ঢাকা সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

তাইজুলের ঘূর্ণি, মিরাজ-হৃদয়ের ব্যাটে মোহামেডানের জয়

তাইজুলের ঘূর্ণি, মিরাজ-হৃদয়ের ব্যাটে মোহামেডানের জয়

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পর ব্যাট হাতে দারুন সময় পার করছিলেন তামিম ইকবাল। সবশেষ বিপিএলে তার নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) মোহামেডানের হাল ধরেছিলেন দেশের অন্যতম সেরা এ ক্রিকেটার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই ম্যাচেও মাঠে থাকতেন তামিম ইকবাল, নেতৃত্ব দিতেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে।

কিন্তু গত ২৪ মার্চ বিকেএসপিতে খেলতে নামার আগে হার্ট অ্যাটাক করেন তামিম। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরলেও মাঠের বাহিরে চলে গেছেন দেশ সেরা এ ওপেনার। যে কারণে মোহামেডানের নেতৃত্ব উঠে তাওহীদ হৃদয়ের কাঁধে। অধিনায়ক হয়ে হৃদয় উপহার দিলেন এক ম্যাচ জেতানো ফিফটি। গতকাল রোববার শেরে বাংলায় প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে মোহামেডানের ৫ উইকেটের জয়ের অন্যতম রূপকার হৃদয়। বল হাতে ঘূর্ণি জাদুতে মাত্র ৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন তাইজুল ইসলাম। তবে তাইজুল, হৃদয় নয়, মোহামেডানের হয়ে ম্যাচসেরা পারফরমার মেহেদী হাসান মিরাজ। এ অলরাউন্ডার ৪৮ রানে ১ উইকেট দখলের পর ব্যাট হাতে ৫৫ বলে ৬৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে মোহামেডানকে ১২০ বল আগে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। তামিমের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বের শুরুটা জয় দিয়ে করলেন তাওহিদ হৃদয়। ড্রেসিং রুমে এখন তিনি না থাকলেও তাকে অনুভব করছে দল। নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়া খেলতে নেমে প্রথম জয়টি তাকে উৎসর্গ করলেন নতুন অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়। ম্যাচ শেষে সামাজিক মাধ্যমে হৃদয় বলেন, তাদের এই জয়টি তামিমের জন্য। ‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা আজকের (রোববার) জয়টি তামিম ইকবাল ভাইকে উৎসর্গ করছি। আমরা আপনাকে মিস করেছি।’ এটি মোহামেডানের টানা তৃতীয় জয়। ৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে তারা। সমান ম্যাচে পাঁচ জয়ে পাঁচ নম্বরে প্রাইম ব্যাংক। বল হাতে ১ উইকেটের পর ব্যাটিংয়ে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন মিরাজ। এছাড়া হৃদয়ের ব্যাট থেকে ৫৫ বলে ৫৭ রান।

রান তাড়ায় মোহামেডানের শুরুটা তেমন ভালো ছিল না। চল্লিশের আগে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান তিন ব্যাটসম্যান। পাঁচ নম্বরে নেমে মাহমুদউল্লাহও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। ২২ বলে ৭ রান করে ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ছিলেন না এই ম্যাচে। পঞ্চম উইকেটে জুটি বেধে দলকে পথে ফেরান হৃদয় ও মিরাজ। দারুণ ব্যাটিংয়ে দুজন মিলে যোগ করেন ৯১ রান। ৫২ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে আর টিকতে পারেননি হৃদয়। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হন তিনি। পরে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে মিলে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মিরাজ। ৫৫ বলের ইনিংসে ৭ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ম্যাচের প্রথমভাগে শুরুটা দুর্দান্ত করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। আবু হায়দারের প্রথম বলে চার মারেন তিনি। পরের বল ওড়ান ছক্কায়। ওই ওভারে আরও দুটি বাউন্ডারিসহ আসে ১৮ রান। তবে নাঈমকে বেশি দূর যেতে দেননি ইবাদত হোসেন। জাকির হাসান, ইরফান শুক্কুরও হতাশ করেন। মাত্র ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে প্রাইম ব্যাংক। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রিশাদ হোসেনকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন শামীম। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩২ বলে ফিফটি করেন দারুণ ছন্দে থাকা ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। চলতি লিগে সাত ইনিংসে এটি তার চতুর্থ ফিফটি। অন্য প্রান্তে রিশাদ বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। তাতে দমে যাননি শামীম। পঞ্চাশ ছুঁয়ে দলের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগোতে থাকেন তিনি। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের স্লোয়ার বাউন্সারে থার্ড ম্যানে ধরা পড়ে সমাপ্তি ঘটে তার দারুণ ইনিংসের। ১০ চারের সঙ্গে ইনিংসে ছক্কা ছিল ৪টি। প্রাইম ব্যাংকের লেজ মুড়িয়ে ৫ রানে ৪ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। ইবাদতের শিকার ২৭ রানে ৩ উইকেট।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত