চোখে কিছু পড়লে বা আঘাত লাগলে কী করবেন?

ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

চোখের মধ্যে পাপড়ি, ধূলিকণা, কীটপতঙ্গ, ছোট ইট-পাথর, কাঠ বা ধাতুর টুকরা প্রবেশ করলে খুবই অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয়। চোখ খচখচ করতে থাকে, কখনও কখনও লাল হয়ে যায়, চুলকায়, ব্যথা করে। এটি না সরানো পর্যন্ত আপনি অন্য কোনো কিছুতে মন বসাতে পারবেন না। আবার সামান্য একটু খোঁচা বা কণা থেকেও চোখের বড় ধরনের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে করণীয় সম্পর্কে অবহিত থাকলে অনেক সময় নিরাপদ থাকা সম্ভব।

উপসর্গ :

চোখে রক্ত জমাট বাঁধা বা লাল হয়ে যাওয়া।

চোখ থেকে পানি ঝরতে থাকা।

হালকা বা তীব্র ব্যথা। কর্নিয়া সম্পৃক্ত হলে হালকা আঘাত বা ছোট কণাতেই প্রচুর ব্যথা হয়।

ফটোফোবিয়া বা আলোর দিকে তাকাতে অসুবিধা।

দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা বোধ।

করণীয় : চোখে কিছু পড়লে বা আঘাত লাগলে সঙ্গে সঙ্গে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে-

চোখে পানি দেওয়া : বেশিরভাগ ক্ষুদ্র কণাই সাধারণত পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ ধুলে বেরিয়ে যায়। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে চোখে পানির ঝাপটা দেওয়াটাই প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে কার্যকরী উপায়।

বের করে ফেলা : পোকা বা কণাজাতীয় কিছু নজরে পড়লে পরিষ্কার কাপড় বা টিস্যু দিয়ে আলতো করে বের করে আনার চেষ্টা করতে হবে।

অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ : শুধু একটু আঁচড় লেগেছে, তেমন কিছু চোখে পড়েনি, এমনটি মনে হলে যেকোনো একটি অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ডোজ মেনে ব্যবহার করা যেতে পারে।

যা করা উচিত নয় : জোরে চোখ কচলানো যাবে না। আপনি যদি জোরে চোখ কচলাতে থাকেন, তাহলে কর্নিয়ায় আঁচড় লাগতে পারে।

কিছু বিঁধে থাকলে : যদি মনে হয় কোনো কিছু বিঁধে আছে, তবে স্পর্শ না করাই ভালো। এতে কর্নিয়ায় ঘা লাগতে পারে। বড় বা ধারালো কোনো বস্তু বিদ্ধ অবস্থায় চোখ থেকে অপসারণের চেষ্টা করাটা উচিত হবে না। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

স্টেরয়েডজাতীয় ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না।

কখন চক্ষুবিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে?

দৃষ্টি ঝাপসা লাগলে।

প্রচণ্ড ব্যথা হলে।

চোখ অনেক ফুলে গেলে বা চোখ খুলতে অসুবিধা বোধ করলে।

কোনো ক্ষত নজরে এলে বা রক্তক্ষরণ হলে।

চোখ সুরক্ষিত রাখার উপায়

শিশুদের হাতে ধারালো জিনিসপত্র দেয়া যাবে না। বিপজ্জনক খেলনা থেকে তাদের দূরে রাখতে হবে।

কৃষিকাজ, বিশেষ করে ধান মাড়াইয়ের সময় চোখে গ্লাস পরে কাজ করা প্রয়োজন।

খালি চোখে ওয়েল্ডিং মেশিনে কখনোই কাজ করা যাবে না।

কারখানায় কাজ করার সময় যথাযথ প্রতিরোধক ব্যবস্থা (যেমন- হেলমেট বা সানগ্লাস ইত্যাদি) অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম

সহযোগী কনসালট্যান্ট, চক্ষু বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা