ক্রীড়া প্রতিবেদক
সাকিব আল হাসানের অনুপোস্থিতিতে গত বছরটি দুর্দান্ত কেটেছে মেহেদী হাসান মিরাজের। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এক হাজারের বেশি রান। কার্যকর অফ স্পিনে ৪০ উইকেট। একেবারে পরিপুর্ণ এক অলরাউন্ডারের প্রতিচ্ছ্ববি। বছর জুড়ে দারুণ পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ফুটবলার ঋতু পর্ণা চাকমা ও আর্চার সাগর ইসলামকে পেছনে ফেলে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি পেয়েছেন মিরাজ। লাল সবুজ দলের এই অরাউন্ডারকে দেশের অভিজাত পুরস্কার কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ তুলে দেয় ক্রীড়া সংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ)। ক্রীড়া লেখক ও সাংবাদিকদের প্রাচীন সংগঠন বিএসপিএ। যার আদি নাম বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন ১৯৬৪ সাল থেকে ক্রীড়াবিদদের পুরস্কৃত করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২০২৪ সালে ১৫টি ক্যাটাগরিতে ১৩ ব্যক্তি, দল ও সংস্থাকে দেয়া হয় এই স্বীকৃতি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বিজয়ীদের হাতে মর্যাদাপুর্ণ এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার নারী সাফ জয়ে অসামান্য অবদান রাখায় ঋতুপর্ণা চাকমা দর্শকের ভোটে জিতেছেন পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড। স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার ২০২৪ পুরস্কার জয়ে মিরাজ পেছনে ফেলেন ঋতুপর্ণা চাকমা এবং ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করা আর্চঅর সাগর ইসলামকে। আর পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ডে মিরাজ ও জাতীয় দলের পেস সেনসেশন নাহিদ রানাকে পেছনে ফেলে পুরস্কার জিতেছেন ঋতু।
স্পোর্টস পারসন অব দা ইয়ার মেহেদী হাসান মিরাজ ভীষণ খুশি পুরস্কার পেয়ে। তিনি বলেন, ‘বিএসপিএকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এই আয়োজনের জন্য। এই অনুষ্ঠান প্রতিটি অ্যাথলেটের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে এসে হকি, ফুটবলসহ প্রতিটি ক্ষেত্রের খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। এটা খুবই ভালো লাগে।’ পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড জয়ী ঋতুপর্ণা চাকমা ভুটান লিগে খেলতে যাওয়ার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ভুটানের খেলার কারণে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারিনি। মিস করছি। এই পুরস্কার আমাকে আগামীতে আরও ভালো করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে।’ বিএসপিএ সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিবের সভাপতিত্বে জমকালো অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘প্রথমেই বিএসপিএকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই এমন একটা আয়োজনের জন্য। এটা সবার মধ্যে স্বপ্নের ও আশার সঞ্চার করবে।’ গেস্ট অব অনার স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বিএসপিএর সঙ্গে আমরা ১২ বছর আছি। তারা যতদিন চাইবে, ততদিন আমরা বিএসপিএর সঙ্গে থাকব।’ ক্রীড়া লেখক সমিতির অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাবেক বর্তমান ক্রীড়াবিদদের মিলনমেলা বসেছিল। বর্তমানদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন সাবেক তারকা খেলোয়াড়, কোচ, সংগঠকরা। সাবেক ক্রীড়াবিদদের সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততায় অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা এনেছে।
পুরস্কার জয়ীদের তালিকা
স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার
চ্যাম্পিয়ন: মেহেদী হাসান মিরাজ (ক্রিকেট)
রানার-আপ: ঋতুপর্ণা চাকমা (ফুটবল) ও সাগর ইসলাম (আর্চারি)
পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড: ঋতুপর্ণা চাকমা (ফুটবল)
বর্ষসেরা ক্রিকেটার: মেহেদী হাসান মিরাজ
বর্ষসেরা ফুটবলার: ঋতুপর্ণা চাকমা বর্ষসেরা আর্চার: সাগর ইসলাম
বর্ষসেরা অ্যাথলেট (ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড): জহির রায়হান
উদীয়মান ক্রীড়াবিদ: নাহিদ রানা (ক্রিকেট)
বর্ষসেরা দাবাড়ু: মনন রেজা নীড়
বর্ষসেরা দলগত সাফল্য: জুনিয়র বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় হকি দল
সক্রিয় সংস্থা: যশোর শামস-উল-হুদা অ্যাকাডেমি
বর্ষসেরা কোচ: মওদুদুর রহমান শুভ (হকি)
তৃণমূলের ক্রীড়াব্যক্তিত: বীরসেন চাকমা (ফুটবল সংগঠক, রাঙামাটি)
বর্ষসেরা সংগঠক: মো. ইমরুল হাসান (সভাপতি বসুন্ধরা কিংস)
বর্ষসেরা আম্পায়ার: শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত
বিশেষ সম্মাননা: হামিদুল ইসলাম (২০১০ এসএ গেমস সোনাজয়ী ভারোত্তোলক)।