ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি

ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

একটানা ডিজিটাল স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে সেটির নীল আলো চোখের ওপর চাপ ফেলে। চোখ ডিজিটাল ডিভাইসের আলোর তীব্রতা ফিল্টার করতে পারে না। ফলে রেটিনার ক্ষতি হয়। দৃষ্টিশক্তির জন্য রেটিনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ম্যাকুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় (ম্যাকুলার ডিজেনারেশন)। এটি মূলত বয়সজনিত রোগ; কিন্তু এখন কম বয়সেই হচ্ছে। ডিজিটাল ডিভাইসের কারণে মায়োপিয়া, অর্থাৎ দূরের জিনিস স্পষ্ট দেখতে না পাওয়ার সমস্যা শিশুদের মধ্যে অনেক বেড়ে গেছে। যেসব শিশু আগে থেকেই চশমা ব্যবহার করত, তাদের অনেকেরই চশমার ‘পাওয়ার’ও বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে-

‘স্মার্টফোন’ বা ‘ল্যাপটপ’ ছাড়া আধুনিক জীবন ভাবাই যায় না। তবে এর ক্ষতিকর দিকগুলো ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না। পর্দায় তাকিয়ে থাকার সময় চোখের পলক কম পড়ে। অনেকে আবার স্মার্টফোন স্বাভাবিকের তুলনায় চোখের বেশি কাছে এনে দেখেন। টেলিভিশন ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নির্গত আলো চোখের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করে; ঘাড়ব্যথা কিংবা মাথাব্যথার কারণও হয়ে উঠতে পারে এসব ডিভাইস।

ক্ষতিকর দিক :

ডিজিটাল স্ক্রিনে একটানা তাকিয়ে থাকলে চোখ লাল হয়ে যায়, শুষ্ক হয়ে যায়; ঘুমের সমস্যা হয়; মনোযোগের অভাব হয়। শিশুর মানসিক ও শারীরিক নানান সমস্যা হয়। বর্তমানে নানান সমস্যায় ভুগছেন বয়স্ক ব্যক্তিরাও।

চোখের ক্ষতি :

একটানা ডিজিটাল স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে সেটির নীল আলো চোখের ওপর চাপ ফেলে। চোখ ডিজিটাল ডিভাইসের আলোর তীব্রতা ফিল্টার করতে পারে না। ফলে রেটিনার ক্ষতি হয়। দৃষ্টিশক্তির জন্য রেটিনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ম্যাকুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয় (ম্যাকুলার ডিজেনারেশন)। এটি মূলত বয়সজনিত রোগ; কিন্তু এখন কম বয়সেই হচ্ছে। ডিজিটাল ডিভাইসের কারণে মায়োপিয়া, অর্থাৎ দূরের জিনিস স্পষ্ট দেখতে না পাওয়ার সমস্যা শিশুদের মধ্যে অনেক বেড়ে গেছে। যেসব শিশু আগে থেকেই চশমা ব্যবহার করত, তাদের অনেকেরই চশমার ‘পাওয়ার’ও বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে।

শিশুদের ক্ষতি কেন বেশি :

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চোখ নিজে থেকেই ক্ষতিকর আলোর বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম হয়ে ওঠে। ফলে ক্ষতিকর নীল আলো সরাসরি চোখে প্রবেশ করতে পারে না। শিশুদের এ ক্ষমতা না থাকায় অল্পতেই চোখের ক্ষতি হয়। চোখে বাড়তি চাপ পড়ে, মাথাব্যথা হয়। রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

সুস্থ থাকতে :

ডিজিটাল স্ক্রিনে একটানা নয়, বরং ২০-২০-২০ নিয়মে কাজ করুন। অর্থাৎ ২০ মিনিট পরপর অন্তত ২০ ফুট দূরত্বে থাকা কোনো বস্তুর দিকে লক্ষ্য স্থির করে অন্তত ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। এ ছাড়া ২ ঘণ্টা অন্তর ১৫ মিনিটের বিরতি দিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন; দেহের বিভিন্ন পেশি নাড়াচাড়া করতে হয়, এমন কিছু হালকা ব্যায়াম করুন।

‘নাইট মোড’ বা ‘ওয়ার্ম মোড’-এ চোখ কিছুটা হলেও সুরক্ষা পায়।

শোয়া অবস্থায় ডিজিটাল স্ক্রিন দেখবেন না। এতে চোখের পেশিতে চাপ পড়ে। বেশি দিন এমনটা করলে দৃষ্টিশক্তি ঝাঁপসা হতে পারে। হতে পারে মাথাব্যথাও।

যানবাহনে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার না করাই ভালো। ঝাঁকুনির সময় এসব ডিভাইস দেখলে চোখের ক্ষতি হতে পারে। নিতান্ত প্রয়োজন হলেও চোখ থেকে দূরে রেখে ডিভাইস দেখুন।

ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম

সহযোগী কনসালট্যান্ট

চক্ষু বিভাগ, স্কয়ার

হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা