আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দলের নেতৃত্ব দিয়ে সফল হয়েছেন এমন পেসারের সংখ্যা উল্লেযোগ্য। তাদের মধ্য থেকে বিশ্বের সেরা কিছু পেসার অধিনায়কের নাম তুলে আনলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। সে তালিকায় অনেকে পেস বোলিং অলরাউন্ডারও ছিলেন। কিন্তু তারা নিজেদের দেশের হয়ে সেরা অধিনায়ক হয়েছেন।
মাশরাফি বিন মর্তুজার পর দেশে আর কোনো পেস বোলার অধিনায়ক হননি। ইনজুরির ভয় থাকে বলে পেসারদের নেতৃত্ব দিতে একটু ভেবে দেখে বিসিবি। এই চিন্তাকে ভুল বলেছেন সুজন। পেসার বলে অধিনায়ক হতে পারবে না এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান তার। বাংলাদেশ দলের নতুন অধিনায়কের তালিকায় এগিয়ে আছেন লিটন দাস। টি-টোয়েন্টির পাকাপাকি অধিনায়কও হতে চলেছেন তিনি। তবে ওয়ানডে বা টেস্ট থেকে যদি নাজমুল হোসেন শান্ত নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চান তবে সে হবেন পরবর্তী অধিনায়ক?
এই আলোচনায় লিটন, মেহেদি হাসান মিরাজের পাশাপাশি তাসকিন আহমেদের নাম উঠে আসে। কিন্তু তাসকিন পেসার বলে তাকে নিয়ে চিন্তা কম বিসিবির। এই ধারণা ভুল উল্লেখ করে সাবেক অধিনায়ক সুজন বলেছেন, ‘পেসার অধিনায়ক হতে পারবে না এটা ভুল। দেখেন ওয়াসিম আকরাম, ইয়ান বোথাম, ইমরান খানরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা বোলিং অলরাউন্ডার কিন্তু সফল হয়েছিলেন। তাসকিনও সফল হতে পারে। দেখতে হবে নেতৃত্বের গুণ আছে কি না।
এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত।’ তাসকিন নিজে কি তৈরি? বা লিটন তারা শান্তর জায়গা নিতে কতটা তৈরি আছেন। সুজন মনে করছেন সবাই তৈরি আছেন, ‘ওরা সবাই অধিনায়ক হওয়ার জায়গায় আছে। এত বছর ধরে ক্রিকেট খেলে। সেই ব্যাপারগুলো বুঝেছে। এখন বোর্ডকে দেখতে হবে কাকে কোথায় নেতৃত্ব দিবে বা দিবে কি না। এখানে আমার বলার কিছু নেই।’ অধিনায়ক শান্তর মেয়াদ ছিল চলতি বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। টি-টোয়েন্টিতে দলের সবশেষ সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিটন দাস। এর আগে টেস্ট ও ওয়ানডেতেও অধিনায়ক ছিলেন। তেমনি মিরাজও জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শুধু তাসকিনের সেই অভিজ্ঞতা নেই। তবে বিপিএলে দুবার অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের প্রধান কোচ সুজন বলেন, ‘আসলে এরা সবাই প্রস্তুত আছে, এমন না যে কেউ প্রস্তুত না। এত বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে, লিটন বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করেছেও। সুতরাং ওর মধ্যে যে সামর্থ্য আছে ওইটা তো আমরা জানি। এটা তো বোর্ড এবং নির্বাচক প্যানেলের... বোর্ডই চিন্তা করবে কাকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব দেয়া যাবে। যে কেউ অধিনায়ক হতে পারে। তবে আমি মনে করি লিটন বাজে চয়েজ হবে না।’ লিটনকে সবচেয়ে বড় ভয় অফ ফর্ম। ব্যাট হাতে ছন্দে না থাকায় সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের স্কোয়াডে সুযোগ মেলেনি তার। ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টিতেও সেরা ছন্দে নেই তিনি। গত বছরের শেষের দিকে হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচে মাত্র ১৭ রান করেছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ২০২৩ সালের এপ্রিলের পর থেকে ২৪ ম্যাচে মাত্র একটি হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। যেখানে ত্রিশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন পাঁচটি।
এমন অবস্থায় লিটনের ফর্মে ফেরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন সুজন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বলিনি ওকে (লিটন) অধিনায়কত্ব দিতে হবে, আমি বলেছি এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। কাকে দলে নেবে কি নেবে না এটা তো আগে চিন্তা করতে হবে। সে যদি দলেই না থাকে তাহলে আপনি অধিনায়ক হিসেবে কীভাবে চিন্তা করবেন। সে ছিল না, আগে সে দলে ফিরুক। আমি এখনও মনে করি লিটন বাংলাদেশের টপ ব্যাটার।’ ‘খারাপ সময় থাকতেই পারে, আমি বিশ্বাস করি লিটন ফিরবে। লিটন চেষ্টা করছে, কষ্ট করছে এবং ওর বয়স খুব বেশি হয়নি। আমি মনে করি বাংলাদেশের হয়ে যখন শেষ করবে অনেক উপরে গিয়েই শেষ করবে ইনশাআল্লাহ। আমি সেটা বিশ্বাস করি। হ্যাঁ, আগে লিটনকে ফিরতে হবে তারপর বিসিবি অধিনায়কত্ব দেবে কি দেবে না... যেটা বললাম আগে লিটনের বাংলাদেশ দলে ফিরে আসাটা জরুরি।’