল হিসেবে খেলতে পারি, বড় রান করতে পারি তাহলে ভালো কিছু সম্ভব। আমরা জানি পাকিস্তানের উইকেট কেমন হয়। ব্যাটাররা যদি রান করতে পারে তাহলে আমরা জানি বোলাররা সব সময় ব্যাকআপ দেয়। গত কয়েকটা সিরিজ আমরা যখন বাইরে খেলেছি, তারা অনেক ভালো করেছে। ভালো উইকেটে যত ভালো বোলিং করা যায় আরকি। এ সব উইকেটে অত টার্ন পাবেন না, আর আমাদের (মাঠ) তো স্পিন নির্ভর থাকে। দেশের উইকেটে খেলার সময় ভালো জায়গায় বল করলে উইকেট চলে আসে। কিন্তু দেশের বাইরে উইকেট নেয়ার জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। বোলারদের সঙ্গে এভাবে কথা হয়েছে যেন উইকেটের পেছনে না ছুটে ইকনোমিক্যাল বল করতে পারে।’
বাংলাদেশের প্রথম তিন ম্যাচ থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। শেষ দুই ম্যাচে আসল লড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে। শুরুতেই তাই মোমেন্টাম তৈরির চিন্তায় বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘প্রথম দিকে আমরা যদি একটা মোমেন্টাম ক্রিয়েট করতে পারি তাহলে ভালো হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত খেলা হয়। সে তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে কম, তবে সম্প্রতি আমরা তাদের বিপক্ষে খেলে এসেছি। তাদের আগে কিন্তু আমরা থাইল্যান্ড-স্কটল্যান্ডের সঙ্গে খেলব।’