ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ম্যাচ হেরে প্রতিপক্ষ কোচের ‘নাক চেপে’ ধরলেন মরিনহো

ম্যাচ হেরে প্রতিপক্ষ কোচের ‘নাক চেপে’ ধরলেন মরিনহো

আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে হোসে মরিনহো! তুরস্কের সুপার লিগের উত্তপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুর্কি কাপেও গড়ালো, যেখানে ফেনারবাহচের কোচ মরিনহো ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষ গালাতাসারায়ের কোচ ওকান বুরুকের নাক চেপে ধরেন। উত্তপ্ত ম্যাচের শেষে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় হইচই পড়ে গেছে ফুটবল মহলে। ফেনারবাহচের ২-১ গোলে পরাজয়ের পর ম্যাচ শেষে ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মরিনহো হঠাৎ করেই ওকান বুরুকের নাক চেপে ধরেন। এতে গালাতাসারাই কোচ ব্যথায় মাঠে পড়ে যান এবং হাতে মুখ চেপে ধরে কাতরান। মুহূর্তের মধ্যেই দুই দলের কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গালাতাসারাইয়ের সহ-সভাপতি মেতিন ওজতুর্ক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মরিনহো প্রথমে মৌখিকভাবে এবং পরে শারীরিকভাবে বুরুককে আক্রমণ করেন। বিশ্ব ফুটবলে এমন কাণ্ড আর কোথায় হয়? ফেনারবাহচের কর্তৃপক্ষের উচিৎ মরিনহোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।’ তবে ম্যাচণ্ডপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বুরুক ঘটনাটি হালকাভাবে নিলেও মরিনহোর আচরণকে ‘শোভন নয়’ বলে উল্লেখ করেন, ‘সে আমার নাক টিপে ধরেছিল। এটি খুব একটা সুন্দর বা মার্জিত কাজ হয়নি। আমরা চাই কোচরা ম্যাচ শেষে আরও পরিপক্ব আচরণ করবেন।’ তুর্কি কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে গালাতাসারাইয়ের জয়ের নায়ক ছিলেন নাইজেরিয়ান তারকা ভিক্টর ওসিমহেন। ম্যাচের ১০ মিনিটেই দলের হয়ে প্রথম গোল করেন তিনি। এরপর ২৭ মিনিটে ফিলিপ কস্টিচের হ্যান্ডবলের কারণে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পেনাল্টির নির্দেশ দিলে ওসিমহেন সেখান থেকে দ্বিতীয় গোল করেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সেবাস্তিয়ান সিজমানস্কি ফেনারবাহচের হয়ে একটি গোল শোধ করেন, যদিও প্রথমে অফসাইডের জন্য বাতিল হলেও ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলে ২-১ ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে দুই দলের বেঞ্চে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। গালাতাসারাইয়ের বদলি খেলোয়াড় বারিস আলপার ইলমাজ ও কেরেম দেমিরবাই লাল কার্ড দেখেন। ফেনারবাহচের বেঞ্চ থেকেও মের্ত হাকান ইয়ানদাসকে বহিষ্কার করা হয়। তবে সবচেয়ে বড় চমক আসে ম্যাচ শেষে, যখন মরিনহো ও বুরুকের মধ্যে উত্তেজনাকর মুহূর্ত তৈরি হয় এবং মরিনহো সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। গালাতাসারাই পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক খোঁচামূলক পোস্ট দিয়ে লেখে, ‘আক্রমণ নয়, মেনে নিতে শিখুন,’ যেখানে বুরুক ও মরিনহোর একটি হাস্যোজ্জ্বল ছবি সংযুক্ত করা হয়। তবে এটিই মরিনহোর প্রথম বিতর্কিত কাণ্ড নয়। ২০১১ সালে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ থাকার সময় তিনি বার্সেলোনার সহকারী কোচ টিটো ভিলানোভার চোখে আঙুল দিয়ে আলোচিত হন, যার জন্য দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেলেও পরে সেটি বাতিল করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে তিনি আবারও গালাতাসারাইয়ের বিরুদ্ধে বিতর্কে জড়ান, যখন তিনি তাদের বেঞ্চকে ‘বানরের মতো লাফাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন। গালাতাসারাই তখন তাকে বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগে অভিযুক্ত করে, যদিও ফেনারবাহচে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। গালাতাসারাই এবার তুর্কি কাপের সেমিফাইনালে উঠেছে, যেখানে তাদের মুখোমুখি হতে হবে কোন্যাসপোরের বিপক্ষে। অন্যদিকে, আরেক সেমিফাইনালে বোদ্রুমস্পোরকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ট্রাবজোনস্পোর জায়গা করে নিয়েছে শেষ চারে। মরিনহোর বিতর্কিত কান্ডের রেশ কাটতে সময় লাগবে, তবে ফুটবলের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে মাঠে ও মাঠের বাইরে। গালাতাসারাই এখন লিগ ও কাপের ডাবল জয়ের স্বপ্ন দেখছে, আর মরিনহোর ফেনারবাহচে শিরোপার দৌড়ে কতটা এগিয়ে থাকতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়!

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত