ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রি-ডায়াবেটিসে কী খাবেন

লিনা আখতার
প্রি-ডায়াবেটিসে কী খাবেন

প্রি-ডায়াবেটিসের জন্য জীবনযাত্রার পরিবর্তনই একমাত্র চিকিৎসা। অর্থাৎ এর জন্য সাধারণত ওষুধ লাগে না। এ ক্ষেত্রে প্রথমত সতর্ক থাকতে হবে এবং সেই সঙ্গে নিয়ম মানতে হবে। শর্করাবহুল খাবার যেমন- সাদা ভাত, সাদা রুটি, মিষ্টি ফল হিসাব করে খেতে হবে। আঁশবহুল খাবার যেমন ডাল, শাকসবজি, টক ফল ইত্যাদি বেশি খেতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ঘি, মাখন, ডালডা কম খেতে হবে-

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি; কিন্তু ডায়াবেটিসের নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম থাকলে তাকে প্রি-ডায়াবেটিস বা বর্ডার লাইন ডায়াবেটিস বলে। ৮৪ শতাংশের বেশি মানুষ জানেন না যে তারা প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। শুধু ১১ শতাংশ মানুষ প্রি-ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতন। প্রি-ডায়াবেটিস পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি :

কারও শরীরের বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) ২৫-এর বেশি হলে, নারীদের কোমরের মাপ ৩৫ ইঞ্চি থেকে ও পুরুষদের ৪০ ইঞ্চি থেকে বেশি হলে প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। বংশে বিশেষ করে মা-বাবা, ভাইবোনের ডায়াবেটিস থাকলে এবং ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করলে এই ঝুঁকি বাড়ে।

অতিমাত্রায় ফাস্ট ফুড খাওয়া বা কোমলপানীয় পানে এই ঝুঁকি বাড়ে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি, হৃদরোগ, থাইরয়েডের সমস্যা ও পিসিওএস, ধূমপানের অভ্যাস থাকলে প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।

প্রতিরোধে পুষ্টি :

প্রি-ডায়াবেটিসের জন্য জীবনযাত্রার পরিবর্তনই একমাত্র চিকিৎসা। অর্থাৎ এর জন্য সাধারণত ওষুধ লাগে না। এ ক্ষেত্রে প্রথমত সতর্ক থাকতে হবে এবং সেইসঙ্গে নিয়ম মানতে হবে। শর্করাবহুল খাবার যেমন সাদা ভাত, সাদা রুটি, মিষ্টি ফল হিসাব করে খেতে হবে।

আঁশবহুল খাবার যেমন ডাল, শাকসবজি, টক ফল ইত্যাদি বেশি খেতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ঘি, মাখন, ডালডা কম খেতে হবে। এসবের পরিবর্তে সয়াবিন তেল, ক্যানোলা তেল, সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। বেশি করে মাছ খাওয়া দরকার। মুরগির চামড়াবিহীন মাংস খাওয়া ও লাল মাংস কম খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।

ডিমসিদ্ধ ও দুধ পরিমাণ মতো খাওয়া জরুরি। একই সঙ্গে চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার বাদ দেওয়া এবং ভিটামিন সি-জাতীয় ফল খাওয়া উচিত। সবধরনের শাক, কম ক্যালরি ও কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার যেমন লাউ, পেঁপে, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। রান্নায় খুব বেশি লবণ বা পাতে লবণ খাওয়া উচিত নয়।

সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটুন। একসঙ্গে ৩০ মিনিট না পারলে ১০ মিনিট করে দিনে ৩ বার হাঁটুন। ওজন ঠিক রাখা প্রি-ডায়াবেটিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধূমপান ও তামাক সেবন বন্ধ করতে হবে।

প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুষম খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। ঘুমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

লিনা আখতার

পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ

কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড

রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত