বোলিংয়ে অনেকটা সময় পর্যন্ত প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে শেষ দিকে ধরে রাখা গেল না ছন্দ। ব্যাটিং হলো ভীষণ বাজে। একজন ছাড়া বাকিরা কেউ সেভাবে দাঁড়াতেই পারল না। ভারতের কাছে বড় হারে যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ১০৩ রানে হারে বাংলাদেশের যুবারা। ২৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় গুটিয়ে যায় তারা ১৪০ রানে। এতেই ফাইনালের টিকিট পায় ভারত। ২০১৯ সালে সবশেষ আসরের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষেই ৫ রানে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছিল বাংলাদেশের।
গ্রুপ পর্বে নেপাল, কুয়েতকে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ, শ্রীলংকার সঙ্গেও খেলাটি জমে উঠছিল; কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণে ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়। এতেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। অন্য গ্রুপে পাকিস্তানের কাছে হারলেও আফগানিস্তান এবং আরব আমিরতাকে হারিয়ে রানারআপ হয়ে সেমিতে উঠে ভারত।
ভারতের দেওয়া ২৪৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থ বাংলাদেশের যুবা ব্যাটাররা। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো দুই ব্যাটার মাহফিজুল ইসলাম এবং প্রান্তিক নওরোজ নাবিল করেন যথাক্রমে ২৬ ও ১২ রান। এছাড়া টপ অর্ডারের তানজিবুল ইসলাম করেন মাত্র ৩ রান। শুরুটা ভালো করলেও ৩১ রানে ওপেনার তানজিবুল (৩) ফেরার পর ভেঙে পড়ে টাইগার ব্যাটিং স্তম্ভ। ৩১ রানে প্রথম উইকেটের পতনের পর ৪০ রানে ফেরেন মাহফিজুল (২৬)। এরপর স্কোরবোর্ডে মাত্র ৫ রান যোগ হতেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নাবিলকেও (১২) ফিরতে হয়। দলের রান ৫০ ছুঁতেই শূন্য হাতে ফেরেন আইচ মোল্যা। এতেই দলীয় রান অর্ধশতক হতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটার প্যাভিলিয়নে। তখনই শুরু হয় বাংলাদেশের হার গোনার প্রহর।
পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামা আরিফুল ইসলাম উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখেন। তবে অপর প্রান্তের ব্যাটাররা সব ছিলেন যাওয়া আসার মিছিলে। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। দলীয় ৫৯ রানে ফাহিম (৫), ৬৮ রানে মেহরব (৭), ৮৭ রানে আশিকুর (১৫) আর ১০৭ রানে নাইমুর (৬) ফিরলে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
শেষ দিকে আরিফুল লড়াই চালালেও বাকিরা আর কেউ তাকে সঙ্গ দিতে না পারায় বাংলাদেশ ৩৮.২ ওভারে ১৪০ রানে অলআউট হয়। আর ভারতের যুবারা পায় ১০৩ রানের জয়। আরিফুল ইসলাম শেষ পর্যন্ত ৭৭ বলে ৪২ রান করে ফেরেন, রাকিবুল আউট হন ১৬ রান করে।
ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন রাজবর্ধন হাঙ্গারকার, রবি কুমার, রাজ বাওয়া এবং ভিকি অস্তাওয়াল আর একটি করে উইকেট নেন নিশান্ত সিন্ধু এবং কুশাল তামবে। এর আগে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। আগে বোলিং করতে নেমে শুরু থেকেই ভারতীয়দের চাপে রাখে বাংলাদেশ। দলীয় ফিফটির আাগেই ভারতের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ। চারে নামা নিশান্ত সিন্ধু মাত্র ৩ রান করে ফিরেন। ৬২ রানে তৃতীয় উইকেট হারানো ভারত পরেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে। তবে তিনে নামা শেইখ রাশেদ একপ্রান্ত ধরে রেখেছিলেন। রাশেদের সঙ্গে ১০ নম্বরে নামা ভিকি শেষ দিকে দারুণ একটা জুটি গড়ে ভারতকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রানে থেমেছে ভারত। রাশেদ ১০৮ বল খেলে তিন চার, এক ছয়ে ৯০ রাানে অপরাজিত ছিলেন। ভিকি ১৮ বলে করেন ২৮ রান। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে অধিনায়ক রাকিবুল হাসান ১০ ওভারে ৪১ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব, নাইমুর রহমান, এসএম মেহরাব ও আরিফুল ইসলাম।