আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম অবদান ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি। এ পদ্ধতিতে পেট না কেটে কয়েকটি ছিদ্র করেই শল্যচিকিৎসা করা হয়। এ পদ্ধতি অবলম্বনে শল্যচিকিৎসা করা হলে রোগীকে খুব বেশি দিন হাসপাতালে থাকতে হয় না। ব্যথাও কম হয়, হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পরের জীবনেও তেমন বড় ধরনের প্রভাব পড়ে না, রোগী দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন। শল্যচিকিৎসা পরবর্তী সময়ে জটিলতার ঝুঁকিও কম থাকে।
তবে ল্যাপারোস্কপি শল্যচিকিৎসায়ও বাড়ি ফেরার পর রোগীকে বেশ কিছুদিন কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। নইলে ‘সামান্য’ অবহেলা থেকেও তৈরি হতে পারে জটিলতা। পেটের ছিদ্রগুলো সঠিকভাবে নিরাময় না হয়ে থাকলে হতে পারে হার্নিয়া (পেটের ভেতর থেকে অন্ত্রের কোনো অংশ বেরিয়ে আসা) বা জীবাণুর সংক্রমণের মতো সমস্যা। তাই এ চিকিৎসাপদ্ধতি অপেক্ষাকৃত সহজ হলেও থাকতে হবে যত্নশীল।
যাদের জন্য ল্যাপারোস্কপিক শল্যচিকিৎসা :
পিত্তথলিতে পাথর, অ্যাপেন্ডিসাইটিস, ডিম্বাশয়ে সিস্ট ইত্যাদি সহজেই এ পদ্ধতিতে অপসারণ করা সম্ভব। এ প্রক্রিয়ায় হার্নিয়ার চিকিৎসাও করানো সম্ভব। বন্ধ্যত্বের কারণ খুঁজে বের করার জন্যও ল্যাপারোস্কপিক প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়।
ল্যাপারোস্কপিক পদ্ধতি সম্পন্ন হওয়ার পর যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে :
ক্ষতস্থান শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখার বিকল্প নেই। কত দিন পর্যন্ত ক্ষতস্থান ভেজানো যাবে না, সে বিষয়ক নির্দেশনা মেনে চলুন। তবে মাথা ও শরীরের অন্যান্য অংশ ভেজানো ও পরিষ্কার রাখার বিষয়েও যত্নশীল থাকুন।
ভিটামিন সি ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। তাই লেবু ও অন্যান্য টক ফল খেতে হবে। তবে মনে রাখবেন, উত্তাপে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই রান্না করা বা চুলায় দেওয়া টক ফল (যেমন চাটনি) কাজে আসবে না।
১ থেকে ২ সপ্তাহ বিশ্রাম নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে। সেটিও মেনে চলুন।
ভারী কাজ এবং ওজনদার কিছু তোলা থেকে বিরত থাকুন তিন মাস পর্যন্ত।
যেসব ওষুধ সেবনের নির্দেশ দেয়া হয়, সেগুলো সেবন করুন নিয়মমাফিক।
পাতলা পায়খানা, ব্যথা, জ্বর বা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজে নিজে সেটি সমাধানের চেষ্টা না করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডায়াবেটিস থাকলে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ডা. মোহাম্মদ ইসরাত ফয়সাল
সহযোগী কনসালট্যান্ট, সার্জারি
বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল
লিমিটেড, ঢাকা