ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন কি খারাপ কিছুর লক্ষণ

ডা. মো. মতলেবুর রহমান
কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন কি খারাপ কিছুর লক্ষণ

গলা বসে যাওয়ার মানে কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যাওয়া বা স্বর ভেঙে যাওয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৌসুম বদল বা অন্য কোনো সাধারণ সমস্যার কারণে এ রকমটা হয়। ঘরোয়া চিকিৎসায়ই এ ধরনের সমস্যা সেরে যায়। অল্প কিছু ক্ষেত্রে কারণটা হয় ভিন্ন, সঙ্গে থাকে বিশেষ কিছু লক্ষণও। সে রকম ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।

কারণগুলো জানা থাক : অতিরিক্ত চিৎকারের কারণে যেমন স্বর ভেঙে যায়, তেমনি আবার মৌসুম বদলের সময়ও অনেককে এমন সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। তাপমাত্রার তারতম্যের সময় কণ্ঠনালি কিংবা টনসিলের প্রদাহের উপসর্গ হিসেবে স্বর ভেঙে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।

তবে কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে রোগী স্বর ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন :

কণ্ঠস্বরের ওপর যাদের খুব বেশি চাপ পড়ে, (যেমন গায়ক, আবৃত্তিকার, শিশুদের শিক্ষক) তাদের স্বরতন্ত্রীতে (ভোকাল কর্ড) ছোট ছোট গোটা হতে পারে (নডিউল)। এ রকম হলে স্বর অস্বাভাবিক রয়ে যায় দীর্ঘদিন।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি। ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের ক্যান্সার।

স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহারে স্বর ভেঙে যেতে পারে।

আনুষঙ্গিক উপসর্গ : মৌসুমজনিত কারণ হলে গলাব্যথা, জ্বর, কাশি ও সর্দির মতো উপসর্গ থাকে।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতিতে ওজন বৃদ্ধি, ঠান্ডা সহ্য করতে না পারা, দুর্বলতা, বিষণ্নতা, চিন্তায় ও কাজে অস্বাভাবিক ধীরতা, চুল পড়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়। ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের ক্যান্সারে ওজন হ্রাস, বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

করণীয় : কণ্ঠকে বিশ্রাম দিন। মৌসুমের কারণে স্বর ভেঙে থাকলে প্রয়োজনে প্যারাসিটামল ও অ্যান্টিহিস্টামিনজাতীয় ওষুধ সেবন করতে পারেন। গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গার্গল বা কুলকুচি করুন। তবে গলাব্যথা থাকলে গার্গল না করাই ভালো। মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। উষ্ণ পানীয় খান।

স্টেরয়েড ইনহেলারের জন্য স্বর ভেঙে গেলে ইনহেলার ব্যবহার শেষে তা সেরে যায়। বাড়তি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘদিন স্বরের সমস্যায় ভুগলে কিংবা হরমোনের ঘাটতি বা ক্যান্সারের আনুষঙ্গিক উপসর্গ থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রতিরোধ : তাপমাত্রার তারতম্য এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত করুন। ঠান্ডার সময় (যেমন শেষরাতে, ভোরে) মাফলার জাতীয় অনুষঙ্গ ব্যবহার করুন।

ধূমপান বর্জন করুন।

ডা. মো. মতলেবুর রহমান

সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত