শিশুর ভাষা শেখায় মা-বাবার করণীয়

অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা

প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

দুই বছর বয়সে মোটামুটি দুই শব্দের বাক্য বলতে সক্ষম হয়। এরপর তাদের যত বেশি পরিবেশের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ হয় ততই শব্দের ভান্ডার বাড়তে থাকে। তিন বছর বয়সে শব্দের ভান্ডার আরও বাড়ে এবং মোটামুটি তিন শব্দের বাক্য বলতে পারে। শিশুর কথা বলা বা শেখার বিষয়টি সাবলীলভাবে এগিয়ে নিতে মা-বাবার কিছু করণীয় আছে।

মা-বাবা যত ব্যস্তই থাকুন না কেন, সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তারা অবশ্যই সময় বের করবেন। ভাষা শেখার বিষয়টিতে নিজেরা গুরুত্ব দেবেন, কাজের লোক বা পরিচর্যাকারীর ওপর ছেড়ে দেবেন না-

জন্মের পর শিশু তার প্রয়োজন বা কোনো সমস্যার কথা কান্নার মাধ্যমেই জানাতে পারে। দেড় থেকে ২ মাস বয়সে দুধ খাওয়ার সময় মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে, চোখে চোখ রেখে, স্বল্প হেসে সে মায়ের সঙ্গে ভাব বিনিময় করে। চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে বাচ্চারা শব্দ করে হেসে এবং ৬ মাস বয়সের পর থেকে সাবলীলভাবে আরও নানা শব্দ করে সবার সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান করে। ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে বাচ্চারা সাধারণত একক শব্দে পরিচিত মানুষ বা জিনিসের নাম ধরে ডাকতে পারে।

দুই বছর বয়সে মোটামুটি দুই শব্দের বাক্য বলতে সক্ষম হয়। এরপর তাদের যত বেশি পরিবেশের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ হয় ততই শব্দের ভান্ডার বাড়তে থাকে। ৩ বছর বয়সে শব্দের ভান্ডার আরও বাড়ে এবং মোটামুটি তিন শব্দের বাক্য বলতে পারে। শিশুর কথা বলা বা শেখার বিষয়টি সাবলীলভাবে এগিয়ে নিতে মা-বাবার কিছু করণীয় আছে।

মা-বাবা যত ব্যস্তই থাকুন না কেন, সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তারা অবশ্যই সময় বের করবেন। ভাষা শেখার বিষয়টিতে নিজেরা গুরুত্ব দেবেন, কাজের লোক বা পরিচর্যাকারীর ওপর ছেড়ে দেবেন না।

বাচ্চা বুঝুক বা না বুঝুক, তার সঙ্গে বেশির ভাগ সময় সহজ শব্দে, সহজ ভাষায় কথা বলবেন, হাসবেন, ভাবের বিনিময় করবেন।

মা শিশুর শরীর ও মুখের অভিব্যক্তি বোঝার চেষ্টা করবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। সে যখন কিছু বলে বা বোঝানোর চেষ্টা করে, তখন তাতে সাড়া দিতে হবে। কোনোভাবেই তা অবহেলা করা যাবে না বা তাকে থামিয়ে দেয়া যাবে না।

শিশুর স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করতে কথা বলার পাশাপাশি বিভিন্ন পশুপাখি বা ছবি দেখাবেন, বেড়াতে নিয়ে যাবেন, খেলনা নিয়ে বাচ্চার সঙ্গে খেলবেন।

শিশু যদি কোনো কিছু আঙুল দিয়ে দেখায়, তাহলে তার অর্থ বুঝিয়ে বলুন।

শিশুর বলা কথা বিস্তৃত করে বলুন। যেমন বাচ্চা যদি বলে লাল গাড়ি, তাহলে বলুন, এটা একটা বড় লাল গাড়ি।

বাচ্চার সঙ্গে মজার মজার গল্প করবেন। চোখে চোখে কথা বলবেন, ছবি আঁকতে আঁকতে তার বিবরণ দিন। তাকে কাছে নিয়ে বই পড়ুন; গল্প, ছড়া পড়ে শোনান।

না বোধক কথা না বলে ইতিবাচক কথা বলা উচিত। যেমন আকাশ গোলাপি না- এ কথা না বলে বলা উচিত আকাশ নীল।

অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ