ঢাকা রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অধিনায়ক আফঈদার অন্যরকম ঈদ

অধিনায়ক আফঈদার অন্যরকম ঈদ

একটা সময় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের অংশগ্রহণকে বাঁকা চোখে দেখা হত। নারী ক্রীড়াবিদের পরিবারকে একঘরে করে রাখা হত। তবে এখন দিন বদলেছে। দিন বদলের সেই প্রমাণই দিলেন ফুটবলার আফঈদা খন্দকার। ফুটবল খেলার কারণে সবাই তাকে আদর করতেন। এখন তিনি জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক। তাই এবারের ঈদটাও অন্যরকম কেটেছে আফঈদার। আগেরগুলো থেকে এবার আলাদা হওয়ার কারণ অধিনায়কত্ব। জাতীয় নারী ফুটবল দলের নেতৃত্ব হাতে পাওয়ার পর এই প্রথম ঈদ পালন করলেন সাতক্ষীরার এ যুবতি। তাইতো একটু ভীন্ন অনুভূতি নিয়েই উদযাপন করছেন নারী ফুটবল দলের রক্ষণভাগের বড় কান্ডারী আফঈদা।

অধিনায়কত্ব আগেও করেছেন বিকেএসপির সাবেক এই শিক্ষার্থী। তবে সেটা ছিল বয়সভিত্তিক দলের। গত এই ফেব্রুয়ারি-মার্চে আরব আমিরাতে খেলে আসা দুটি প্রীতি ম্যাচে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেছিলেন আফঈদা। জাতীয় নারী ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার মনে করেন, আফঈদা লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব করার যোগ্যতা রাখেন। সব গুণাগুণ আছে তার মধ্যে। ঈদের প্রথম দিন কেমন ছিল আফঈদার? জানা যাক তার কাছ থেকেই। সাতক্ষীরার নিজ বাসা থেকে আফঈদা ঈদের প্রথম দিনের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে- ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে মায়ের কাজে কিছু সহযোগিতা করেছি। তারপর গোসল করে নতুন জামা পরি। বাবা এবং চাচারা ঈদের নামাজ পরে আসলে তাদের সঙ্গে সালাম বিনিময় করি। তাদেরকে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে বড় মা (বাবার দাদি) বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে মুরুব্বীদের সালাম দিয়েছি। সবাই মিলে ছবি তুলেছি। খাওয়া-দাওয়া করে তারপর আবার বাসায় ফিরে আসি। খুব কাছেই বড় মায়ের বাসা। বাসায় আসার পর মেহমানদের খাওয়ালাম। বসে কথা বললাম। নিউজ চ্যানেল থেকে সাংবাদিক এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’ এগুলো সব ঈদেই হয়। এবার অধিনায়ক। সে হিসেবে আলাদা কোনো উদযাপন ছিল? আফঈদার উত্তর, ‘আসলে আমি ফুটবল খেলতাম বলে সবাই আদর করতেন। এবার তো অধিনায়ক। তাই আদর একটু বেশি বেশি পাচ্ছি। সবাই অন্যরকম খুশি।’ ঈদের সালামিও বেশি পেয়েছেন অধিনায়ক।

আফঈদা বলেন, ‘এবার সবার থেকে সালামি পেয়েছি। অনেক ভালোই জমেছে। তবে আরো পেতাম। এখন তো অনেকের বয়স হয়েছে। বড়রা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আসতে পারেন না, দেখা হয় না। তাই সালামিও পাওয়া হয় না।’ এবার যত গিফট পেয়েছেন আফঈদা সেগুলোর মধ্যে মায়ের দেয়া পোশাকটা নাকি বেশি পছন্দ হয়েছে। মায়ের হাতের রান্নাও প্রিয় আফঈদার। বিশেষ করে গরুর মাংস। দুপুরের খাওয়ার পর বিকালে সবাইকে নিয়ে ঘুরে গিয়েছিলেন আফঈদা। ‘বিকালে ঘুরতে গিয়েছিলাম। রাতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম ডিসি স্যারের বাসায়’- বলেন আফঈদা। ঈদের আনন্দের মধ্যেও আফঈদার মাথায় খেলা। ৬ এপ্রিল থেকে আবার শুরু হবে তাদের ক্যাম্প। জানালেন, ওই দিন সকালেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। সামনে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ আছে। আছে এশিয়ান কাপ বাছাইও। দুই দলেরই যেগুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি। আফঈদা বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী। তার ফুটবলার হওয়ার গল্পটাও অন্যরকম। বাবার কাছে ফুটবল শিখতেন ছোট সময়ে। বড় বোনকে বিকেএসপিতে ট্রায়াল দিতে নিয়ে এসেছিলেন তার বাবা খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স। বড় বোনকে সঙ্গ দিতে সাভারের বিকেএসপিতে গিয়েছিলেন আফঈদা। এসেই যখন গেছেন, বোনের সঙ্গে ট্রায়ালও দিয়েছিলেন। যখন রেজাল্ট পেলেন, আফঈদা দেখলেন তিনি ভর্তির জন্য বিবেচিত হয়েছেন, বড় বোনের চান্স হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত